‘প্রয়াত অধ্যাপক জাকারিয়া স্বপন কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করেনি। তিনি ছিলেন অসম্ভব সাহসী ও দৃঢ় মনোবলের অধিকারী গুণী সংগঠক, চিকিৎসক, শিক্ষক এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক নেতা।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) অডিটোরিয়ামে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়র সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), বিশিষ্ট ডার্মাটোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. এম জাকারিয়া স্বপনের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
প্রধান অতিথি বিএসএমএমইউ’র সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ হাসান বলেন, ‘এই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নে জাকারিয়া স্বপনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে মানুষের উন্নতিতে কাজ করে গেছেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষা, সেবা ও গবেষণাকে বিশ্বমানে উন্নীত করতে পারলে সেটাই হবে তার প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা নিবেদন।’
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘জাকারিয়া স্বপন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক-বাহক। তার চরিত্রের সবচেয়ে বড় গুণ, তিনি ছিলেন অসম্ভব সাহসী, গুণী শিক্ষক ও চিকিৎসক। তার চরিত্রের অন্যতম মাধুর্য হলো, সিনিয়রদের প্রতি তিনি ছিলেন সব সময়ই শ্রদ্ধাশীল।’
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, ‘জাকারিয়া স্বপন আজীবন চিকিৎসক ও চিকিৎসা পেশার উন্নতি ও কল্যাণে কাজ করে গেছেন।’
বিশেষ অতিথি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘দৃঢ় মনোবলের অধিকারী জাকারিয়া স্বপন যা বিশ্বাস করতেন, তাই বলতেন এবং শেষ পর্যন্ত নিজের বিশ্বাসের প্রতি অটল থাকতেন।’অন্য বক্তারা প্রয়াত জাকারিয়া স্বপনের বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক বিশেষ করে তার সাংগঠনিক, চিকিৎসাসেবামূলক ও শিক্ষামূলক কর্মকা-সহ রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে স্মৃতিচারণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অডিটোরিয়ামের নামকরণ তার নামে করার আহ্বান জানান।
স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন। অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু।
বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান এবং প্রয়াত জাকারিয়া স্বপনের পরিবারের পক্ষে অধ্যাপক একিউএম সিরাজুল ইসলামসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও সকল পর্যায়ের কর্মচারী প্রতিনিধিরা।
স্মরণসভা পরিচালনা করেন বিএসএমএমইউয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল হান্নান। প্রয়াতের জীবনী পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ।
স্মরণসভার শুরুতে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দুপুরে বিএসএমএমইউয়ের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ও বিকালে পরিবারের পক্ষ থেকে তার বিদেহি আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।