উন্নতির উপর-নিচ: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - দৈনিকশিক্ষা

উন্নতির উপর-নিচ: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দেশের মানুষের ভেতর যে কর্মশক্তি ও উদ্ভাবন ক্ষমতা আছে তা চাপা পড়ে গেছে। জরিপ খবর দিচ্ছে উদ্ভাবন শক্তিতে বাংলাদেশ এখন এশিয়ার ভেতর সর্বনিম্নে। কর্মদক্ষতা ও উদ্ভাবন শক্তির মুক্তি ঘটলে দেশের অবস্থা পাল্টে যেত, আমরা স্থলে, জলে, মাটির নিচে যত সম্পদ আছে তার সদ্ব্যবহার করতে পারতাম, জীবনযাত্রার সাধারণ মান উন্নত হতো এবং সেই উন্নতির আনুকূল্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিভীষিকাও কমে আসত। সোমবার (২৫ নভেম্বর) ভোরের কাগজ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে  এই তথ্য জানা যায়। 

নিবন্ধে আরও জানা যায়, রাষ্ট্রীয় কর্তাদের শাসনে দেশের মানুষ যে ভালো নেই তা বলার অপেক্ষা আগেও রাখত না, বর্তমানে আরো বেশি পরিমাণে রাখে না। মেহনতি মানুষের আয়ের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প-কারখানার মালিকদের আয়ের যে কোনো রকমের তুলনাই জানিয়ে দেবে মেহনতিদের দশাটা কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে; ধরিয়ে দেবে বিজ্ঞাপিত উন্নতির আসল রহস্যটা।

 

অনুৎপাদক খাতের লোকদের আয়ের সঙ্গে উৎপাদক খাতের মেহনতিদের তুলনাটাও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। সামরিক ও অসামরিক আমলাতন্ত্র এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বেতনভাতা ও সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে মেহনতি মানুষের আয়-ব্যয়ের তুলনা করুন, পরিষ্কার ধরা পড়বে রাষ্ট্রের পক্ষপাত কোন দিকে এবং কেন। ধরা পড়বে উন্নতি কোন দিকে ঘটছে এবং কীভাবে ঘটছে।

ঢাকা শহর এখন পৃথিবীর নিকৃষ্টতম শহরে পরিণত হয়েছে। ঢাকার নিচে আছে আর একটি মাত্র শহর সেটি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক। সিরিয়াতে যুদ্ধ চলছে, তাই দামেস্কের ওই দশা। কিন্তু বাংলাদেশে তো কোনো যুদ্ধ নেই, তাহলে বাংলাদেশের রাজধানীর কেন এই দুর্দশা? হ্যাঁ, যুদ্ধ একটা অবশ্যই আছে, যুদ্ধ চলছে এই বাংলাদেশেও; সেটা দরিদ্রের সঙ্গে ধনীর যুদ্ধ। তার নাম শ্রেণিযুদ্ধ।

আমরা ওই যুদ্ধের খবর রাখি না, খবর রাখতে চাইও না, রাখলে বুঝতাম ঢাকা কেন এতটা নিচে নেমে গেল। উন্নতি? হ্যাঁ, হচ্ছে, অবশ্যই উন্নতি হচ্ছে। উন্নতির দৃশ্য ও গল্প তো কোনো নতুন ব্যাপার নয়। উন্নতি ব্রিটিশ শাসনে হয়েছে, পাকিস্তান আমলেও কম হয়নি। ব্রিটিশরা তো বলতেই পারে যে তারা আমাদের জন্য রেলগাড়ি, টেলিগ্রাফের সংযোগ, স্টিমারে যাতায়াত- এসবের ব্যবস্থা করে দিয়েছে, শিল্প-কারখানা তৈরি করেছে, ইংরেজি ভাষা শিখিয়েছে এবং চা কীভাবে খেতে হয় সেটা পর্যন্ত হাতে ধরে দেখিয়ে দিয়েছে।

কিন্তু ওই সব উন্নতি নিয়ে আমরা তো সন্তুষ্ট ছিলাম না; উন্নতির ওই দাতাদের আমরা মেরে-ধরে বিদায় করেছি। কারণ? কারণ হলো উন্নতিটা ছিল পুঁজিবাদী ধরনের, তাতে উন্নতির সঙ্গে সমানতালে বাড়ছিল বৈষম্য ও বঞ্চনা, দেশের সম্পদ চলে যাচ্ছিল বিদেশে। এখনকার উন্নতিরও তো ওই একই দশা।

