আদালতের রায়ের আগেই রাবির ক্রপ সায়েন্স বিভাগ শিক্ষক নিয়োগে তোড়জোড় - দৈনিকশিক্ষা

আদালতের রায়ের আগেই রাবির ক্রপ সায়েন্স বিভাগ শিক্ষক নিয়োগে তোড়জোড়

রাবি প্রতিনিধি |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে করা মামলার চূড়ান্ত রায় প্রকাশের আগেই শিক্ষক নিয়োগ দিতে তোড়জোড় শুরু করেছে প্রশাসন। আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনের দপ্তরে নিয়োগ বোর্ড বসার কথা। অথচ আগামী ২৭ জানুয়ারি এ বিষয়ে আদালত চূড়ান্ত রায়ের দিন ধার্য করেছেন। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই এই নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে কমিটির অধিকাংশ সদস্যের অভিযোগ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের তিনটি শূন্য পদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মিজানউদ্দিনের প্রশাসন। সেখানে প্ল্যানিং কমিটি প্রভাষক পদে প্লান্ট প্যাথলজি, জেনেটিক্স অ্যান্ড প্লান্ট ব্রিডিং ও এগ্রোনমি/এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন

বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু ওই বিজ্ঞপ্তিতে পরে আর শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। তবে সেই বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারীদের আবেদন বহাল রেখে গত বছরের ৩০ জুলাই নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে প্ল্যানিং কমিটিকে না জানিয়েই প্রভাষক পদে আবেদনের জন্য উল্লিখিত বিষয়গুলোর সঙ্গে 'এগ্রিকালচারাল কেমিস্ট্রি' বিষয় যুক্ত করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নতুন বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক আলী আসগর। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২১ আগস্ট বিভাগটিতে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলার বিবাদী রাবি উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, কৃষি অনুষদের ডিন, ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগ ও প্ল্যানিং কমিটির সভাপতিকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দেন বিচারক শেখ হাসান আরিফ ও মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।

এদিকে আদালতকে ফাঁকি দিয়ে 'অর্থের বিনিময়ে' নিয়োগ দিতে প্রশাসন তৎপর বলে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী অধ্যাপক আলী আসগর। তিনি বলেন, বর্তমান প্রশাসন টাকার কাছে নত। তারা আদালতকে অমান্য করে নিয়োগ দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। নিয়োগ দিতে পারলে তাদের আর্থিক উপার্জন হবে সেজন্য এমনটি করছে।

তবে মামলার চূড়ান্ত রায়ের আগে শিক্ষক নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ মন্তব্য করে মামলার পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ূয়া বলেন, '১৫ জানুয়ারি মামলার শুনানি শেষে আদালত ২৭ জানুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করেছেন। আদালত সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষের আইনজীবীকে বলেছেন, আদালতের রায়ের আগে প্রশাসন যেন কোনো কিছু প্রসিড না করে। আর প্রসিড করলে আদালত তার আইনানুযায়ী পানিশমেন্টের (শাস্তি) ব্যবস্থা করবেন। এখন প্রশাসন নিয়োগ দিলে সেটি আদালতবিরোধী হবে। আমরা রায়ের দিন বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করব।'

প্ল্যানিং কমিটির সভা নিয়ে সদস্যদের নানা অভিযোগ :গত ৩০ ডিসেম্বর বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির চার সদস্য সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন- তাদের ছাড়াই প্ল্যানিং কমিটির সভা করেছেন ওই বিভাগের সভাপতি ড. সাইফুল ইসলাম। সদস্যরা উপস্থিত না থাকলেও তাদের উপস্থিতি দেখিয়ে সভা সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সভার তারিখ গোপন ও স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন তারা।

জানতে চাইলে প্ল্যানিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক আলী আসগর বলেন, প্ল্যানিং কমিটির সদস্যদের কোনো আমন্ত্রণপত্র না দিয়ে ২২ ডিসেম্বর বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির ৫৭তম সভা ও ২৬ ডিসেম্বর একই বিষয়ে ৫৮তম সভার আয়োজন করেন বিভাগের সভাপতি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে খুশি করতে সভাপতি সদস্যদের ফাঁকি দিয়ে এ প্ল্যানিং কমিটির সভা করেছেন।

তবে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামের দাবি, মিটিংয়ের আগেই সদস্যদের আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা উপস্থিত হননি। সদস্যরা সভায় উপস্থিত না থাকার পরও তাদের নাম থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, কম্পিউটার অপারেটর ভুল করেছিল।

আদালতের রায়ের আগে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড গঠনের বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এমএ বারীকে মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা কেউ রিসিভ করেননি।

নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064949989318848