ইংরেজি মাধ্যম স্কুলেও বাংলা পড়ানো হচ্ছে - দৈনিকশিক্ষা

ইংরেজি মাধ্যম স্কুলেও বাংলা পড়ানো হচ্ছে

শরীফুল আলম সুমন |

ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের নাম শুনলে অনেকেই বলে থাকেন, সেখানে বাংলা পড়ানো হয় না, বাংলার সঙ্গে কোনো সম্পর্কই তাদের নেই। তবে বাস্তব চিত্র ঠিক এ রকম নয়। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলেও বাংলার চর্চা চলে। প্রতিটি ক্লাসেই বাংলা বাধ্যতামূলক বিষয়। ‘ও’ লেভেল পরীক্ষায় বাংলা বিষয় রয়েছে। বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও উৎসবের অনুষ্ঠানও পালন করা হয় বাংলায়। এমনকি স্কুলের শুরুটাও হয় বাংলায় জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে।

রাজধানীর একাধিক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাদের পাঠ্যসূচিতে বাংলা বিষয় রয়েছে। স্কুলভেদে ১০০ নম্বর থেকে ৪০০ নম্বর পর্যন্ত বাংলা পড়ানো হয়। এর মধ্যে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও বাংলা ব্যাকরণ রয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বই-ই এ ক্ষেত্রে তারা পড়াচ্ছে।

রাজধানীর মেপললিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ইংরেজির সঙ্গে সমানতালেই রয়েছে বাংলা। ইংরেজি শেখানোর জন্য তিনটি পত্র তাদের রয়েছে—লিটারেচর, ডিকটেশন স্পেলিং ও ল্যাংগুয়েজ। বাংলায়ও তাদের দুটি পত্র রয়েছে, যার মধ্যে সাহিত্য, ব্যাকরণ, বানান, রচনাসহ নানা বিষয় রয়েছে। বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যও শেখানো হয়ে শিশুদের; অবশ্য তা চলে ইংরেজিতে।

রাজধানীর সানিডেল স্কুল ও স্কলাসটিকা স্কুল দুটিতেই ২০০ নম্বরের বাংলা পড়ানো হয়। এ ছাড়া ধানমণ্ডি টিউটোরিয়াল, ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুল, কাদির মোল্লা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মতো ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে পড়ানো হয় বাংলা। একুশে ফেব্রুয়ারি, ছাব্বিশে মার্চ, ষোলই ডিসেম্বর, পহেলা বৈশাখ, বসন্ত উৎসবের মতো সব অনুষ্ঠানই হয় বাংলায়।

রাজধানীর একটি নামি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষক জুলিয়া ইয়াসমীন বলেন, “ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে সর্বোচ্চ গ্রেড পয়েন্ট ‘এ’। আমার নিজের মেয়েই ‘ও’ লেভেলে বাংলায় ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে। যদি সে বাংলা ভালোভাবে না জানত তাহলে সে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেত না। শুধু আমার মেয়ে নয়, অনেক শিক্ষার্থীই অন্য বিষয়ে ‘এ’ গ্রেড না পেলেও বাংলায় পাচ্ছে। স্কুলের শুরুই হয় বাংলায় জাতীয় সংগীত দিয়ে। জাতীয় দিবস ছাড়াও পহেলা বৈশাখ, বসন্ত দিবসের মতো অনুষ্ঠানে আমাদের ছেলে-মেয়েরা বাংলায় দুর্দান্ত পারফরম করছে।’

জানা যায়, অনেক আগে থেকেই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে বাংলা বিষয় বাধ্যতামূলক রয়েছে। তবে কিছু অভিভাবক তাঁদের সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ান বলে বাংলাকে খুব একটা গুরুত্ব দেন না। তাঁদের সন্তানরাই বাংলায় তেমন দক্ষ হয় না বলে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। শিক্ষকরা জনান, আমাদের দেশের জন্য ‘ও’ লেভেলে এখন বাধ্যতামূলকভাবে বাংলা পরীক্ষা দিতে হয়। আর ‘এ’ লেভেলেও বাংলা বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা যায় কি না সে ভাবনাও রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করে স্কলাসটিকা স্কুলের একজন অভিভাবক  বলেন, ‘আমার দুই সন্তানই ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে। তারা লাইব্রেরিতে বাংলা বই পড়ার জন্য উন্মুখ থাকে। তাদের পরীক্ষার জন্য বাংলার নানা টপিকস আমাদের তৈরি করে দিতে হয়। এমনকি কত সুন্দর করে বাংলা রচনা লেখা যায় সেটাও তৈরি করে দিতে হয়। স্কুলে তাদের ২০০ নম্বরের বাংলা পড়তে হয়। ইংরেজির পাশাপাশি তারা বাংলায়ও সমান পারদর্শী।’

বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি ও কাদির মোল্লা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রিন্সিপাল জি এম নিজাম উদ্দিন  বলেন, ‘ইংলিশ মিডিয়াম সকল স্কুলেই বাংলা পড়ানো হয়। প্রায় সব ধরনের অনুষ্ঠান বাংলায়ই হয়। বাংলা মাধ্যম স্কুলে সব বিষয়ই বাংলায় পড়ানো হয় বলে তারা বেশি দক্ষ। আর ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে শুধু বাংলা বিষয়টি ছাড়া অন্য সব বিষয় ইংরেজিতে পড়ানো হয়। এ ছাড়া কথোপকথন, যোগাযোগ হয় ইংরেজিতে। এ জন্যই বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের মতো তারা বাংলায় অতটা পারদর্শী নয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থীরা যে বাংলা ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস-ঐতিহ্য জানে না তা একদমই সঠিক নয়।’

 

সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033929347991943