উন্নতি অল্প কিছু মানুষের, যারা চেপে বসে আছে বাদবাকিদের ঘাড়ের ওপর, আর উন্নতির সব রসদ জোগাচ্ছে ওই বাদবাকিরাই। এই উন্নতরা উন্নতি করেছে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে। দেশের সব দৈনিকেই বেরিয়েছিল অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর খবরটা যে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের ধনীরা যে গতিতে ও যে হারে উন্নতি করেছে তার তুলনা সারা বিশ্বের কোথাও নেই।

উন্নতির উন্মাদনায় অধুনা চীন ছুটছে বুলেটের গতিতে। কিন্তু উন্নতির দৌড়ে বাংলাদেশের ধনীরা চীনের ধনীদেরও পেছনে এবং লজ্জাতে ফেলে দিয়েছে। প্রতিযোগিতায় প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের ধনীরা হার মেনেছে। রণে ভঙ্গ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ধনীরাও। এই উন্নতির অবিশ্বাস্য গতির উল্টো পিঠে লেখা রয়েছে মানুষের দুর্দশা, শঙ্কা ও কান্না। মায়ের আসল কান্না, মাসি বা মাসতুতো ভাইদের মায়াকান্না নয়।

হঠাৎ উন্নতরা এ দেশের কোনো ভবিষ্যৎ আছে বলে বিশ্বাস করে না, তারা তাই মহাব্যস্ত দেশের সম্পদ লুণ্ঠনে ও পাচারে। সম্পদ মোগলরা নিয়ে যেত দিল্লিতে, ইংরেজরা নিয়ে গেছে লন্ডনে, পাকিস্তানিরা নিত রাওয়ালপিন্ডিতে; এখন আমাদের বাঙালি ভাইরা পাঠাচ্ছে সুইজারল্যান্ড, কানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতে।

এদের কারো জবাবদিহিতার সামান্যতম দায় নেই। উন্নতি কাদের শ্রমে ও ঘামে সম্ভব হচ্ছে তাও আমরা জানি। কাজী নজরুল ইসলাম তার ছোট্ট একটি কবিতা লিখেছিলেন ‘কুলি-মজুর’ নামে। ওই কবিতাতে পুঁজিবাদী উন্নতির ভেতরকার খবরটা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়ে গেছেন তিনি। ওটি লেখা হয়েছিল আজ থেকে ৯৬ বছর আগে।

তিনি জিজ্ঞেস করেছেন রাজপথের মোটর, সাগরের জাহাজ, রেললাইনের রেলগাড়ি, জমিতে অট্টালিকা- এসব কাদের দান, এগুলো কার খুনে রাঙা? জবাবটা তার ওই প্রশ্নের ভেতরেই বসে আছে। সব উন্নতিই শ্রমিকের শ্রম দিয়ে দিয়ে তৈরি, উন্নতি মাত্রেই শ্রমিকের খুনে রাঙা। বিনিময়ে শ্রমিক কী পেয়েছে? বেতন? কত টাকা? নজরুলের ভাষায়, বেতন দিয়েছ? চুপ্ রও যত মিথ্যাবাদীর দল্ কত পাই দিয়ে কুলিরে তুই কত ক্রোর পেলি বল্।

কত দিলেন আর কত পেলেন, এ প্রশ্নের জবাবে আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের মালিকরা কী বলবেন? কত দিচ্ছেন? বিনিময়ে কত আদায় করে নিচ্ছেন?

বাংলাদেশে আত্মহত্যার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সব খবর যে পাওয়া যায় তা নয়, তবু গড়পড়তা হিসাবে দিনে এখন ৩০ জন মানুষ আত্মহত্যা করছে। খবরটা সংবাদপত্রগুলো জানিয়েছে। মানুষ তো আর শখ করে আত্মহত্যা করে না, বাধ্য হয়েই ওই পথে যায়। নিজের হাতে নিজেকে বধ করার এই প্রবণতা সাক্ষী দিচ্ছে বিজ্ঞাপিত সুখের নিচে মানুষের জীবনে কী ভীষণ অশান্তি চলছে। সড়কে প্রতিদিন গড়পড়তা হত্যা করা হয় দশজনকে, ঘরে ফিরে নিজেই নিজেকে হত্যা করে ত্রিশজন; যেন প্রতিযোগিতা দুয়ের ভেতর।

একটি পত্রিকা বলছে, ‘বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে পুরুষের আত্মহত্যার হার বেশি হলেও বাংলাদেশে এই চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। এখানে নারীরা বেশি আত্মহত্যা করেন।’ এই বিশেষ ক্ষেত্রে মেয়েরা কেন অগ্রগামী তার ব্যাখ্যা রয়েছে মেয়েদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ভেতরেই। যে কারণে মেয়েরা পথে-ঘাটে ধর্ষিত হয়, গার্মেন্টসে মানবেতর কাজ খোঁজে, ভাসতে ভাসতে চলে যায় সুদূর সৌদি আরবে, পাচার হয় মধ্যপ্রাচ্যে ধর্ষিত-নির্যাতিত এবং মৃত্যুর ঘটনাও অবিরাম ঘটছে।

