যশোরের মনিরামপুর উপজেলার গৌরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় দুই নারী সহকর্মী ও পিয়নের হাতে লাঞ্ছিত শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত হলেও কোনো ফলাফল না দেখায় স্থানীয়দের মধ্যেনানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
লাঞ্ছনার শিকার একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু শাহাদাৎ মারুফকে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে ডেপুটেশনে দেয়া হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিদ্যালয়ে বহাল তবিয়তে রেখে নিরাপত্তার অযুহাত দেখিয়ে একজন শিক্ষককে এ পদে দেয়া অসম্মানজনক হিসেবে দেখছেন অনেকে। তাকে এখন প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও রিসোর্স সেন্টার দুই অফিস সামলাতে হচ্ছে।
জানা যায়, উপজেলার গৌরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আবদুল করিম, দুই নারী সহকারী শিক্ষক মর্জিনা খাতুন ও রিজিয়া খাতুন এবং নৈশ প্রহরী নিয়ম নীতি অমান্য করে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান চালান। স্কুলে আগমন-প্রস্থানের তোয়াক্কা করেন না তারা। স্কুলের পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত সময়ের আগেই শুরু করা সহ প্রধান শিক্ষক স্কুলে এসেই কাজের অজুহাত দিয়ে চলে যান।
এ নিয়ে একই স্কুলের শিক্ষক মারুফ সহকারী শিক্ষা অফিসার হায়দার আলীকে অবহিত করেন। ঘটনার সত্যতা পেয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিমকে বকাঝকা করলে তিনি শিক্ষক মারুফ হাসানের উপর ক্ষিপ্ত হন। এরই জের ধরে গত বুধবার (৮ আগস্ট) প্রধান শিক্ষকের প্রত্যক্ষ মদদে পরিকল্পনা মাফিক আওয়াজ বাইরে না যাওয়ার জন্য নৈশ প্রহরী ও দুই সহকারী নারী শিক্ষক আবু শাদাৎ মারুফ হাসানকে স্কুল ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করাসহ ঘরের সিলিং ফ্যান এবং পানি তোলার মটর অন করে মারধর করেন।
ঘটনা জানাজানি হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় অভিভাবকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। পুলিশের উপস্থিতিতে ওই দুই শিক্ষক স্কুলে আসে। গত ১২ আগস্ট সহকারী শিক্ষা অফিসার হায়দার আলী ও আনিচুর রহমান ঘটনার তদন্ত করেন। কিন্তু একমাস পার হলেও আজও তদন্ত প্রতিবেদন আসেনি।
সহকারী শিক্ষক আবু শাহাদাৎ বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ তাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। তার কষ্ট, হামলার সাথে জড়িতদের কিছু হলো না।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিরা খাতুন বলেন, তদন্তের দুই দিন পরই প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়ের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। কেন দেরি হচ্ছে তা স্যারই ভাল বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে জানতে যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে বার বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।