প্রশাসন আসে। প্রশাসন যায়। প্রতিবছর বৃদ্ধি হচ্ছে ভর্তি ফি। কিন্তু গত দুই যুগেও বাড়েনি ছাত্রকল্যাণ তহবিলের ভাতা। ভর্তির সময় এ খাতে জমার পরিমাণ বেড়েছে ১০ গুণ। অথচ ১ গুণও বৃদ্ধি পায়নি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য। ২৩ বছর আগের নীতিমালা দিয়েই চলছে এ তহবিল। হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বছরে দেয়া হয় মাত্র ৬শ’ টাকা।
ফলে পরিবার থেকে আর্থিক যোগান না পাওয়া শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা চালাতে দিশাহারা হয়ে পড়ছে। সূত্র মতে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে নতুন ১৪টি খাত যুক্ত করে ৩৭টি খাতে ফি বৃদ্ধি করে প্রশাসন। পূর্বে যা ছিল ২৩টি আলাদা খাত। এসব খাতের অধিকাংশই অপ্রয়োজনীয় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
এর মধ্যে ছাত্রকল্যাণ তহবিলে গত দুই যুগে কয়েক দফায় জমার হার বাড়ানো হয়েছে ১০ গুণ। বর্ধিত হারে এখন শিক্ষার্থী প্রতি জমা দিতে হয় ২শ’ টাকা। কিন্তু জমা বাড়ালেও বাড়ানো হয়নি ভাতা দেয়ার পরিমাণ। ১৯৯৬ সালে এই তহবিল পরিচালনায় প্রশাসন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে। এতে বাৎসরিক ২০ টাকা হারে টাকা জমা নেয়া হতো।
সে নীতি অনুযায়ী হত-দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভাতা দেয়া হতো মাত্র ৬শ’ টাকা। গত বছর থেকে ছাত্রকল্যাণ তহবিলে যোগ হচ্ছে সাড়ে চার লাখ টাকা করে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কোটি টাকা জমা হয়েছে এখানে। শিক্ষার্থীদের দাবি জমার পরিমাণ যেহেতু ১০ গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে ভাতাও ১০ গুণ বেশি দেয়া হোক।
১০ গুণ হারে ৬ হাজার টাকা পেলে একজন শিক্ষার্থী এক বছরের একাডেমিক খরচ মেটাতে পারবে। দৈনিক মানবজমিনে এনিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলেও দেড় বছরেও টনক নড়েনি প্রশাসনের। প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবল নেয়ার পরিমাণ বাড়াচ্ছে প্রশাসন। অথচ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তায় কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এনিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন, ছাত্রকল্যাণ তহবিলের ভাতা বাড়াবে কে? ভাতা না পেলে পড়াশোনা কিভাবে শেষ করবে তা নিয়ে শঙ্কায় আছে হত-দরিদ্ররা।
শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জিকে সাদিক বলেন, ‘শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হলেও প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কথা ভাবছে না। শিক্ষার্থীদের মাসে প্রায় ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিবছর ভর্তি, পরীক্ষা ফি’সহ অনেক খরচ দিতে হয়। যা হত-দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পক্ষে যোগান দেয়া কষ্টকর। জমা ১০ গুণ হলে ভাতাও ১০ গুণ হবে এটাই নিয়ম হওয়া উচিত।’ এ বিষয়ে ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘৯৬-এর পর থেকে যদি বৃদ্ধি না হয়ে থাকে তবে আমরা শিগগিরই পদক্ষেপ নেব। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এ খাতে সাধ্যমতো ভাতা বাড়ানো হবে।’