মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার একই নামে দুইটি স্কুল চলছে। দুইটি প্রতিষ্ঠানই ননএমপিও। প্রতিষ্ঠান দুটির ব্যানবেইসের কোড ও পাসওয়ার্ডও এক। তাই, দুই স্কুলের মোট ৪৪ জন শিক্ষক প্রধানমন্ত্রীর অনুদান পেতে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ফলে, অনুদানের টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষকরা।
জানা গেছে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মাথাভাঙ্গা, নওদা মটমুড়া, চরগোয়ালগ্রাম, মোমিনপুর গ্রামের আদ্যোক্ষর নিয়ে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় এমজিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়। অবহেলিত জনপদে শিক্ষার বিস্তারে এলাকার কয়েকজন শিক্ষানুরাগীর আর্থিক সহযোগিতা ও জমিদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠে। ৯৭ শতাংশ জমির ওপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়। প্রায় ১৭-১৮ বছর পর স্কুল পরিচালনা পরিষদ ও শিক্ষক মণ্ডলির পরামর্শ ও সিদ্ধান্তক্রমে প্রতিষ্ঠানটি গ্রামের শেষ প্রান্ত ফাঁকা মাঠ থেকে গ্রামের মধ্যে স্থানান্তর করা হয়। শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলায় বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় আড়াইশ’ জন। তবে স্কুলটির শিক্ষকদের অভিযোগ বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র ডিগ্রি পাস করে বেকারত্ব দূর করতে পুরাতন স্কুলটি মেরামত করে একই নামে চালাতে থাকে।
স্থানান্তরিত হওয়া এমজিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল হুদা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, স্কুল পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষকদের সিদ্ধান্তে আগের সব শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ে ৫৩ শতাংশ জায়গায় অবকাঠামো গড়ে স্কুল শুরু করি। আমাদের অবকাঠামো ও শিক্ষার মান যাচাই করে শিক্ষা অধিদপ্তর ইতোমধ্যে স্থান পরিবর্তন ও একাডেমিক প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছেন। এই অনুমোদন বাতিলের জন্য নতুনভাবে নাম মাত্র ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে গড়ে তোলা স্কুলটির প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন ও শিক্ষকরা গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৩ মাসের স্থগিত চেয়ে রিট আবেদন করেন। তিনি আরও জানান, এলাকার কয়েকজন স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রে এমপিওভুক্ত হতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, বর্তমানে একই নামে প্রতিষ্ঠান হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রের রেষারেষিতে বিদ্যালয় এমপিও পেতে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া নন-এমপি শিক্ষকদের অনুদানের টাকা আসলে জানতে পারি ১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বদলে ৪৪ জন তালিকাভুক্ত হয়েছে। তাই, আমরা অনুদানের টাকা তুলতে পারিনি।
আগের অবস্থানে থাকা এমজিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। প্রতিপক্ষকে ৩ মাসের মধ্যে রিটের জবাব দিতে বলেছে। এছাড়া শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাশার বলেছেন মামলা ও তথ্য বিভ্রান্তি থাকায় কাউকে টাকা দেয়া হবে না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাসার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, অনলাইনে কোড ও পাসওয়ার্ড এক থাকায় ২টি প্রতিষ্ঠান বার বার শিক্ষকের নাম তালিকায় দেয়া হয়েছে। তাই, নামের তালিকা ১৪ জনের জায়গায় ৪৪ জন এসেছে। এরকম অসঙ্গতি পাওয়ায় সরকারি অনুদানের টাকা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।