দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয়ের কারণে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে কলেজটি। এ বছরও কলেজটির মোট পরীক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেকই ফেল করেছে।
পিরোজপুর জেলা শহরে ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজটি স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই সুনামের সঙ্গে পিরোজপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে। এ কলেজ থেকে পাস করা অনেক শিক্ষার্থী দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানেও দেশ বিদেশে অনেকেই ভালো অবস্থানে আছেন।
কলেজটির এই সফলতার কারণে সেখানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স খোলা হয়েছে। তৈরি হয়েছে অনেকগুলো বহুতল ভবন। পাশাপাশি রঙ-বেরঙের ফুলের গাছ ও মনোরম পরিবেশ দিয়ে সাজানো হয়েছে কলেজটি।
তবে প্রায় এক যুগ ধরে ধারাবহিকভাবে এই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে ব্যাপকভাবে ধস নেমেছে। প্রতি বছরই পাসের প্রায় সমসংখ্যক পরীক্ষার্থী ফেল করছে। বুধবার (১৭জুলাই) প্রকাশিত ফলাফলেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
এ বছর এই কলেজ থেকে ৬৪৯ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে মাত্র ৩৬৯ জন। পাসের হার ৫৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ জন।
অপরদিকে নিজেদের সুনাম ধরে রেখেছে পিরোজপুর সরকারি বালিকা কলেজ। এই কলেজ থেকে এ বছর ৬১৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৯২ দশমিক ৫০ শতাংশ ছাত্রী পাস করেছে। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ জন।
পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী, স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও শিক্ষানুরাগীদের অভিযোগ, কলেজে কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায়, পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এমন বিপর্যয় হয়েছে।
তবে কলেজটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবি কলেজে নিয়মিত ক্লাস হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো কলেজে উপস্থিত না হওয়ায়, তাদের ঠিকমতো পাঠদান করানো যাচ্ছে না। তাই এইচএসসি পরীক্ষায় ফেলের হারও বেশি।
তবে ফেলের হার কমিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে জানান কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া।
সচেতন মহল আশা করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষানুরাগী ও কলেজ কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে কলেজটি তার পুরনো ঐহিত্য ফিরে পাবে।