ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সদ্য বিদায়ী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানের গাড়ির চালকের ইয়াবা সেবনের দুটি ভিডিও ফাঁস হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ভিডিওটি দুই মিনিট এবং দ্বিতীয় ভিডিওটি এক মিনিট ২৩ সেকেন্ডের। ভিডিওতে চালক পোল্লাদকে ইয়াবা সেবনে মত্ত থাকতে দেখা গেছে। ভিডিও দুটি প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
ভিডিওতে পোল্লাদসহ চারজনের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। যেখানে চালক এবং অন্য একজন ব্যক্তি ইয়াবা সেবনে ব্যস্ত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো একটি ভবনের সিঁড়িতে বসে এই ইয়াবা এবং মাদকের আসর জমায় তারা। তাদের কথোপকথনের মাধ্যমে জানা যায় ক্যামেরার পেছনের মানুষটির নাম মিলন। এ ছাড়া বাকি দুজনের নাম বা পরিচয় জানা যায়নি। এ সময়ে তাদের পাশে প্লাস্টিকের বোতলে তরল পানীয় দেখা যায়। বোতলের পানীয় তারা পান করে।
তাদের কথোপকথনের মাধ্যমে জানা যায়, তারা প্রতিনিয়ত সেখানে ইয়াবার আসর জমায়। পোল্লাদ ২০ দিন পরেই সেখানে ইয়াবা সেবন করতে গিয়েছিল। প্রতি পিস ইয়াবা ৪০০ টাকা করে কেনা হয়েছিল। তবে মিলন তাদের এভাবে প্রতিনিয়ত আসতে নিষেধ করে। এখানে প্রশাসন বড় তালা দিয়ে রাখে বলেও জানায় মিলন। মাদক সেবনের পাশাপাশি জুয়া খেলার কথাও উঠে আসে তাদের কথোপকথনে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পোল্লাদ আড়াই বছর প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানের গাড়ি চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। গত মঙ্গলবার তিন বছরের অধিক সময় পর প্রক্টর পদে পরিবর্তন করে প্রশাসন। মাহবুবর রহমানের পরিবর্তে আব্দুল্লাহ সিজারকে নতুন দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব শেষ করার দুই দিন পরেই তাঁর চালকের বিরুদ্ধে এমন তথ্য বেরিয়ে আসে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন চালকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, পোল্লাদের নেশা করার বিষয়টি অনেকে জানে। তবে প্রক্টরের চালক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের চালকদের মধ্যে কয়েকজন এই কাজে জড়িত বলেও জানায় তারা। তাহলে সে কি প্রক্টরের গাড়িতেই ইয়াবা বহন করত বলে প্রশ্ন করে চালকরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পোল্লাদ বলে, ‘কী ভিডিও বা কিসের ভিডিও, আমার জানা নেই। আমি কোনো প্রকার মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত না। বন্ধুদের আড্ডায় এমন কিছু হয়ে থাকতে পারে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, ‘আমার কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স জারি করেছি। কারো বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’