ঠিক সেই কারণেই মেয়েরা এখানে অধিক সংখ্যায় আত্মহত্যা করে। জীবনের নিরাপত্তা নেই, কোনো আলো নেই সামনে। ব্যবস্থাটা পুঁজিবাদী। পুঁজিবাদ পিতৃতান্ত্রিক, বাংলাদেশে পুঁজিবাদ সবিশেষ রূপে পিতৃতান্ত্রিক। এই ব্যবস্থা মনুষ্যত্বকে তো মারেই, মারে মানুষকেও। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক উন্নতির নামে সাহায্য করার আড়ালে আমাদের অবনতিই ঘটিয়ে চলেছে।

একদিকে তারা ঠগ, অন্যদিকে তারা মাসি; ঠগ হিসেবে আসে, আবার মাসি হিসেবেও দরদ দেখায়। দরদের কারণ প্রতি বছরই তারা দেশের ঋণগ্রস্ত দুর্দশার ছবি তুলে ধরে; উদ্দেশ্য দুর্দশাগ্রস্তরা যাতে আরো বেশি ঋণ চায়; নিজেদের দুর্দশা নিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে; এবং কান্নাকাটির তোড়ে দাঁড়াবার জন্য অত্যাবশ্যক যে আত্মবিশ্বাস সেটা খুইয়ে ফেলে।

ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অতিসাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণের কারণে এক বছরেই ২ লাখ ৩৪ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। উন্নতির কড়ি এভাবেই গুনতে হচ্ছে, এ দেশের মানুষকে। এ নিয়ে দেশের মানুষ যে চিন্তা করেন না তা নয়। করেন। চিন্তার ভারে দেশের অধিকাংশ মানুষই ভারাক্রান্ত, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত; যদিও বাইরে তারা ভাবটা করেন হাসিখুশির। ওই ভাবটা আসলে কান্না চেপে রাখার চেষ্টারই নামান্তর। নীরব অশ্রুপাতও ঘটে। চোখ ঝাপসা হয়ে যায়, পথ দেখতে পান না।

প্রফেসর আজহার হোসেন ১৯৯৭ সালে ‘বন্ধনহীন গ্রন্থি’ নামে তিনি একটি বই লিখেছিলেন, প্রবন্ধের। বইয়ের প্রবন্ধগুলোর সাহিত্য মূল্য তেমন নেই, কিন্তু প্রতিনিধিত্ব মূল্য আছে। বোঝা যায় তার দুশ্চিন্তা তার একার নয়, দেশের অনেকেরই। প্রবন্ধগুলোর একটির নাম ‘সোনার বাংলা’। তাতে তিনি আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন জনসংখ্যার বৃদ্ধি দেখে।

সে সময়ে দেশের জনসংখ্যা ছিল ১১ কোটি, ভূমি সেই ৫৬ হাজার বর্গমাইল। তার সরল মন্তব্য, ‘সহজেই অনুমান করা যায় আগামী ৫-৭ বছরের মধ্যে আমাদের দেশে কী বিভীষিকাময় অবস্থা হবে।’ এখন জনসংখ্যা কিন্তু অধ্যাপক হোসেন যে সংখ্যাটি দেখে আতঙ্কিত ছিলেন সেই ১১ কোটিতে থেমে নেই, চুপিচুপি ১৮ কোটির কাছাকাছি। এসেছে রোহিঙ্গারাও। আসবে মনে হয় আসামের বাঙালিরাও।

বিজেপি নেতারা হুঙ্কার দিয়ে জানাচ্ছেন সে সংবাদ। জনসংখ্যা ১১ কোটি ছাড়িয়ে গেলে অবস্থা কেমন দাঁড়াবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত শিক্ষাবিদ সেটা ভাবতে চেষ্টা করেছিলেন। তার ধারণা হয়েছিল, ‘লোক গিজগিজ করবে। এ নিয়ে নিজের ভাগ্যকে গালাগালি দেবে যে, এ রকম দেশে তার জন্ম হয়েছিল।… এদের মধ্যে যারা ভাগ্যবান তারা হয়তো কোনো রকমে বিদেশে যেতে পারবে বাকি সব তো এই সোনার বাংলাতেই থাকবে।’

তা থাকবে। থাকতে বাধ্য হবে। এর বাইরে আর করবেটাই বা কী? কাঁদবে? কপাল চাপড়াবে? সেটা যে চলছে না তা তো নয়। সুযোগ ও ফাঁকফোকর খুঁজবে পালানোর? সে চেষ্টারও অবধি নেই। ভরসা করা যাবে কি সড়কে মানুষ হত্যা ও গৃহে আত্মহত্যার ক্রমবর্ধমান প্রবণতার ওপর? কে জানে! ‘সোনার বাংলা’ কথাটা অধ্যাপক হোসেন পরিহাস করেই ব্যবহার করেছেন।

