আরও ২০০ স্কুল কলেজ অনুমোদন পাচ্ছে - দৈনিকশিক্ষা

আরও ২০০ স্কুল কলেজ অনুমোদন পাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শত শত প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীশূন্য বছরের পর বছর তবু আরও দুইশ' বেসরকারি স্কুল ও কলেজকে পাঠদানের অনুমতি দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রী, এমপি ও আমলাদের চাপে অনেকটা বাধ্য হয়েই এসব স্কুল-কলেজ অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। তবে, এসব অনুমোদনে ঘুষ লেন-দেনের বিষয় থাকলেও তা চেপে গিয়ে রাজনীতিবিদদের চাপের কথাই সাংবাদিকদের জানাচ্ছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।  দুএকদিনের মধ্যে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্নিষ্টদের অনুমোদনের বিষয়টি খোলাসা করার কথা রয়েছে। অতি গোপনে অনুমোদনের কাগজ হাতে ধরিয়ে দেয়া হবে সংশ্লিষ্টদের, বরাবরের মতো ওয়েবসাইটে দেয়া হবে না।  মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একাধিক সূত্র  দৈনিকশিক্ষাকে এ খবর নিশ্চিত করেছে। 

জানা যায়, 'শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মানচিত্র' অনুযায়ী রাজশাহী বিভাগে নতুন কোনো কলেজের প্রয়োজন নেই। কয়েকজন প্রভাবশালী মন্ত্রী ও এমপির চাপ এবং টাকার লেনদেনের কারণে তিনটি কলেজ অনুমোদনের তালিকায় রয়েছে। টাকার বিনিময়ে এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন দেওয়া কলেজের বেশিরভাগই মানসম্পন্ন শিক্ষা দিতে পারছে না। পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল ও ভর্তির তথ্যে সে চিত্র বেরিয়ে আসছে। গত কয়েক বছরে প্রতিষ্ঠিত নতুন এসব কলেজে শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় শিক্ষার্থীরাও ভর্তি হতে চাইছে না।

জানা যায়,  গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি, একাডেমিক স্বীকৃতি, অতিরিক্ত শ্রেণি, নতুন বিষয়-বিভাগ খোলা-সংক্রান্ত কমিটির সভা হয়। কমিটির আহ্বায়ক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) জাবেদ আহমেদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় কয়েকশ' আবেদনের মধ্য থেকে ৪৯৬টি স্কুল ও কলেজে পাঠদানের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এরই মধ্যে বিগত দিনে একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রায় ৮ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি না করায় আন্দোলনে নামেন শিক্ষকরা। হাজার হাজার শিক্ষক জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।  শেষ পর্যন্ত সরকারের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করে শ্রেণিকক্ষে ফেরেন শিক্ষকরা। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মৌখিকভাবে নতুন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুমোদন না করার জন্য মৌখিকভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হলে থেমে থাকেননি মন্ত্রী-এমপি, প্রভাবশালী নেতা ও আমলারা। তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চাপ দিতে থাকেন। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রী ও এমপিরা দাবি করেছেন- বিভিন্ন সময়ে তারা নির্বাচনী এলাকার স্কুল-কলেজ অনুমোদন করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি না দিলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এলাকার ভোটারদের কাছে তারা ভোট চাইতে যেতে পারবেন না। কর্মকর্তারা আরও জানান, শেষ পর্যন্ত ২০০ স্কুল ও কলেজের পাঠদানের স্বীকৃতি দেওয়ার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। মন্ত্রণালয়ের ওই কমিটি ৪৯৬টি স্কুল ও কলেজ পাঠদানের অনুমতি দেওয়ার সুপারিশ করলেও শেষ পর্যন্ত তা থেকে অনেক কাটছাঁট করা হয। বৃহস্পতিবার দিনভর একজন যুগ্ম সচিবের রুম আটকিয়ে কয়েকজন কর্মকর্তা মিলে একটি তালিকা করেন। তালিকাটি ওই দিন বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে জমা দেওয়া হলে তিনি অনুমতি দেন। জানা যায়, বিগত দিনে স্কুল-কলেজের অনুমতির চিঠি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হলেও এবার তা দেওয়া হবে না। যাদের স্কুল-কলেজ বাদ পড়েছে তাদের চাপ সামলাতে এ কৌশল নেও
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, পঞ্চগড়-২ আসনের এমপি নুরুল ইসলাম সুজন হাজিরহাট নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদানের অনুমতির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইনকে অনুরোধ করেন। অন্যদিকে স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা সচিবকে ফোন করে বলেছেন, একটি রাস্তা শেখ রাসেল নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও হাজিরহাট নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে দূরত্ব গড়ে তুলেছে। নতুন স্কুলের অনুমোদন দিলে উভয় প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী সংকটে পড়বে। মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে নতুন স্কুলের অনুমোদন দেয়নি।  

২০১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথমবারের মতো একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তি  শুরু হলে শিক্ষার্থী শূন্য কলেজের প্রকৃত সংখ্যা  জানা যায়। থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে। বোর্ডগুলোর কাছে অধীনস্ত কলেজগুলো তথ্য-উপাত্ত না থাকার বিষয়টি খোলাসা হয়। তৎকালীন শিক্ষাসচিব মো: নজরুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে বিষোদগার শুরু করে বোর্ডগুলোর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, স্কুল ও কলেজ পরিদর্শক পদে থাকা বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষকরা।    

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037610530853271