রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী প্রতি ৫০০ টাকা করে ক্লাস পার্টির ফি আদায় করছে কর্তৃপক্ষ। ফেব্রুয়ারি মাসে ক্লাসপার্টি নজিরবিহীন এবং ফি ধরা হয়েছে অস্বাভাবিক। সরকারি নিয়ম না থাকা সত্ত্বেও এধরণের অনুষ্ঠান করতে বড় অংকের টাকা আদায় করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। স্কুলটিতে বাংলা মাধ্যমে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন এবং ব্রিটিশ কারিকুলামের ইংরেজি মাধ্যম পড়ানো হয়। তবে, ক্লাসপার্টি হচ্ছে বাংলাদেশী কারিকুলামের বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন শিক্ষার্থীদের।
হাবিবুর রহমান নামের একজন অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, তিন দিন আগে বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রথম তাদেরকে এসএমএস করে ৫০০ টাকা করে দিতে বলা হয়। আজ সোমবার আবারো ওই টাকার জন্য তাগাদা দিয়ে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শ্রেণিশিক্ষকের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন সদস্য, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কয়েকজন শিক্ষকের একটি সিন্ডিকেট বিভিন্ন অজুহাতে কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলে আসছেন গত কয়েকবছর যাবত। এই চক্রে শাখা প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান ও নাসির উদ্দিনও জড়িত বলে জানা যায়।
এদিকে ক্লাস পার্টির ফি অস্বাভাবিক হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কয়েকজন অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাকে জানান, স্কুল থেকে শিক্ষা সফর আয়োজনের নিয়ম থাকলেও তা করছেন না কর্তৃপক্ষ। ক্লাস পার্টি কি বাঙালি সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেক অভিভাবক। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে তুলে তার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের কি দেয়া হবে বা খাওয়ানো হবে, সেব্যাপারে স্পষ্ট করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া প্রায় সাড়ে নয় হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে চাঁদা তুললে প্রায় অর্ধকোটি টাকা উঠবে। সেই টাকা কিভাবে খরচ হবে তার সেসম্পর্কে কোন স্বচ্ছতা থাকবে কিনা সেই সমালোচনাও করেন অভিভাবকরা।
অভিভাবকরা আরো জানান, ক্লাস পার্টি করার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা অধিদপ্তরের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। অনেক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে এধরনের ক্লাস পার্টির আয়োজন করা হয়। তবে তা সাধারণত ফাইনাল পরীক্ষার আগে নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। তাহলে কেন ফেব্রুয়ারি মাসে এধরনের অনুষ্ঠানের জন্য চাঁদা তোলা হচ্ছে তাও জানতে চান অভিভাবকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলটির একজন শিক্ষক জানান, মশিউর রহমান এবং নাসির উদ্দিন নামের দুইজন শাখা প্রধান শিক্ষক এই টাকা তোলা এবং ভাগবাটোয়ারা কাজে নিযুক্ত আছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল মান্নান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ক্লাস পার্টি করার কোন নির্দেশনা নেই। তবে ঢাকার অনেক স্কুলে এধরণের অনুষ্ঠান করা হয় বলে জানতে পেরেছি। আর এতবেশি চাঁদা-- বিষয়টি তদন্ত করার মতো।
অভিযোগের বিষয়ে মতামত জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: আবুল হোসেনকে।