দ্বিতীয় শিফটের পারিশ্রমিক কমানোর প্রতিবাদে ও বেতন জটিলতা নিরসনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকরা। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতি, পলিটেকনিক শিক্ষক পরিষদ ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও অধিদপ্তরাধীন কর্মচারি সমিতির ব্যানারে দেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ও ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষকরা।
এদিকে ক্লাস-পরীক্ষা ও আবাসিক হোস্টেল খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা ইনস্টিটিউটটির প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, দীর্ঘদিন থেকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় শিফট নিয়ে শিক্ষকরা আন্দোলন করে আসছে। এর ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা। এ নিয়ে নিয়মিত লেখাপড়া থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবি তারা নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষা দিতে চান। এছাড়া দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ছাত্রদের আবাসিক হোস্টেলগুলো খুলে দেয়ার দাবিও জানান তারা। হোস্টেলগুলো খুলে দিলে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা অল্প খরচে থাকা সুযোগ পাবে।
অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয় শিফটের সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। অতিরিক্ত শিফটের ন্যায্য সুবিধা না পাওয়ায় তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার অংশ হিসেবে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে। আর নিয়মিত ক্লাসের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, কারিগরি শিক্ষায় বিদ্যমান দ্বিতীয় শিফটের জন্য বেতনের ৫০ শতাংশ দেয়া হলেও বর্তমানে তা কমিয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। গত ১৯ মাস ধরে ভাতা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন না হওয়ায় তারা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ কারণে নতুন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শিক্ষকরা আরও জানান, এ দাবিতে কয়েক দফায় আন্দোলন করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ কারণে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন সেমিস্টারের নতুন ক্লাস থেকে ২য় শিফটের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত আছেন তারা।
জানা গেছে, পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতি, পলিটেকনিক শিক্ষক পরিষদ ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও অধিদপ্তরাধীন কর্মচারি সমিতির ব্যানারে দেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ও ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা। ২য় শিফটের পারিশ্রমিক হ্রাসের প্রতিবাদে, ২য় শিফট থেকে অব্যাহতি, এ শিফটের পারিশ্রমিক সংক্রান্ত জটিলতা দ্রুত নিরসন এবং নিয়োগবিধি মোতাবেক কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও বোর্ডের ঊর্ধ্বতন পদগুলোতে কারিগরি শিক্ষায় কর্মরত কর্মকর্তা দ্বারা পূরণের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। চার দাবি আদায়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা।
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দ্বিতীয় শিফটের বেতন ভাতার দাবিতে শিক্ষকরা আন্দোলন করছে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা ক্লাস, পরীক্ষা ও হোস্টেল খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। শিক্ষকরা প্রায় ১৮ থেকে ২০ মাসের বেতন ভাতা পাচ্ছে না। শিক্ষকদের দাবি, পাওনা টাকাগুলো ফিরে পাওয়ার।