ফ্রান্সের প্যারিসের রাস্তায় সবার মুখেই মাস্ক। উদ্দেশ্য একটাই ভাইরাস প্রতিরোধ। নতুন করে ফ্রান্সে করোনার সংক্রমণ বাড়ায় শুক্রবার (২৮ আগস্ট) থেকে রাজধানীতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ।
দেশটিতে একদিনে ৭ হাজার ৩শ’র বেশি মানুষের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। যা গেল মার্চের পর ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ।
ভাইরাসের কারণে দেশজুড়ে পুনরায় লকডাউন এড়াতে বিকল্প ভাবছে ম্যাক্রোঁ সরকার। যে অঞ্চলে সংক্রমণ বাড়ছে আপাতত সেখানে লকডাউন দেয়া হচ্ছে। তবে, ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে আবারও কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
বলেন, সবার আগে আমাদের নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনীয় সবকিছুর প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। প্রথম ধাপে যে ভুল হয়েছে তার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেটাই প্রাধান্য পাবে। মাস্ক পরা সত্যিই অস্বস্তিকর। তারপরেও ভাইরাসটি প্রতিরোধে এটা আমাদের মানতেই হবে।
ফ্রান্স যখন আবারও লকডাউনের পথে হাঁটছে তখন আগামী সপ্তাহ থেকে কর্মস্থলে ফিরতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ যোগাযোগমন্ত্রী গ্রান্ট শাপস বলেন, ভাইরাসের কারণে বাড়ি থেকেই সবাই নিজেদের কাজ করছেন। তবে, কিছু কিছু কাজ আছে যেগুলো অফিস ছাড়া করা সম্ভব নয়। এখন আবারও অফিসে কাজে ফেরার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। আপনারা নিশ্চিন্তে অফিস করতে পারেন।
এদিকে, একদিনে যুক্তরাষ্ট্রে আবারও ৫০ হাজার মানুষের দেহে ভাইরাসটির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। মারা গেছেন এক হাজারের বেশি মানুষ। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮৫ হাজারের বেশি। অচিরেই এই সংখ্যা দুই লাখে পৌঁছাবে বলে জানায় দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র।
করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে লাতিন আমেরিকান দেশগুলোতেও। ভাইরাসটি প্রতিরোধে কিউবায় জারি করা হয়েছে কারফিউ।
এদিকে, গেল জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার মানুষকে করোনা সম্পর্কিত নানা অভিযোগে গ্রেফতার করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্যকর্মীকে হত্যা, মারামারি, নকল চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সুরক্ষা সামগ্রী বিক্রি, করোনা রোগীর জন্য অর্থ সংগ্রহ করে আত্মসাতের ঘটনায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় চীনা গণমাধ্যম।
এছাড়া, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ হচ্ছে জার্মানিতে। শনিবার সকাল থেকেই রাজধানী বার্লিনের রাস্তায় অবস্থান নেন হাজার হাজার মানুষ। এসময় জাতীয় পতাকা হাতে করোনা মোকাবিলায় সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচান করেন বিক্ষোভকারীরা। সামাজিক দুরত্ব না মেনেই বিক্ষোভ করেন তারা। বৃহস্পতিবার ভাইরাস প্রতিরোধে গণজমায়েত নিষিদ্ধসহ নানা নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এরই বিরোধিতা করে বিক্ষোভের ডাক দেন সাধারণ মানুষ।