শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে একজন উপসচিব মো. ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে। গত ৩০ আগস্ট সরকারি বরিশাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ষোড়শ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার হলে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগের বিষয়ে গত ২ ও ৩ সেপ্টেম্বর দৈনিক শিক্ষার পক্ষ থেকে বরিশালের ডিসি অজিয়র রহমানের যোগাযোগ করা হলেও তিনি অভিযোগ নাকচ করে দেন। উপসচিব ফরহাদও দাবি করেন বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি। তিনি মন্ত্রণালয় থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে পরীক্ষা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।
দৈনিক শিক্ষার পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে সরকারি বরিশাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মেজর সাহিদুর রহমান মজুমদার বলেন, উপসচিব মো: ফরহাদ হোসেন আমাদের না জানিয়ে এখানে [পরীক্ষা কেন্দ্রে] এসেছেন। উপসচিব কেন্দ্রে এসেছেন, আর সেটা আমরা টের পাইনি। তিনি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পরীক্ষা কক্ষ থেকে অভিযোগ আসতে থাকলে আমি বাধ্য হয়ে তাকে [উপসচিবকে] কক্ষ থেকে সরিয়ে দেই। বিষয়টি বরিশালের জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন আকারে দেয়া হয়েছে। একজন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কারও করেছেন বলে জানান অধ্যক্ষ।
গত ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। সারাদেশের ১১ লাখ ৭৬ হাজার প্রার্থী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। গত ২৮ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা এক আদেশে সরকারি কলেজ শাখার উপসচিব ফরহাদ হোসেন বরিশাল জেলার শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পান।
৩০ আগস্ট শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত স্কুল পর্যায় ও স্কুল পর্যায়-২ এর এবং বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কলেজ পর্যায়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে সকাল ও বিকাল মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ৬০০ পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। বিকেল ৩টায় ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হলে কাউকে না জানিয়েই হঠাৎ করে উপস্থিত হন উপসচিব (সরকারি কলেজ-১) ফরহাদ। এ সময় তার সাথে ছিলেন বরিশাল জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী প্রোগ্রামার সাইফুল ইসলাম। কেন্দ্রে গিয়ে অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করেন ফরহাদ ও সাইফুল।
এই বিষয়ে বরিশাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার আল মামুনের সাংবাদিকদের জানান, ‘বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত ডিসি স্যার বলতে পারবেন।’
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার সাথে বরিশালে ডিসি ও ম্যাজিস্ট্রেটের কথা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কেও জানান বলে জানা যায়। এরপর ওই ডিসিকে পুরো ঘটনার প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উধ্বতন কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কেও জানানো হয়েছে। আমিও জানি। ডিসির কাছ থেকে প্রতিবেদন পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’