তবে সোনার বাংলার কথা অন্যরাও বলেছেন বৈকি এবং সোনার বাংলা শ্মশান কেন এই প্রশ্ন তুলে যুগপৎ ক্রোধ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন। ব্রিটিশ শাসনের কালে আমরা বলতাম সোনার বাংলা শ্মশান হয়েছে ব্রিটিশদের শোষণের কারণে, পাকিস্তান আমলে বলতাম ঘটনার কারণ পাকিস্তানিদের শোষণ। কিন্তু এখন? এখন তো ব্রিটিশ নেই, পাকিস্তানিরাও বিদায় হয়েছে, তাহলে এখনো সোনার বাংলার এমন দুর্দশা কেন?

জবাবটা তো আমাদের অজানা নয়। সেটা এই যে শাসক বদলেছে কিন্তু শোষণের অবসান হয়নি। এই শোষণ পুঁজিবাদী, অধিকাংশ মানুষের ওপর অল্প কিছু লোকের নিষ্পেষণ কমেনি, উল্টো উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।

দেশের মানুষের ভেতর যে কর্মশক্তি ও উদ্ভাবন ক্ষমতা আছে তা চাপা পড়ে গেছে। জরিপ খবর দিচ্ছে উদ্ভাবন শক্তিতে বাংলাদেশ এখন এশিয়ার ভেতর সর্বনিম্নে। কর্মদক্ষতা ও উদ্ভাবন শক্তির মুক্তি ঘটলে দেশের অবস্থা পাল্টে যেত, আমরা স্থলে, জলে, মাটির নিচে যত সম্পদ আছে তার সদ্ব্যবহার করতে পারতাম, জীবনযাত্রার সাধারণ মান উন্নত হতো এবং সেই উন্নতির আনুকূল্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিভীষিকাও কমে আসত।

জীবনমানের নিম্নগমন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি যে পরস্পর নির্ভরশীল সেটা তো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সত্য। মানুষের ভেতর কী যে অসামান্য শক্তি ও ক্ষমতা রয়েছে তার প্রমাণ বিশেষভাবেই পাওয়া গেছে একাত্তরে গণহত্যার সময়ে নব্বই হাজার হানাদার পাকিস্তানি সেনাদের অস্ত্রশস্ত্র ফেলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করার ঘটনার ভেতরেই। সে ঘটনা এমনি এমনি ঘটেনি।

ঘটেছে জনগণের ভেতরে নিহিত ক্ষমতার কারণে। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাষ্ট্রক্ষমতা চলে গেছে পুঁজিবাদে দীক্ষিত বাংলাদেশিদের হাতে। উন্নতি চলেছে ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি ধারাতেই। মানুষ প্রাণ দিল, কিন্তু প্রাণঘাতী পুঁজিবাদী শাসন-শোষণের অবসান ঘটাতে পারল না। গত ২০১৮ সালে মানুষের উদ্ভাবন ক্ষমতার আবারো এক প্রমাণ পাওয়া গেল নিরাপদ সড়কের জন্য কিশোরদের আন্দোলনে। পুলিশ যা পারেনি, তারা সেটাই করে ফেলেছিল। বদলে দিচ্ছিল ট্রাফিকের দৃশ্য।

সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে সড়কে মানুষের নিরাপত্তাহীনতার পেছনকার কারণ উদঘাটন। তারা জানালো কারণ অন্যকিছু নয়, কারণ স্বয়ং রাষ্ট্র। প্ল্যাকার্ডে তারা লিখে দিয়েছিল, ‘রাষ্ট্রের মেরামত চলছে, সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত।’ রাষ্ট্রই যে দায়ী এই সত্যটাকে তারা কেমন করে চিনল? কই বিজ্ঞ বুদ্ধিজীবীরা তো চিনতে পারেননি। তারা নানা কথা বলেছেন, আসল কথা না বলে।

এর দায়িত্ব, ওর ব্যর্থতা, এসব বললেন, বলতেই থাকলেন এবং বলতে থাকবেনও। কিন্তু বলতে পারলেন না মূল ত্রুটিটা কোথায়। বলতে পারলেন না যে ব্যর্থতা রাষ্ট্রের। কিশোররা বলতে পেরেছে, কারণ তাদের দৃষ্টি সরল ও স্বচ্ছ। আসল সত্যটা দেখতে তাদের কষ্ট হয়নি এবং যা দেখেছে তা বলতে তারা ভয় পায়নি।

লেখক: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045959949493408