উচ্চশিক্ষিত বেকারের সমস্যা - দৈনিকশিক্ষা

উচ্চশিক্ষিত বেকারের সমস্যা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

উচ্চশিক্ষা এখন আর চাকরির নিশ্চয়তা দেয় না, বরং যত বেশি উচ্চশিক্ষিত তত বেশি বেকার থাকার ঝুঁকি বাড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর বাড়ছে ২২ লাখ বেকার। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিত বেকারের হার ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। যা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৮টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয়। চাকরির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা, বয়স বাড়ানোর দাবি কিংবা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া— এগুলো এখন অতীত। আজ উচ্চশিক্ষিত বেকারদের প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে পীড়াদায়ক প্রধান দুটি সমস্যা তাদের হতাশাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণ। সমস্যা দুটি হলো—চাকরির আবেদনের জন্য টাকা সংগ্রহ করা এবং অভিজ্ঞতার চাহিদা। শনিবার (৯ নভেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, প্রথমত, চাকরির আবেদনের জন্য যে টাকা পরিশোধ করতে হয়—তা বেকারদের জন্য সংগ্রহ করা অত্যন্ত কষ্টকর। চাকরির আবেদনের জন্য প্রয়োজন হয় ১০০ টাকা থেকে শুরু করে কয়েক শ টাকা পর্যন্ত। শিক্ষাজীবন শেষে চাকরি পাওয়ার পূর্ব মূহূর্ত পর্যন্ত টিউশনি করে নিজের ব্যয় মেটায়, আবার অনেকে বাবা-মায়ের ওপর নির্ভর করে। সন্তানকে উচ্চশিক্ষিত করার পরও তাদের ব্যয় বহন করা বাবা-মায়ের জন্য যন্ত্রণাদায়ক। অর্থনৈতিকভাবে বাবা-মাকে সাহায্য করতে না পারা কতোটা হতাশাজনক, তা একজন উচ্চশিক্ষিত বেকার ছাড়া অন্য কারো পক্ষে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। একজন বেকারকে একসময়ে অনেক চাকরির জন্য আবেদন করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে আবেদনকারীর অবস্থা সহজেই অনুমেয়। বেকাররা অর্থনৈতিক, পারিবারিক, সামাজিক প্রচণ্ড চাপ সইতে সইতে আজ ক্লান্ত। তাই প্রশ্ন—আর্থিক সমস্যাগ্রস্ত বেকারদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া কতোটা ন্যায়সঙ্গত?

দ্বিতীয়ত, নিয়োগদাতাদের কাছে নিয়োগপ্রার্থীদের অভিজ্ঞতার চাহিদা! যারা মাত্র পড়াশোনা শেষ করেছে তারা অভিজ্ঞতা পাবে কোথায়? আর যাদের অভিজ্ঞতা আছে তারা কোথাও না কোথাও চাকরি করছে। অভিজ্ঞতা নাই—এ সুযোগ গ্রহণ করে বেসরকারি মুনাফালোভী কিছু কর্তৃপক্ষ তাদের ঠকাচ্ছেন। যোগ্যতা থাকার পরেও বেকাররা প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা ও যথাযথ সম্মান পায় না। বেসরকারি কর্তৃপক্ষের অভিজ্ঞ লোক চাওয়াটা স্বাভাবিক, কিন্তু সরকারি কর্তৃপক্ষের অভিজ্ঞ লোক চাওয়ার বিষয়টি বোধগম্য নয়। যদি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকের প্রয়োজন বাধ্যতামূলক করা হয়, তাহলে সরকারের উচিত শুধু কারিগরি শিক্ষা নয়—সকল শিক্ষা সম্পন্ন হওয়ার আগেই হাতে কলমে শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

বাজেটের সঙ্গে দেশের সকল মানুষের চাহিদা, আশা, স্বপ্ন পূরণ ও আকাঙ্ক্ষার সম্পর্ক থাকে। রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণের সঙ্গে জড়িত সাধারণ মানুষের জীবন। সরকার প্রতি বছর বাজেটে ভর্তুকি প্রদান করে। ভর্তুকি খাতে বেকারদের চাকরির আবেদনের ব্যয় সংযোজন করা সময়ের দাবি। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে পেশ করা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি টাকা জোগান দেওয়ার কথা বলেছে। এতে সীমিত আকারে হলেও বেকার তরুণেরা আশার আলো দেখবে, আগামী বাজেটে সরকার বেকারদের বিশেষভাবে মূল্যায়ন করবে বলে আশা করি।

সরকারের চাকরির আবেদনের জন্য টাকা এবং নিয়োগ দেওয়ার আগে অভিজ্ঞতা চাওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা উচিত বলে আশা করি। একইসঙ্গে অভিজ্ঞতার কথা বলে বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান যেন উচ্চশিক্ষিত বেকারদের অর্থনৈতিকভাবে ঠকাতে না পারে সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে—এটাই প্রত্যাশা।

আবু সাঈদ দেওয়ান সৌরভ : মুন্সীগঞ্জ।

হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061609745025635