বরগুনায় ঈদের দিন বিকেলে হৃদয় (১৫) নামের এক দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত হৃদয়ের ওপর হামলার ঘটনার পর থেকে মঙ্গলবার (২৬ মে) রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন।
আটককৃতরা হলেন নোমান কাজি (১৮), হেলাল মৃধা (২৬), সাগর গাজি (১৬), ইমন হাওলাদার (১৮), রানা আকন (১৬), সফিকুল ইসলাম ঘরামি (১৫) ও হেলাল ফকির (২১)।
বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, হৃদয় হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত আমরা সাতজনকে আটক করেছি। আমাদের অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে। যদিও এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা দায়ের হয়নি। তবে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, যেহেতু এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা হয়নি তাই ভিডিও ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা তাদের সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এর আগে ঈদের দিন বিকেলে বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের পায়রা নদীর পাড়ের ব্লক ইয়ার্ডে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ঘুরতে যায় হৃদয়। এ সময় হৃদয়ের সঙ্গে থাকা এক বান্ধবীকে অভিযুক্তরা উত্ত্যক্ত করলে হৃদয় এর প্রতিবাদ করেন। এতে দু’পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হলে অভিযুক্তরা হৃদয়সহ তার কয়েক বন্ধুকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে গুরুতর আহত হৃদয়কে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন হৃদয়।
হৃদয় চলতি বছর বরগুনার টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। সে তার বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। তার বাবা দরিদ্র দেলোয়ার হোসেন একজন রিকশাচালক। তারা বরগুনার চরকলোনি এলাকার চাঁদশী সড়কের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মূহর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেসময় দেশজুড়ে সে হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ভাইরাল হয়। গ্রেফতার হয় প্রায় সকল আসামি। বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় ওই হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নয়ন বন্ড। রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের ঠিক এক বছর যেতে না যেতেই বরগুনায় ফের সঙ্ঘবদ্ধ এ হত্যার ঘটনা ঘটলো।