ই-প্রাইমারি থেকে বহু শিক্ষকের তথ্য ডিলিট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষা অফিস থেকে যাদের এসব তথ্য আপলোডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তারা টাকা ছাড়া কোনো কাজই করে না। বাড়তি টাকার লোভে তারা তথ্য মুছে দেয়। পুনরায় তথ্য আপলোড করতে গেলে টাকা চায়। না দিলে কাজ হয় না।
২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে তথ্য ভাণ্ডার ই-প্রাইমারিতে ছবি আপেলাড করেন সহকারী শিক্ষক জহিরুল ইসলাম জাফর। পরে সার্টিফিকেটের কপিও সংযুক্ত করা হয়। একই ঘটনা ঘটেছে শিক্ষক জাফরের সঙ্গে। ই-প্রাইমারি থেকে তারও ছবি, এসএসসি, এইচএসসি ও বিএ’র সার্টিফিকেটের কপি উধাও হয়ে গেছে।
জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র থেকে জানা গেছে, ই-প্রাইমারিতে শিক্ষকদের তথ্য আপলোড করবেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অথবা তার অধীনস্থ একজন লোক। তবে সে হতে হবে সৎ ও নিষ্ঠাবান। তথ্য ভাণ্ডারের পাসওয়ার্ডও আছে। বরিশাল সদর উপজেলায় চারজনের কাছে রয়েছে এ পাসওয়ার্ড। তারা হচ্ছেন, বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের বিশরদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু জাফর, শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের হবিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুন্নবী, উপজেলা রিসোর্স সেন্টার কম্পিউটার অপারেটর কামাল হোসেন হাওলাদার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের কম্পিউটার অপারেট সুমন।
অভিযোগ রয়েছে, ওইসব ব্যক্তিদের মাধ্যমে বদলিজনিত ও নতুন ডিগ্রিপ্রাপ্ত থেকে শুরু করে বিভিন্ন তথ্য আপলোড করাতে হয় শিক্ষকদের। এজন্য শিক্ষকদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। যারা টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তাদেরকে বলে দেওয়া হয় সার্ভার কাজ করছে না।
এ ব্যাপারে কম্পিউটার অপারেটর কামাল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি এখন আর এ কাজ করি না। এজন্য শিক্ষা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম তালুকদারের ব্যবহৃত মোবাইলে কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, এ ধরনের অভিযোগ তিনিও পেয়েছেন। ওইসব ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ। বিষয়টি নিয়ে সভা করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে যাতে ই-প্রাইমারি পরিচালিত হয় সেজন্য পদক্ষেপ নেবেন।