পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আগের দুই মেয়াদে ইতিবাচক অবস্থানে থাকা মন্ত্রণালয়ের একটি ছিল শিক্ষা। কিছু সঙ্কট সামাল দিতে সফলতার পরিচয় দিতে না পারলেও শিক্ষা বিস্তার ও শিক্ষায় নারী-পুরুষ সমতা অর্জনের মতো বিশাল কাজের মাধ্যমে সরকার অর্জন করে আন্তর্জাতিক সুনাম। প্রথম শ্রেণী থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শতভাগ স্বচ্ছ ভর্তি, টানা ১০ বছর ধরে স্কুলের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যের বই দেয়াসহ যুগান্তকারী সব পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে শিক্ষা প্রশংসিত হয়েছে সব সময়েই। তবে গেল বছর সেই ধারাবাহিতায় যেন ছেদ পড়েছে। ভাল কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও শেষ করা যায়নি সফলভাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও নিয়ে বিতর্ক, বদলি বিতর্ক, কাজে স্থবিরতা, বদলি প্রাথমিক শিক্ষক অসন্তোষসহ নানা বিতর্ক নিয়েই বছর পার করেছে শিক্ষা খাত। বুধবার (১ জানুয়ারি) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন বিভাষ বাড়ৈ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সরকারের ৫১টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) চূড়ান্ত মূল্যায়নেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগের পিছিয়ে পড়ার চিত্র মেলে। পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সরকারের আগের দুই মেয়াদেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবস্থান ছিল প্রথম সারিতে। তবে এবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক পত্রে দেখা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ৫১টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের মধ্যে ৩৯তম স্থান এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ ৩০ তম স্থান অর্জন করেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ৭৪টি কর্মসম্পাদক সূচকের মধ্যে ৫৩টি শতভাগ অর্জন করেছে এবং ১০টি সূচকে কোন অগ্রগতি নেই। কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ ৬৬টি কর্মসম্পাদক সূচকের মধ্যে ৫২টি শতভাগ অর্জন করেছে এবং ৭টি সূচকে অগ্রগতি নেই।
বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বছরের বেশিরভাগ সময়ই অস্থিরতা বিরাজ করেছে। বংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয় (বুয়েট), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়, দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়, কুমিল্লসহ আরও কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জড়িয়েছে অস্থিরতায়। নানা পদক্ষেপে অধিকাংশ বিশ^বিদ্যালয় পরিস্থিতি সামাল দেয়া হলেও এখনও অস্থিরতায় জড়িয়ে আছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আলোচিত ছিল বুয়েট। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ক্ষোভে উত্তাল ছিল প্রতিষ্ঠানটি। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ হয় ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি, বহিষ্কার হয় হত্যায় জড়িত ২৬ শিক্ষার্থী, র্যাগিংয়ের দায়ের বহিষ্কারসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি পায় ৩০ জন, ভবিষ্যতে যাতে কেউ কোনো রাজনীতিতে জড়াতে না পারে সে বিষয়ে বিধিমালা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দীর্ঘ দুই মাস ১২দিন বন্ধ থাকার পর ২৮ ডিসেম্বর টার্ম ফাইনালে বসার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষার্থীরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় (জাবি) অবকাঠামো নির্মাণকাজকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজির অভিযোগ নিয়ে অস্থিরতায় জড়ায়। জাবির উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশের আন্দোলনে এখনও অচলাবস্থা বিরাজ করছে প্রতিষ্ঠানটিতে।
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। আরেক অংশ উপাচার্যের পক্ষে আন্দোলনে আছেন। উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়ালে এক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এক মাস বন্ধ থাকার পর গত ৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। তবে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যায়নি আজও। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করে পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করছে।
ফেসবুকে স্ট্যাটাাস দেয়াকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ডেইলি সানের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে এক সেমিস্টারের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ। পরে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, কথায় কথায় বহিষ্কারসহ নানা অভিযোগ এনে পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। টানা আন্দোলনের মুখে পদ ছাড়তে বাধ্য হন উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন।
উন্নয়ন কর্মকা-ে উপাচার্যের অস্বচ্ছতা, নিয়োগ বাণিজ্য, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিভক্তিসহ নানা ইস্যুতে বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়, দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময় অস্থিরতায় জড়িয়েছে। দুই হলের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে দুই নবেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। বিশ^বিদ্যালয়গুলোর সঙ্কট সমাধানে ব্যস্থ সময় পার করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় সব সময়।
২৮ বছরেরও বেশি সময় পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত বছর। এরপরই দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ডাকসুর নির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ প্যানেলের নুরুল হক নূর বছরজুড়েই ছিল আলোচনায়। বহিরাগতদের ডাকসুতে ভিপি নুরুল হক নূরের অবস্থান, ভিডিও বার্তায় সরকার ও ভারত বিরোধী উগ্রবাদী বক্তব্যের জেরে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। বছরের শেষ সময়ে একই ইস্যুতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সঙ্গে সংঘর্ষ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজ নিয়ে বছর জুড়ে আলোচনা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে আন্দোলনে নামে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে, তাদেরকে অধিভুক্তি থেকে বাদ দেয়ার জন্য আন্দোলনে নামেন ঢাবির শিক্ষার্থীরা। টানা আন্দোলনে অচল হয়ে যায় ক্যাম্পাস। কিন্তু কোনো সমাধান ছাড়াই চলছে কার্যক্রম।
