রাজধানীর উইলসন লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওবায়দুল খানকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেন নীলফামারীর ডোমারের মাংস বিক্রেতা দুলাল হোসেন। সে উপজেলার হরিণচড়া গ্রামের আফতাব উদ্দিনের ছেলে। সে সোনারায় বাজারে প্রতিদিন ছাগলের মাংস বিক্রি করেন। তার এই সাহসিকতার জন্য তাকে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা দেয়া হয়।
বুধবার (৯ অক্টোবর) সকালে রিশা হত্যার একমাত্র আসামী ওবায়দুলকে আটক করে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে। এর আগে পুলিশ, র্যাব ও ডিএমপি পুলিশের দল তাকে গ্রেফতারের জন্য ডোমার উপজেলায় সারারাত অভিযান পরিচালনা করলেও তাকে আটক করতে পারেনি।
দুলাল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বুধবার সকালে তিনি প্রতিদিনের মতো সোনারায় বাজারে মাংস বিক্রির দোকান খুলতে আসেন। সকালে বাজারে তেমন কোন লোকজন ছিল না। এমন সময় তিনি পাশ্ববর্তী এক দোকানের বারান্দায় উদভ্রান্তের মত এক যুবককে বসে থাকতে দেখেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ভ্যানে করে ওই যুবক নীলফামারীর দিকে রওনা হয়ে যান। পত্রিকায় ওবায়দুলের ছবি দেখে দুলাল সন্দেহ করেন ঐ ব্যাক্তিটি রিশার খুনি। সে তার মোটরসাইকেল নিয়ে ওই যুবকের পিছু ধাওয়া করেন নীলফামারী ডোমার সড়কের খানাবাড়ী মসজিদের সামনে থেকে তাকে আটক করে নিজের মোটরসাইকেলে তোলেন। তাকে সোনারায় বাজারে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওই যুবক নিজেকে ওবায়দুল নামে পরিচয় দেয় এবং জানায় তার বাড়ী দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার মীরাটাঙ্গী গ্রামে। এতে দুলাল মোটামোটি নিশ্চিত হয় সেই রিশার হত্যাকারী। এক পর্যায়ে তাকে চায়ের দোকানে সকালের নাস্তা খাওয়ায় দুলাল। এরই ফাকে ওবায়দুল তাকে জানান, সে ঢাকায় রিশা নামের এক স্কুলছাত্রীর ঘাতক। ঢাকা থেকে সে পালিয়ে এসেছে ডোমারে এক আত্মীয়ের বাসায়। মঙ্গলবার রাতব্যাপী পুলিশের অভিযান চললে সে রাতটা বাশঝাড়ে কাটিয়ে দেয়। বুধবার সকালে পালানোর চেষ্টা করেন। ওবায়দুল আরো জানায়, সে নিজের অজান্তেই রিশাকে খুন করে ফেলেছে।
এরপরই দুলাল ডোমার থানা পুলিশকে ফোন দিলে ডোমার থানার এস আই ফজলুল হক ঘটনাস্থলে পৌছে ওবায়দুলকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে দুলাল আরো জানায়, রিশা নয় সে তো আমার মেয়ে বা বোনও হতে পারতো, সে বিবেক থেকেই ওবায়দুলকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।
ওবায়দুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার পর বুধবার বেলা ১২টার পরেই ডোমার থানা থেকে মাইক্রোবাসে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
রিশার হত্যাকারী ওবায়দুলের ফাসির রায় শুনে দুলাল জানান, তার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। তিনি মনে মনে চেয়েছিলেন ওবায়দুলের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়।