করোনা ভাইরাসের কারণে চলমান সাধারণ ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অন্তত ৬ মাসের সেশনজট সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ছুটি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রলম্বিত হলে সেশনজট কিছুতেই এড়ানো যাবে না।
সে ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের জীবন থেকে একটি সেমিস্টার চলে যেতে পারে। তবে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় সচল করা সম্ভব হলে বিদ্যমান ক্ষতি কমিয়ে আনার নানা পরিকল্পনা আছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর।
এদিকে ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের ক্ষয়ক্ষতিসহ অন্যান্য বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আজ বিকেলে এক ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কর্মকর্তারা। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরাও যুক্ত হতে পারেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে হয়তো ছয় মাসের সেশনজট সৃষ্টি হবে। একটি সেমিস্টার চলে যাবে। তবে এই পরিস্থিতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন নয়।
অতিরিক্ত ক্লাস বাড়িয়ে ও ছুটি কমিয়ে তারা এটা পূরণ করতে পারবে। কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটা নতুন অভিজ্ঞতা। শিক্ষার্থী ভর্তি ও পরীক্ষা নেয়ার সঙ্গে তাদের আয় জড়িত। সেটা বন্ধ আছে। এ কারণে শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতার ওপর প্রভাব পড়তে পারে।
আমরা শুনেছি, কোথাও কোথাও ইতোমধ্যে প্রভাব পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা সবাইকে নিয়ে আলোচনা করেই কাল (আজ) সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এতদিন মনে হচ্ছিল ঈদের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে এবং ছুটি কমিয়ে সাধারণ ছুটির ক্ষতি পোষানোর চিন্তাভাবনা ছিল।
কিন্তু করোনার টিকা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চায় না সরকার। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বহাল রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হলে কমপক্ষে ২ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা তৈরির ওপর জোর দিচ্ছেন ইউজিসির নীতিনির্ধারকরা।
তারা মনে করছেন, ছয় মাসের ছুটির ক্ষতি পোষাতে দুই বছর লেগে যেতে পারে। দুই বছর বিভিন্ন ছুটি কমিয়ে এবং অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে সেশনজটবিহীন ক্যাম্পাস পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে। সেটির মধ্যে আছে- গ্রীষ্মকালীন ছুটি (জুন মাস) শেষে বা জুলাই মাসে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করা যায়, তাহলে শিক্ষকরা সংশ্লিষ্ট সেমিস্টার/বার্ষিক পদ্ধতির কোর্সসমূহের অতিরিক্ত ক্লাস ও ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করে এই অনির্ধারিত ছুটির কারণে সৃষ্ট ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা নেবেন।