প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত পুনর্বাসনের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, একটি মানুষও না খেয়ে থাকবে না। একটি মানুষও গৃহহীন হয়ে থাকবে না। যারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে ঘর নির্মাণে সহযোগিতা, অর্থ ও ত্রাণ সহায়তা দিতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের এসব নির্দেশনা দেন বলে জানা গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী প্রতিমুহূর্তে তথ্য নিচ্ছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনস্থ সরকারি বাসভবনে অনলাইন সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, ‘আম্ফানে ক্ষতগ্রস্তদের সহায়তা, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও বেড়িবাঁধ মেরামতসহ সার্বিক পুনর্বাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।’
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গতকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর নির্মাণ, অর্থ ও ত্রাণ সহায়তা প্রদান শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও বিদ্যুত্ লাইন মেরামতের কাজ চলছে। কৃষি ও গবাদি পশু, সড়ক, বাঁধ ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজও করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় আমফান মোকাবিলা পর্যবেক্ষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার অনেকটা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে রাতভর উপকূলীয় এলাকার পরিস্থিতির খবরাখবর নিয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ‘ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব ও পরিচালকরা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঈদের ছুটির সময়ও সক্রিয় থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।’
তিনি জানান, ‘লকডাউন পরিস্থিতিতে সরকারি ছুটির দিনেও সবসময় খোলা ছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। অনলাইন এবং অফলাইনে নিয়মিত ফাইল দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিচ্ছেন। এছাড়া মন্ত্রিসভা, একনেক, বাজেট, ৬৪ জেলার সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিয়মিত সভা, সর্বশেষ বুধবার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল সকাল থেকেই সচিব ও পরিচালকরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ শুরু করেছেন। বিশেষ করে গত দুই দিন ধরেই উপকূলীয় এলাকার লোকজনদের নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া, তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা, চিকিৎসা কার্যক্রম চালু রাখার জন্য ব্যস্ত সময় পার করেছেন। গতকাল সকাল থেকেই ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন।