বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার আসামিদের উপস্থিতিতে অভিযোগপত্র গ্রহণ ও মামলা আমলে নিতে আগামী ২১ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে। ওইদিন মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হবে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস কুমার পাল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত ১২ জানুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন। ওইদিনই প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বদলি আদালতে মামলাটি স্থানান্তর করা হয়। পরে বুধবার অভিযোগপত্র গ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। পরে ১৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানা অনুযায়ী গ্রেফতার করতে না পারায় গত ৩ ডিসেম্বর তাদের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে সময় ৫ জানুয়ারির মধ্যে ক্রোক পরোয়ানা তামিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এরপর গত ৫ জানুয়ারি পলাতক আসামিদের হাজির হওয়ার ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের আগের দিন মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম নামে পলাতক এক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।
এখন পর্যন্ত মামলার আরও তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, ও মোস্তবা রাফিদ। এর মধ্যে মোস্তবা রাফিদের নাম এজাহারে ছিল না।
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও পলাতক বাকি আসামিরা হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার শুরু হবে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
মামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এজাহার বহির্ভূত ৬ জন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৮ জন এরই মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তদন্ত চলাকালে মামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেফতারদের মধ্যে ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু ছাড়া বাকি সবাই এজাহারভুক্ত আসামি।
এর মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা হলেন- ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মনিরুজ্জামান মনির ও এএসএম নাজমুস সাদাত।
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু কর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন।