এবার মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৯ হাজার ১০০ প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়ে একজন শিক্ষার্থীও পাশ করেনি এমন প্রতিষ্ঠান ৪৮টি। এর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিল একজন করে। অর্থাত্ একজন পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও সে ফেল করেছে। এবার সারাদেশে ১০৪টি প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীই ফেল করেছে। এর মধ্যে মাদ্রাসা ৪৮টি, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ৫০টি। বাকি ছয় প্রতিষ্ঠান সাধারণ বোর্ডের। এবারে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সার্বিক পাশের হার বেশি হলেও মাদ্রাসার চিত্র ঠিক উলটো। গতবার মাদ্রাসায় ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ পাশ করলেও এবার পাশ করেছে ৮২ দশমিক ৫১ শতাংশ। এ বছর মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয় ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮১৫ জন, গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে ২ লাখ ২৮ হাজার ৪১০ জন। বুধবার (৩ জুন) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, অতীতে প্রায় প্রতি বছরই মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের পাশের হার তুলনামূলক অন্য বছরের চেয়ে বেশি ছিল। ২০১৫ সালে এই বোর্ডে পাশের হার ছিল ৮৮ দশমিক ২২ শতাংশ। মাদ্রাসার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি বোর্ড ও অধিদপ্তরের নজরদারির অভাবে এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তথ্য অনুযায়ী, এবার ঠাকুরগাঁওয়ের গেদুরা ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় দাখিল মাদ্রাসা থেকে একজন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল, সেও ফেল করে। একই জেলার রাণীশংকৈলের সি এস দাখিল মাদ্রাসা, দিনাজপুরের খানসামার মারগাঁও ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, জামালপুরের সূর্যনগর বসুন্ধরা আদর্শ মাদ্রাসা, মুক্তাগাছা বিন্যাকুড়ি দাখিল মাদ্রাসা, পটুয়াখালীর বেগম রাবেয়া ইয়াছিন বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, নাটোরের শেখপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, বাগাতিপাড়া থেকে একজন করে পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েও ফেল করে। এছাড়া ২২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই ফেল করে ভোলার দৌলতখানের জয়নগর আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা থেকে। একই সংখ্যক পরীক্ষার্থীও সবাই ফেল করে যশোরের চৌগাছার মাকাপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে। ২০ জন পরীক্ষার্থী নিয়ে ফেল করে রাজশাহী ও রংপুরের আরো দুটি মাদ্রাসা। দুই জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে দুই জনই ফেল করে চারটি মাদ্রাসার। তিন জন পরীক্ষার্থী নিয়ে ফেল করে পাঁচটি মাদ্রাসা।
মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কামাল উদ্দিন বলেন, অতীতে যেভাবে শতভাগ ফেল করা মাদ্রাসার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এবারও তাই হবে। প্রথমে এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। অতীতে ফেল করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংশোধনের নোটিশ দেওয়াও হয়েছিল বলে তিনি জানান। বোর্ডের চেয়ারম্যান কায়সার আহমেদ বলেন, এক সময়ে যেনতেনভাবে মাদ্রাসা অনুমোদন পেয়েছে সে কারণেই এই অবস্থা হয়েছে। তিনি জানান, শূন্য পাশ করা এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি ও পাঠদানের অনুমতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের আদেশ বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করা হবে।