নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক আন্দোলনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার থেকে কলেজের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এদিকে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে ক্লাসের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় শোক দিবস অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হওয়া এবং নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত না হওয়ায় কলেজ পরিচলনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২২জন শিক্ষকের আগস্ট মাসের বেতন থেকে একদিনের বেতন কাটের অধ্যক্ষ। এর প্রতিবাদে শনিবার থেকে অধ্যক্ষের নামে নানা অনিয়মের অভিযোগে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শুরু করেন শিক্ষকরা।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে কলেজ গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকরা একটি কক্ষে বসে সভা করছেন। কিছু শিক্ষার্থী বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরাফেরা করছে। কোনো ক্লাস-পরীক্ষা চলছে না।
এসময় কলেজের সম্মান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রুবেল মন্ডল, ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কিরণ, এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলন চলতে পারেই। তবে আমাদের ক্লাস বন্ধ করে কেন। তাই, আমাদের ক্লাস নিয়মিত করণের দাবি জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ তুঘলক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, পরিচলনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক শোক দিবসে অনুপস্থিত ও নিয়মিত ক্লাসে হাজির না হওয়ায় ২২ জন শিক্ষকের একদিনের বেতন কেটে রাখা হয়। বেতন কাটায় তারা অযৌক্তিক ভাবে আন্দোলনে নেমেছেন, আমার নামে নানা অপবাদ দিয়ে অভিযোগ তুলছেন। আমি শিক্ষকদেরকে আন্দোলন না করে লিখিতভাবে দাবি জানাতে বলেছি। সেটা না করে উল্টো আন্দোলনের নামে কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত করছেন। তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক তুহিন এবং ইংরেজির শিক্ষক রুহুল আমিন। এ বিষয়ে সভাপতিসহ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের জানানো হয়েছে। তারাই পরবর্তী করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন।
সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক তুহিন এবং ইংরেজির শিক্ষক রুহুল আমিন অধ্যক্ষের অভিযোগ অস্বীকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অধ্যক্ষের দীর্ঘদিনের নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করায় ২২ শিক্ষকের বেতন কেটে মুখ বন্ধের চেষ্টা করছেন। তিনি অবৈধভাবে কলেজের সম্পদ লুট করে ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। আবার বেতন কাটার আগে মৌখিক ও লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের জানানো হয়নি। বেতন কাটার আগে শিক্ষকদের জানানোর দাবি করেছি। তারা অোরও বলেন, আমাদের দাবির সাথে কলেজের ৬২ জন শিক্ষক একমত। আমরা ইউএনও বরাবর অভিযোগ লিখেছি কিন্তু পরিচালনা কমিটির সদস্য বিষয়টি দেখবেন বলায় অভিযোগ জমা দেয়া হয় নাই।
শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানান, আন্দোলনে নামা শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের ভাড়া করা। তারা মোটেও ক্লাসে আসে না। হাজিরা খাতায় তার প্রমাণ রয়েছে। তবে আমরা পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামীদিন থেকে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবো।