ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে যারা পড়ে, তারা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলাদেশেরই নাগরিক। কিন্তু শুনতে অস্বাভাবিক মনে হলেও, দেশের প্রায় সব ইংরেজি মাধ্যম স্কুলেই মাতৃভাষা বাংলা বলতে মানা।
শেখানো হয় না ভাষা-আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যও। সরকারি নজরদারির অভাবকেই দুষছেন শিক্ষাবিদরা। তবে সরকার বলছে, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একটি নীতিমালা তৈরির চেষ্টা চলছে।
সোমবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়, আধুনিক প্রযুক্তি আর ডিজিটাল ক্লাসরুমে শিক্ষা গ্রহণে মনোযোগী উচ্চবিত্তদের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার পাশাপাশি জানছে নানা দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কেও। তবে প্রশ্ন হলো এসব শিশু-কিশোররা কতটুকু শিখছে নিজের ভাষা ও দেশের জন্মের ইতিহাস সম্পর্কে? এসব স্কুলে যে যার মতো অনুসরণ করছে একেক দেশের সিলেবাস।
কর্তৃপক্ষের দাবি, শুধু বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে নয়, গ্লোবাল সিটিজেন তৈরি করাই মূল উদ্দেশ্য হওয়ায় বাংলাকে তুলনামূলক কম গুরুত্ব দেওয়া হয়।
স্কলাসটিকা প্রিন্সিপাল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) কায়সার আহমেদ বলেন, ‘সুইচ করার ব্যাপারটি খুব কম। কাজেই সেখানে টিকে থাকতে হলে বিশ্বমানের লেখাপড়া ছাড়া আর কোন ব্যাপার আছে বলে আমি মনে করি না।’
শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে বাংলাকে প্রাধান্য দিয়ে একটি কারিকুলাম তৈরির কথা বলা হলেও বিশেষজ্ঞদের মতে, কেউ কোনো প্রতিবাদ না করায় এসব প্রতিষ্ঠানে অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে মাতৃভাষা ও দেশীয় সংস্কৃতি।
শিক্ষাবিদ মোরশেদ শফিউল হাসান বলেন, ‘ইংরেজি ভাষা শেখানোর চেয়ে বড় প্রবণতা হলো বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতিকে বিচ্ছিন্ন করার প্রবণতা।’
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে বৈঠক করছি। বাংলাকে প্রাধান্য দিয়ে একটি কারিকুলাম তৈরির কাজ চলছে। পরীক্ষায় থাকুক আর নাই থাকুক বাংলা ভাষা পড়াতে হবেই।’