দীর্ঘ ৯ বছর পর বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির নতুন তালিকা প্রকাশের পর অস্তিত্বহীন, ভূঁইফোড় ও যুদ্ধাপরাধীর নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান স্থান পাওয়া নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। বিস্তর অভিযোগের পাশাপাশি বিতর্কযুক্ত এমপিওভুক্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিও। যাচাই-বাছাই ছাড়া ‘কথিত’ নীতিমালার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান এমপিও দেয়ায় তা পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে সংসদ সদস্যের আবেদন নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পড়েন বেকায়দায়।
প্রতি বছর শিক্ষা ক্যাডারে বিভিন্ন স্তরে দুই দফায় পদোন্নতি দেয়া হলেও এবার কোন পদোন্নতি দেয়া হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার কর্মকর্তার মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। বৈঠকের মাধ্যমে বছরে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের দুই দফায় স্বাভাবিক বদলির নিয়ম থাকলেও এ বছর বদলি-পদায়ন হয় একটি বিশেষ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। এ নিয়ে বিভিন্ন দফতর ও কলেজগুলোতে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা আতঙ্কে ছিলেন। সমালোচনায় পড়েন মন্ত্রী। এক পর্য়ায়ে বছরের শেষ সময় এসে আগের বদলি করা কয়েকজনকে আবার অদল বদল করা হয়। যদিও বদলি নিয়ে অসন্তোষ রয়েই গেছে। এছাড়া বদলিতে মুক্তিযুদ্ধেও চেতনায় বিশ^াসী সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা সব সময় ছিলেন অসন্তুষ্ট।
সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের মোট সাড়ে ৬শ’ স্কুল-কলেজ জাতীয়করণের ঘোষণার পর এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি আত্তীকরণ প্রক্রিয়ার সকল কাজ মাউশি অধিদফতর থেকে সম্পন্ন করা হলেও মন্ত্রণালয়ের অদক্ষ কর্মকর্তাদের কারণে এ সংক্রান্ত ফাইল নিষ্পত্তি করতে পারেনি এক বছরেও।
গ্রাম থেকে আসা শিক্ষকরা প্রতিদিনই মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হতে গিয়ে নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন। অদক্ষ কর্মকর্তাদের কারণে মন্ত্রণালয়ের স্বাভাবিক কাজে সমন্বয়হীনতা ছিল গোটা বছরজুড়ে। বেসরকারী স্কুলের ভর্তিতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর। তিন বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। অনুমোদিত আসনের অতিরিক্ত ভর্তি না করাতে বেসরকারী স্কুলে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে মোট আসন সংখ্যা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) পাঠাতে হবে। গলাকাটা টিউশন ফির লাগাম টেনে ধরতে সরকারের ঘোষিত নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত আদায় যেন না করতে পারে, সেজন্য উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন। সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের বদলির ক্ষেত্রে জেলা পর্যায়ের পরিবর্তে আন্তঃউপজেলা পর্যায়ে যুক্ত করা হয়েছে।
সরকারী হাইস্কুলে ভর্তিতে এবার নতুন পদ্ধতির প্রশ্নপত্র করা হয়। সৃজনশীল বা রচনামূলক প্রশ্নের পরিবর্তে অল্পকথায় বা এককথায় উত্তর দেয়ার মতো প্রশ্ন রাখা হয়। এবারও দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি করা হবে সরাসরি লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে। এছাড়া থাকবে শূন্যস্থান, টেবিল/চার্ট, সমস্যা সমাধান/ধাঁধা ইত্যাদি।
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে ৬৪ জেলার কর্মকর্তাদের রদবদল করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত। পঞ্চম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের ফাইল মন্ত্রণালয়ে চালাচালি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চাইলে এ পরীক্ষা তুলে দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত করা হবে। বছরের শেষ দিকে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের ওপর বইয়ের বোঝা কমানো ও শিশুদের ওপর থেকে পরীক্ষার চাপ কমানোর দাগিদ দিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের দাবিতে বছরের শুরু থেকে নানা কর্মসূচী দিয়ে আসছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষকদের ১০তম ও সহকারী শিক্ষকদের ১২ গ্রেডের প্রস্তাব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া হলেও তা মানতে নাকচ অর্থ মন্ত্রণালয়। পরে আবারও আলোচনার মাধ্যমে প্রধানদের ১১ ও সহকারীদের ১৩ গ্রেড দিতে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মতি দিলেও শিক্ষকরা তা মানতে নারাজ। বেতন বৃদ্ধির এ ইস্যু নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে বছরজুড়েই।
তবে বছরজুড়ে শিক্ষাখাতে কী কী উন্নয়ন ও অর্জন হয়েছে সে সম্পর্কে প্রতিবেদন দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সমন্বয়ে ১৬ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় কমিটি গঠনের নির্দেশনা জারি করা হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ডা. দীপু মনি ও মহিবুল হাসান চৌধুরী গত ৭ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি এ মন্ত্রণালয়ে তাদের দায়িত্ব পালনের এক বছর পূর্ণ হবে। বছরজুড়ে শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের অর্জন সম্পর্কিত বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দফতর সংস্থার প্রধান ১৬ কর্মকর্তার সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) মোঃ বেলায়েত হোসেন তালুকদারকে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), এ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল, বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসি) চেয়ারম্যান, শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) মহাপরিচালক, ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি), জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম), পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একজন প্রতিনিধিসহ মোট ১৬ জনকে সদস্য করা হয়েছে।