ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া নিয়ন্ত্রিত অবৈধ ইয়ংমেনস ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযানের পর ঢাকার আরও তিনটি ক্লাবে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। এসব ক্লাব থেকে জুয়ার ২৪ লাখ টাকা উদ্ধার এবং ৩৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই ক্লাবগুলো হল- ইয়ংমেনস ক্লাবের পাশের ঢাকা ওয়ান্ডারাস ক্লাব, গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র এবং বনানীর আহমদ টাওয়ারের গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ।
র্যাব জানায়, রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় পীর ইয়ামিন মার্কেটের পাশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের অবৈধ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান চলানো হয়। এসময় সেখান থেকে জুয়ার সরঞ্জাম, তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৯ জনকে।
অপরদিকে বনানী আহম্মেদ টাওয়ারস্থ গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ নামক ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র্যাব-১। ক্যাসিনোটি তালাবন্ধ পাওয়া যায়। পরে এটি সিলগালা করে দেয়া হয়।
এদিকে ফকিরাপুলের ওয়ান্ডারাস ক্লাব থেকে নগদ ২০ লাখ ২৭ হাজার টাকা, জুয়ার সরঞ্জাম, ২০ হাজার ৫০০ টাকার জাল নোট, বিপুল পরিমাণ মদ ও মাদক জব্দ করা হয়েছে।
র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জানান, ওয়ান্ডারাস ক্লাবটি ওই এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমিনুল হক সাইদ ও মোল্লা মো. কাওসার পরিচালনা করেন।
এর আগে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, মদ, বিয়ার ও নগদ ২০ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। পাশাপাশি তরুণীসহ ১৪২ জনকে আটকে সাজা দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। মতিঝিল-ফকিরাপুল ক্লাবপাড়ায় ক্যাসিনো থেকে শুরু করে কমপক্ষে সাতটি সরকারি ভবনে ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ ও সরকারি জমি দখলের মতো নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকায় কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন এই যুবলীগ নেতা। এর মধ্যে ১৬টি ক্লাব নিজের লোকজন দিয়ে আর ফকিরাপুল ইয়াং ম্যানস নামের ক্লাবটি সরাসরি তিনি পরিচালনা করেন। প্রতিটি ক্লাব থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে এক লাখ টাকা নেন তিনি। এসব ক্লাবে সকাল ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত ক্যাসিনোতে চলে জুয়া। সেখানে মাদকের ছড়াছড়ি। পাওয়া যায় ইয়াবাও।
খিলগাঁও-শাহজাহানপুর হয়ে চলাচলকারী লেগুনা ও গণপরিবহন থেকে নিয়মিত টাকা দিতে হয় খালেদকে। প্রতি কোরবানির ঈদে শাহজাহানপুর কলোনি মাঠ, মেরাদিয়া ও কমলাপুর পশুর হাট নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। খিলগাঁও রেল ক্রসিংয়ে প্রতিদিন রাতে মাছের একটি হাট বসান এই নেতা। সেখান থেকে মাসে কমপক্ষে এক কোটি টাকা আদায় করেন তিনি।