কুষ্টিয়ায় এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা দীর্ঘকাল আর্থিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। সরকার ঘোষিত জাতীয় বেতন স্কেলে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা অন্তর্ভুক্ত হলেও পূর্ণ উত্সবভাতা, ন্যায্য বাড়িভাড়া ও চিকিত্সাভাতাসহ আনুষঙ্গিক প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়াসহ দেশের এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় কর্মরত আছেন ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী। ২০১৫ সালে সরকারঘোষিত সর্বশেষ জাতীয় বেতন স্কেলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা মূল বেতন স্কেলের অনুকূলে পূর্ণ উত্সবভাতা, ন্যায্য বাড়িভাড়া ও চিকিত্সাভাতাসহ অন্যান্য আর্থিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল স্কেলের সমপরিমাণ বেতনসহ থোক বরাদ্দ হিসাবে পান নামমাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিত্সাভাতা ও দুই ঈদে পান স্কেলের ২৫ শতাংশ অর্থাত্ সিকিভাগ উত্সবভাতা। ফলে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষক সংগঠনগুলো এসব বৈষম্য দূরীকরণসহ বেতন স্কেলের সমপরিমাণ পূর্ণ উত্সবভাতা, সঙ্গতিপূর্ণ বাড়ি ভাড়া ও চিকিত্সাভাতা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছে।
বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, কুষ্টিয়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও হালসা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জহুরুল হক জানান, বেসরকারি শিক্ষক ও শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে শিক্ষা জাতীয়করণ করা হলে সরকারের খুব বেশি আর্থিক ক্ষতি হবে না। আর্থিক বৈষম্যসহ শিক্ষার মান উন্নয়নে সব অসঙ্গতি দূরীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি ।
কুষ্টিয়ার প্রাচীনতম ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ নওয়াব আলী জানান, জাতীয় বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা আর্থিক নানা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এসব বৈষম্য দূরীকরণে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ নীতি-নির্ধারক মহলের আশু হস্তক্ষেপ দাবি করেন ।
কুষ্টিয়া সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আজমল গনি আরজু বলেন, শিক্ষকরা হচ্ছেন জাতি গড়ার কারিগর। আর্থিক বৈষম্য থাকলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন ব্যাহত হতে পারে। সরকারের নীতি-নির্ধারক মহলের হস্তক্ষেপে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের পূর্ণ উত্সবভাতাসহ যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব।
কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জায়েদুর রহমান জানান, এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের পূর্ণ উত্সবভাতাসহ দাবিকৃত অন্য বিষয়গুলো একটি জাতীয় সমস্যা। সরকারের নীতি-নির্ধারক মহলের হস্তক্ষেপ ছাড়া শিক্ষকদের দাবিকৃত বিষয়গুলো নিরসন সম্ভব নয়। তবে এ বৈষম্য দূর হলে বেসরকারি শিক্ষক সমাজ দারুণভাবে উপকৃত হবেন বলে তিনি জানান।