আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে এসব হচ্ছেটা কী? - দৈনিকশিক্ষা

আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে এসব হচ্ছেটা কী?

মাছুম বিল্লাহ |

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ একটি দেশের ভবিষ্যত নেতৃত্ব তৈরি করে। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্যই দক্ষ ও প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ সৃষ্টির কারখানা হচেছ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসূহ অথচ আমাদের দেশের এসব প্রতিষ্ঠানে হচেছটা কী? এক সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোচিং ছিল খুবই কম। কিন্তু প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা চালুর পর শিশু শিক্ষায় ব্যাপকহারে বেড়েছে কোচিং।

বছর দু’এক আগের গণসাক্ষরতা অভিযানের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ‘শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য দেশের ৮৬.০৩ শতাংশ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কোচিং করতে হয়েছে। আর ৭৮ শতাংশ বিদ্যালয়ে কোচিং ছিল বাধ্যতামূলক। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয় যে, পাসের হার বাড়াতে খাতায় নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া, প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ নানা অনিয়ম হচ্ছে। পরীক্ষার হলে দেখাদেখি করে লেখা এবং উত্তরপত্র মেলানোর জন্য শেষের ৪০-৬০ মিনিট অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। গ্রামীণ ও শহর এলাকার ১৫০ টি উপজেলার ৫৭৮টি বিদ্যালয় নিয়ে  এ গবেষণা করা হয়।

সিলেবাসের অনাবশ্যক স্ফীতি আর পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধিতে শিক্ষার্থীদের চাপের সঙ্গে অভিভাবকদের ব্যয়ও বেড়েছে। এই পরীক্ষার জন্য প্রাইভেট পড়ার নির্ভরশীলতা বাড়ছে, পাঠ্যবইকে দূরে ঠেলে দিচেছ গাইড বই। শিশুরা শেখার আনন্দ ও সৃজনশীল হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচেছ। প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই মাসিক অর্থ দিয়ে বাধ্যতামূলক কোচিং করতে হয়। আর অনেক প্রতিষ্ঠানে না করলেও টাকা দিতে হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়া ও গাইড কেনা বাধ্যতামূলক। সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করার পর গাইডের ওপর  শিক্ষকদেরও  নির্ভরশীলতা বেড়ে গেছে বহুগুণ। কারন তারা নিজেরাই সৃজনশীল বোঝেন না ফলে প্রশ্ন করার জন্য, প্রাইভেট পড়ানোর জন্য তারা সরাসরি গাইডের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। শিক্ষক নেতাদের মতে ৮০ শতাংশ শিক্ষকই সৃজনশীল প্রশ্ন বোঝেন না। তবে শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছে শিক্ষা অধিদপ্তর। সৃজনশীল পদ্ধতি জানার জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েছে বহু কর্মকর্তা। এভাবে শিক্ষক প্রশিক্ষণের নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ( দৈনিক ইত্তেফাক ২১ নভেম্বর ২০১৬)

