করোনা ভাইরাসে সারাদেশে জনজীবন থমকে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি বন্যার করাল গ্রাসে কর্মহীন গরিব মানুষগুলো আজ বড় অসহায়। কান্নার বন্যার মাঝে আজ বড় অসহায়ত্বের মাঝে প্রাথমিকের দপ্তরিরা ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে যাচ্ছে।
প্রাথমিকের দপ্তরি নিয়োগের পর থেকে তারা নিয়মিত ঈদ বোনাস পেয়ে আসছেন। সকল সরকারি, বেসরকারি কর্মচারীরা ঈদে বোনাস পেতে যাচ্ছেন। অথচ ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস এ ঈদে প্রাথমিকের দপ্তরিরা বেশিরভাগ এলাকায় চলতি বছরের জুলাইয়ের বেতন ও বোনাস থেকে বঞ্চিত। হঠাৎ করে বেতন ও বোনাস না পাওয়ার দুঃসহ বেদনা পুরো পরিবারের ঈদের আনন্দ ম্লান করে দিচ্ছে।
ঈদ মানে খুশি বা আনন্দ। প্রজাতন্ত্রের বিপুল সংখ্যক কর্মচারীর পরিবারের এ আনন্দ সংশ্লিষ্টদের মনে কোনো দাগ কাটবে কি না জানি না? এ প্রসঙ্গে কবিতার চরণ মনে পড়ে গেল-
“চিরসুখী জন ব্যথিত বেদন,
বুঝিতে নাহি পারে
কী যাতনা বিষে
কভু আশীবিষে
দংশেনী যারে।”
স্বাধীন সার্বভৌম বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় এ অবস্থা মেনে নিতে কষ্ট হয়। সংশ্লিষ্টরা যারা দপ্তরিদের বেতন বোনাস দিতে ব্যর্থ হয়েছেন উপলব্ধি বোধ জাগ্রত করার অভিপ্রায়ে খানিকটা সময় তাদের বেতন বিলম্বে দিয়ে একটু উপলব্ধি বোধ জাগ্রত করা যায় কি না? বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে। তাতে দপ্তরি পরিবারে এ কান্না তাদের মনে কিঞ্চিত হলেও জাগ্রত হবে।
যারা সার্বক্ষণিক ডিউটি করে সরকারি সম্পদ রক্ষা করে চলেছেন এ করোনায় যেখানে সকলের ছুটি থাকলেও তারা ছুটি বঞ্চিত। অথচ তাদের ওপর এ অমানবিক নির্দয় আচরণ বিবেকহীন ছাড়া বিবেকবানদের হৃদয়ে আঘাত করবে।
মাননীয় মহাপরিচালক, সচিব, প্রতিমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন, দপ্তরি কাম প্রহরীদের চাকরি রাজস্ব খাতে নিয়ে মর্যাদার সাথে স্বীয় দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিন।
একই প্রতিষ্ঠানে সরকারি বেসরকারি কর্মচারীর বৈষম্য এ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল না। বঙ্গবন্ধু বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টির ওপর সু-দৃষ্টি দেবেন। এ হোক মুজিববর্ষের প্রত্যাশা। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। আশা পূরক হোক দপ্তরি ভাইদের।
লেখক : মো. সিদ্দিকুর রহমান, সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ; সম্পাদকীয় উপদেষ্টা, দৈনিক শিক্ষাডটকম।