এ কেমন মা বাবা! - দৈনিকশিক্ষা

এ কেমন মা বাবা!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দ্বিতীয় শ্রেণির মেধাবী ছাত্র মো. মাহিম হোসেন (৮)। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান মাহিম। এই বয়সের শিশুরা থাকবে বাবা-মায়ের অনেক আদুরে। কিন্তু মাহিমের বেলায় হল উল্টো। প্রতিদিনই বাবা-মা দুজনের হাতেই তাকে নির্যাতনে শিকার হতে হতো। 

 মো. মাহিম হোসেন

এমন নিষ্ঠুর বাবা-মা হলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপার পৌর এলাকার কবিরপুরের বেসরকারি সংস্থা আশা কার্যালয়ের অফিস সহকারী মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী মিরা খাতুন। নির্যাতিত মাহিম হাবিবপুর সানু কিন্ডারগার্টেনের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। মাহিম এবার কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন বৃত্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ঝিনাইদহ জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। 

প্রতিবেশীরা জানায়, দেড় বছর ধরে এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিশুটি। সর্বশেষ সোমবার দুপুরে শিশুটির ওপর নির্যাতন সইতে না পেরে প্রতিবেশীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং বাবা-মাকে গণপিটুনি দেয়। এরপর অবস্থা বেগতিক হলে সন্তান রেখে তারা আত্মগোপনে চলে যায়। পরে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেপে ভর্তি করা হয়। এরপর এনজিও আশা কার্যালয়ের শাখা ব্যবস্থাপক বজলুর রহমান শিশুটিকে দায়িত্ব নিয়ে চিকিৎসা শেষে অফিসে নিয়ে আসেন।

প্রতিবেশীরা মাহিমের ওপর অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন। কখনও মুখে বালিশ চেপে, আবার কখনও মুখ বেঁধে নির্যাতন করা হয় তাকে। নির্যাতনের সময় থাকে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ। শরীরের প্রতি ইঞ্চিতে নির্যাতনের দাগ। একজন হাঁপিয়ে উঠলে আরেকজন মারেন। একটু শব্দ করলে গরম খুন্তি চেপে ধরেন মুখে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকেও শুনতে হয় অকথ্য গালাগাল। 

মতিউরের প্রতিবেশী শিরিনা নাহার বলেন, মতিউর হাবিবপুর চরে ভাড়া বাসায় থাকে। প্রতিবেশী হলেও শিশু সন্তানের ওপর নিষ্ঠুর বাবা-মার এ নির্যাতন সহ্য করা দায়। দেড় বছরের এমন কোনো দিন নেই যেদিন শিশুটির ওপর তারা নির্যাতন করেনি। নির্যাতনের সময় কান্না যেন বাইরে না যায় সে জন্য মুখে কাপড় বেঁধে নেয়। আবার কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে তারা। শিশু মাহিম তাদের সন্তান কি-না এ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন শিরিনা নাহার।

কবিরপুরের আশা অফিসে বাবা-মার নির্যাতনের শিকার মাহিমকে দেখতে গেলে সেও নির্যাতনের কথা জানায়।

আশার শাখা ব্যবস্থাপক বজলুর রহমান বলেন, মতিউর তার অফিসের অফিস সহকারী। বাবা-মা হয়ে কীভাবে শিশুটির ওপর এমন নির্যাতন করতে পারে- এ ঘটনায় তিনি হতবাক। 

তিনি আরও বলেন, তারা কয়েকবার ডেকে সতর্ক করেছেন। সোমবার নির্যাতনের পর প্রতিবেশীরা শিশু মাহিমকে নিয়ে এলে তিনি দায়িত্ব নিয়ে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আবার অফিসে নিয়ে আসেন।

সানু কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক সালমা খাতুন বলেন, এমন বাবা-মার বিচার হওয়া উচিত। প্রতিদিন মাথায় অথবা শরীরে কোনো না কোনো আঘাতের চিহ্ন থাকে মাহিমের। জিজ্ঞাসা করলে তার বাবা-মা প্রতিবেশীর সন্তানদের দোষ দিয়ে নির্যাতন ঢাকার চেষ্টা করে।

শৈলকুপা থানার ওসি কাজী আইয়ুবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

শিশুটির বাবা-মায়ের সাথে কথা বলার জন্য তাদের বাড়িতে এ প্রতিবেদক গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। আশার শাখা ব্যবস্থাপক বজলুর রহমান বলেন, ঘটনার পর থেকে বাবা-মা পলাতক।

নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061070919036865