দেশে বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ ও জাল সনদে চাকরি দেয়াসহ ২২ ধরণের অনিয়ম চিহ্নিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অধিকাংশ অভিযোগই অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে। ঢাকার খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অজপাড়াগাঁয়ের প্রতিষ্ঠানও আছে এ তালিকায়। অর্থাৎ শিক্ষার দুর্নীতিতে কেউ পিছিয়ে নেই। এ ধরনের ৭৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ ষষ্ঠ নিবন্ধন পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার পর দেখা যায় মাত্র ১৯ শতাংশ পরিক্ষার্থী পাস করেছে। ফল প্রকাশ করার পর দিনই ২০০ পরিক্ষার্থী ফল দেখে হতভম্ব হয়ে যায়।তারা অনেকেই ২৯তম বিসিএস পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছে, অনেকেরই অনার্সে প্রথম ও মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণি রয়েছে অথচ তারা এনটিআরসি পরীক্ষা অকৃতকার্য হয়েছে। অবাক বিষয় হলো অনেকের মোবাইলে রোল ঠিক থাকলেও নাম অন্যজনের। এ ব্যাপারে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। খাতা পুনপরীক্ষার কথা উঠলে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়। পত্রিকা মারফত দেখলাম কর্মচারিদের কিছু টাকা দিলে খাতায় কিছু না লিখলেও পাস করা যায়। অথচ মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগের জন্য এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল। আর টাকা দিয়ে এখানে থেকে সার্টিফিকেট নিচেছ অনেকেই। ৮০০০ থেকে ১৫০০০ টাকার মধ্যে নাকি এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট কিনতে পাওয়া যায়। বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন যেখানে বার বারই ফাঁস হচেছ সেখানে চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়া ও টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট কেনা যেন স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত যেসব দুর্নীতি হচেছ তার আরও দু’ একটি  এখানে তুলে ধরা হলো। দৈনিক সংবাদ ২৬ এপ্রিল ২০১৭ দেখা যায় যে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত শিক্ষাখাতে বরাদ্দকৃত অর্থের ৩৪শতাংশ ব্যয় হয়েছে । ৮৩০ কোটি ৪৯ লাখ ৬২হাজার টাকার মধ্যে ৩৭০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে। গত বছর অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মার্চ পর্যন্ত এই হার ছিল ৪৫.৫৭ শতাংশ। এছাড়াও এবার বেশ কয়েকটি প্রকল্পের বাস্তবায়নের হার একেবারেই কম। এজন্য এবার প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ফেরত যেতে পারে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়। প্রতিবছর জাতীয় বাজেট বরাদ্দ অনুয়ায়ী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে অর্থ বরাদ্দ দেয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। অর্থবছরেরর মাঝামাঝি সময়ে সকল মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নখাতের বরাদ্দ সংশোধন অর্থাৎ কোন মন্ত্রণালয় ইচেছ করলে বরাদ্দ হ্রাস বা অতিরিক্ত বরাদ্দের  প্রস্তাব করতে পারে, যাকে আরএডিপি বলা হয়। আরএডিপিতে কোন মন্ত্রণালয় পুরো বরাদ্দ ব্যয় করতে না পারলে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফেরত যায়। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রকল্পের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও মাউশির ( মাধ্যমিক ও উচচশিক্ষা অধিদপ্তর)  সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পুরো বছরই ইচেছমতো প্রশিক্ষণ গ্রহনের নামে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের নামে দেশেও প্রমোদ ভ্রমণ করেছেন। এতে করে তারা প্রকল্পের ফাইল চালাচালি ও নথি আদান-প্রদান, উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহন ও এ সংক্রান্ত কাজে যথাযথ মনোনিবেশ করতে পারেননি। গত ১৯ ফেব্রুয়ারী অষ্ট্রেলিয়া ভ্রমণে যান শিক্ষা প্রশাসনের ১৫ জন কর্মকর্তা, আরও ১৫জন দুইমাসের জন্য গিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডে।এর আগে গতবছর অক্টোবর মাসে মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রকল্প ’ টিচিং কোয়ালিটি ইম্প্রুভমেন্ট-২’ এর অর্থায়নে নিউজিল্যান্ডে ’ সাপোর্ট টু টুইনিং পার্টনারশিপ মিকানিজমস’ র্শীর্ষক কর্মশালায় ১৫ দিন ভ্রমণ করেন ১৬জন কর্মকর্তা। এরপর মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য গত ২০ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত কানাডা ভ্রমণ করেন শিক্ষা প্রশাসনের পাঁচ গুরুত্বপূর্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।এসব ভ্রমণে প্রকৃত শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করলে অনেকটাই লাভবান হওয়া যেত। কারণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা একই মন্ত্রণালয়ে সব সময় থাকেন না। দেখা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুদিন পরে অন্য মন্ত্রণালয়ে বদলি হয়ে চলে যাবেন ফলে তাদের দেখা বিষয়গুলো শিক্ষাক্ষেত্রে কোন কাজেই লাগবে না, তা হবে শুধুই প্রমোদ ভ্রমণ। হচেছও তাই। কোটি কোটি টাকা খরচ হচেছ এই খাতে।

আর একটি জাতীয় দৈনিকের খবর বেড়িয়েছে এ রকম- ’ বিমানের ক্যাডেট পাইলট নিয়োগ, বাছাই পর্যায়েই ঘুষ বাণিজ্য’ (১৭ ফেব্র্রূয়ারী ২০১৭, দৈনিক যুগান্তর)।  লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রার্থী যাচাই-বাছাই পর্যায়েই ’ ঘুষ বাণিজ্য’ হয়েছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিমানের ফ্লাইট অপারেশন শাখা ( ডিএফও) থেকে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ৮৬ জনের নাম  অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। পরে এ তালিকায় স্থান পাওয়া ২১ জনের নাম বাদ দেয় বিমানের মানবসম্পদ শাখা। অভিযোগ আছে, বিমানের মানবসম্পদ শাখার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এই ২১ জনের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ দাবি করেছিল। টাকা না দেয়ায় তাদের পরীক্ষা দেয়ার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। তবে, এক্ষেত্রে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে , এই ২১ জনের এসএসসি সার্টিফিকেটের মান আমেরিকার গভর্নমেন্ট অব ডিস্ট্রিক্ট কলাম্বিয়ার’ এ’ লেভেলধারী  জেনারেল এডুকেশন অব ডিপ্লোমা ( জিইডি)। এটা বিমানের অপারেশন ম্যানুয়েল কভার করেনা। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে , জিইডি পাস করা সবাই ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী। বাংলাদেশের এইচ এসসি সমমানের ( জিইডি) সার্টিফিকেটধারী কোর্স। এদের সবাই জিইডি পাস করে পরবর্তীকালে নর্থ সাউথ, আইইউবি সহ দেশের উন্নতমানের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করেছে। কেউ কেউ এখন মাস্টার্স পড়ছে। আবার কেউ কেউ জিইডি শেষ করে বিভিন্ন ফ্লাইং একাডেমি থেকে ফ্লাইং শেষ করেছে।

