একই সূতায় গাঁথা নটর ডেম কলেজ ও অধ্যক্ষ টি এ গাঙ্গুলী - দৈনিকশিক্ষা

একই সূতায় গাঁথা নটর ডেম কলেজ ও অধ্যক্ষ টি এ গাঙ্গুলী

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ভালো কলেজ হিসেবে ঢাকার নটর ডেম কলেজের সুনাম আছে। এই কলেজ বাংলাদেশে পড়ানো শুরু করে ১৯৫৫ সালে। বর্তমান নটর ডেম কলেজ প্রথমে সেন্ট গ্রেগরিজ কলেজ নামে লক্ষ্মীবাজারে কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তী সময়ে রাজধানীর মতিঝিলে নটর ডেম কলেজ নামে প্রতিষ্ঠানটি অদ্যাবধি শিক্ষা বিস্তার করে যাচ্ছে। দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। নিবন্ধটি লিখেছেন জেমস আনজুস।

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নটর ডেম কলেজের অধ্যক্ষ হন ফাদার থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলী। এক শ বছর আগে আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

নটর ডেম কলেজের প্রথম বাংলাদেশি অধ্যক্ষ ফাদার থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলী। ছবি: সংগৃহীত

শুরুতে বিদেশি মিশনারিরা এ কলেজ পরিচালনা করতেন। ‘পবিত্র ক্রুশ সংঘ’ নামে একটি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের পুরোহিত সংঘ বিভিন্ন দেশে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে থাকে। তাদের মাধ্যমেই এ দেশে নটর ডেম কলেজ স্থাপিত। ঢাকার নটর ডেম কলেজের প্রথম বাংলাদেশি অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ফাদার থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলী। সবার কাছে তিনি টি এ গাঙ্গুলী নামে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা ‘আর্চ বিশপ’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের একজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, জীবন গঠনকারী শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক হিসেবে তাঁর সুনাম ছিল। অত্যন্ত বিনম্র, উদার, কঠোর পরিশ্রমী ও ধৈর্যশীল এই মানুষের জীবন ছিল ক্ষণস্থায়ী। তবু বহু মানুষের হৃদয় তিনি স্পর্শ করেছিলেন। কলেজে তিনি যুক্তিবিদ্যা পড়াতেন। দর্শনশাস্ত্রে ছিল তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য।

১৯৫৮ সালে টি এ গাঙ্গুলীকে নটর ডেম কলেজের অস্থায়ী ভাইস প্রিন্সিপাল নিযুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে অস্থায়ী অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপিরিয়রের দায়িত্বও দেওয়া হয়। সে বছরই তাঁকে প্রধান নিয়ম–শৃঙ্খলা রক্ষাকারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরের বছর তিনি ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নটর ডেম কলেজের অধ্যক্ষ হন। শিক্ষা, বুদ্ধিমত্তা ও দূরদর্শিতার গুণে তিনি রচনা করেন নতুন এই ইতিহাস।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ধর্মীয় সোনার ক্রশ, সোনার চেইন এবং ২০ লাখ টাকা তুলে দেন টি এ গাঙ্গুলী। ছবি: সংগৃহীত

১৯২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন টি এ গাঙ্গুলী। ১৯৪০ সালে বান্দুরা হলি ক্রশ উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন (বর্তমানে এসএসসি) পাস করেন। পরে ভারতে লেখাপড়া শেষে ১৯৪৭ সালে তিনি আমেরিকার নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতে যান। সেখানে প্রথমে দর্শনশাস্ত্রের ওপর বিএ ডিগ্রি এবং এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫১ সালে দর্শনশাস্ত্রের ওপর তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ভারত উপমহাদেশের একজন আধ্যাত্মিক সাধকের জীবন ও সাধনা নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

দেশের উন্নয়নচিন্তা তাঁকে সূদুর আমেরিকা থেকে দেশে ফিরিয়ে আনে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর টি এ গাঙ্গুলী খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে যান। মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ পুনর্গঠনের সময় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে তুলে দেন একটি ধর্মীয় সোনার ক্রশ, সোনার চেইন এবং ২০ লাখ টাকা। ১৯৭৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর মাত্র ৫৭ বছর বয়সে তিনি চলে যান না–ফেরার দেশে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061030387878418