আন্দোলনের মুখে আহছানউল্লাহর ভিসির পদত্যাগ - দৈনিকশিক্ষা

আন্দোলনের মুখে আহছানউল্লাহর ভিসির পদত্যাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

তথ্য গোপন করে সমাবর্তন ডাকার খবর প্রকাশের পর থেকে আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসি অধ্যাপক কাজী শরিফুল আলমের পদত্যাগসহ ১২ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। তারা ৪ দিন ধরে উত্তাল ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে পদত্যাগ করেন ভারপ্রাপ্ত ভিসি। মেয়াদ শেষ হওয়ায় কোষাধ্যক্ষ পদেও তিনি আর নেই। তাই বিধান অনুযায়ী তিনি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ নন। তবে, অধিকাংশ শিক্ষার্থী মনে করে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান কাজী রফিকুল আলম পদত্যাগী ভিসির আপন বড় ভাই সেহেতু গোপনে তাকেই আবার একই পদে নিয়োগ দিতে পারেন কিছুদিন পর।   

তবে, ভিসিপুত্রেরও পদত্যাগ দাবি করেছে সংক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে অংশ না নিতে শিক্ষার্থীদের চাপ প্রয়োগ ও হুমকি দেয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভিসিপুত্র কাজী আহমেদ ফারহানের বিরুদ্ধে। ফারহান বিবিএর শিক্ষক। তার দেয়া হুমকি আন্দোলনে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। দাবি আদায়ে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধসহ সব ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।  

আরও পড়ুন: 

আহছানউল্লাহর শিক্ষক-শিক্ষিকার পর্ন ভিডিওতে তোলপাড়

দৈনিক শিক্ষার রিপোর্টের পর আহছানউল্লাহর কনভোকেশনে যাচ্ছেন না শিক্ষামন্ত্রী

আহছানউল্লাহর ভারপ্রাপ্ত ভিসি স্বাক্ষরিত অকার্যকর সনদের কনভোকেশন রোববার

এবার ভিসিপুত্রের পদত্যাগ দাবি, অচল আহছানউল্লাহয় ভিসিবিরোধী স্লোগান

অশ্লীল ভিডিও : পদত্যাগ করলেন আহছানউল্লাহর সেই দুই শিক্ষক

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অবৈধভাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্বেচ্ছাচারীভাবে পরিচালনা করছেন ড. কাজী শরিফুল আলম। দৈনিক শিক্ষার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সমাবর্তন বাতিল করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। কবে সমাবর্তন হবে তা অনিশ্চিত। ২৭ অক্টোবর ১১তম সমাবর্তন হওয়ার কথা ছিলো। গত ২৮ অক্টোবর অবৈধ ভিসির পদত্যাগ ও অশ্লীল ভিডিও তৈরিতে জড়িত শিক্ষকদের বহিষ্কারসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. কাজী শরিফুল আলমের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন সাবেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী। অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত ভিসির বিরুদ্ধে শিক্ষকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা মেরে দেয়ার অভিযোগ করেন তারা। এছাড়া আহছানউল্লাহ্ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বলেও উল্লেখ করেন তারা।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিভিন্ন সময় নামকরা ও চৌকস শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয় হতে রিজাইন নিতে বাধ্য করেছেন কাজী শরিফুল আলম। সেমিস্টার ফি বাড়ানোর পরও প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হয়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি ও তার চাটুকার কিছু কর্মকর্তার জন্য আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর সুনাম হারাতে বসেছে।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, দৈনিক শিক্ষার প্রতিবেদনে জানতে পারি চ্যান্সেলর কর্তৃক নিযুক্ত ভিসি-প্রোভিসি ও কোষাধ্যক্ষ নেই বেসরকারি আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর ভারপ্রাপ্ত বা অনিয়মিত ভিসি কর্তৃক স্বাক্ষরিত অকার্যকর মূল সার্টিফিকেট নেয়ার জন্য প্রায় আড়াইহাজার গ্র্যাজুয়েটকে ডাকা হয়েছিল ১১তম কনভোকেশনে। কিন্তু দৈনিক শিক্ষাডটকমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সমাবর্তন বাতিল করেন। তখন বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। 

এদিকে দৈনিক শিক্ষাডটকমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর পদত্যাগ করেছেন অশ্লীল ভিডিওর সাথে জড়িত আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালেয়ের দুই শিক্ষক। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন তারা। অশ্লীল ভিডিও এবং ছবি নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে, দৈনিক শিক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশ ও ফেসবুক লাইভে প্রচারের পর অভিযুক্ত দুই শিক্ষক পদত্যাগ করেন। পদত্যাগ করা একজন শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অশ্লীল ভিডিওটির বিষয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৫ অক্টোবর দৈনিক শিক্ষাডটকমে ‘আহছানউল্লাহর ভারপ্রাপ্ত ভিসি স্বাক্ষরিত অকার্যকর সনদের কনভোকেশন রোববার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ক্ষোভে ফেটে পরেন গ্র্যাজুয়েটরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, চ্যান্সেলর কর্তৃক নিযুক্ত ভিসি-প্রোভিসি ও কোষাধ্যক্ষ নেই বেসরকারি আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর ভারপ্রাপ্ত বা অনিয়মিত ভিসি কর্তৃক স্বাক্ষরিত অকার্যকর মূল সার্টিফিকেট নেয়ার জন্য প্রায় আড়াইহাজার গ্র্যাজুয়েটকে ডাকা হয়েছিল কনভোকেশনে। ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা এড়াতে বৈধ ভিসি নিযুক্তির পর এসব গ্র্যাজুয়েটদের ফের সনদ নিতে হবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। চ্যান্সেলর কর্তৃক নিযুক্ত না হলে ভিসি-প্রোভিসি ও কোষাধ্যক্ষরা অবৈধ বা বিধি মোতাবেক নিযুক্ত নন। আর  ভারপ্রাপ্ত ভিসি থাকা অবস্থায় কনভোকেশন করতে পারেন না এবং মূল সনদে স্বাক্ষর করতে পারেন না।

প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041000843048096