গত ১৪ মার্চ (২০১৭) রাজধানীর সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদ মিলনায়তেনে অনুষ্ঠিত ’ মানসম্মত শিক্ষা, বিরাজমান সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘খাতা না দেখেই চূড়ান্ত ফল দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে তাদের শিক্ষার মান কেমন হতে পারে, তা সহজেই অনুমান করা যায়। তিনি এ ব্যাপারে একটি উদাহরণ তুলে ধরেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের আত্মীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক। তিনি একবার অনার্সের খাতা নিলেও অসুস্থতার কারণে দেখতে পারেননি। তাই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দ্রুত জানান যেন খাতা নিয়ে যাওয়া হয় কারন তার দ্বারা খাতা মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। কিন্তু মাসখানেক পার হলেও কেউ খাতার বিষয়ে কোন খোঁজ নেয়নি। এর কিছুদিন পরেই ফলাফল দিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তখনও অদেখা অবস্থায় কয়েকশ খাতা ওই শিক্ষকের বাসায় পড়ে ছিল। এ ধরণের অভিজ্ঞতার কথা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের মুখেও শোনা গেছে। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার চাহিদা পূরণে সক্ষম ছিলনা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ফলে প্রচুর শিক্ষার্থী নিজ খরচে ভারত বা অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশুনা করতে যেতো। বিদেশে যাবার প্রবণতা ঠেকানোর জন্য আমাদের দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মের পর প্রথম দশ-বার বছর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বেশ ভালো ছিল। মাঝখানে  শিক্ষার মান নেমে গিয়েছিল। এর মূল কারণ দেশের বিভিন্ন স্থানে শাখা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। শাখা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর  মাধ্যমে দেশে শুরু হয় শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য। সেই বাণিজ্য ঠেকাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ২০১০ সালে সরকারকে নতুন একটি ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ প্রণয়ন করতে হয়। ২০১০ আইনটি প্রয়োগের ফলে দেশের যত্রতত্র গড়ে ওঠা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শাখা ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে গেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের নজরদারি অনেক কঠোর হয়েছে কিন্তু মান এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি।

শিক্ষাখাতে এসডিজি অর্জনে বড় প্রতিবন্ধকতা অর্থায়নের অপ্রতুলতা। শিক্ষায় বৈশ্বিক পর্যায়ে সহায়তা দিন দিন কমছে। এ ক্ষেত্রে ধনী দেশগুলো ২০০৯ সালে যে পরিমাণ সহায়তা দিয়েছিল এর পরের বছর থেকে দিন দিন তা কমছে। স্বল্প আয়ের দেশগুলোর শিশুদের শিক্ষার জন্য ধনী দেশগুলোর জনগণ বছরে মাথাপিছু ৫ ডলার সহায়তা দেয়, যা দু:খজনক। ৮ই মার্চ ২০১৭ বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন ব্যানবেইস ভবন মিলানায়তনে  বৈশ্বিক শিক্ষা পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন-২০১৬ প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয় সম্পদশালী কয়েকটি দেশ যদি তাদের মোট জাতীয় আয়ের ০.৭ শতাংশ সহায়তা দেয় এবং সে সহায়তার ১০ শতাংশ শিক্ষার জন্য বরাদ্দ করে, তাহলে এসডিজি-৪ বাস্তবায়নে ঘাটতি পূরণ হতে পারে। আর শিক্ষার উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মেটাতে হলে মোট জাতীয় আয়ের ( জিডিপি) ৪ থেকে ৬ শতাংশ এবং সরকারি ব্যয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করতে হবে।

ড. মনজুর আহমেদ বলেন, ’ প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সমস্ত কাজ একটি মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকা উচিত। পৃথিবীর সব দেশেই একই ব্যবস্থা। অথচ আমাদের দেশে তা নেই। ফলে আমাদের লক্ষ্য অর্জনে নানা সমস্যায় পড়তে হয়।আমাদেরকে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যন্ত  সর্বজনীন করতে হবে। ঝরে পড়া কমাতে হবে। যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।’ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এসডিজি অর্জনে ইতিমধ্যে আমাদের কর্মকৌশল তৈরির কাজ চলছে। এসডিজির যে লক্ষ্যগুলো বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এখনো পঞ্চম শ্রেণি শেষ করেও ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ইংরেজি তো দূরের কথা বাংলাটাই  ঠিকমতো পড়তে পারেনা। শিক্ষার মানের দিকে আমাদের জোর দিতে হবে। শিক্ষকদের আরো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।’

মাছুম বিল্লাহ: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক, ব্যাক শিক্ষা কর্মসূচিতে কর্মরত সাবেক ক্যাডেট কলেজ শিক্ষক।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.026599884033203