ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিছু ফল-ফুলের চারা লাগিয়ে বরাদ্দ ২০ লাখ ২ হাজার টাকার প্রায় পুরোটাই লুটে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে শহরজুড়ে ছি ছি রব ওঠে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছর প্রথমদিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে বৃক্ষরোপণে ২০ লাখ ২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ঢাকার গণপূর্ত বিভাগের আরবরিকালচারের তত্ত্বাবধানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। নামমাত্র কাজ করার পরও সিকিউরিটি মানি হিসেবে কিছু টাকা রেখে ঠিকাদারকে ১৭ লাখ ২ হাজার ৩১৯ টাকাই পরিশোধ করে ফরিদপুর গণপূর্ত বিভাগ।
সূত্র বলছে, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পে বৃক্ষরোপণে ২০ লাখ ২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্পের কাজের মধ্যে ছিল গাছ লাগানোর উপযোগী মাটি সরবরাহ, সার সংগ্রহ ও রোপণ স্থানে প্রয়োগ, গাছের চারা ক্রয়, ঘাস কাটার মেশিনসহ যন্ত্রাংশ ক্রয়। তবে হাসপাতাল চত্বরে দেখা যায়, হাতে গোনা কিছু ফুল-ফলের চারা ছাড়াও শ’দেড়েক কদম, কৃষ্ণচূড়া, নারকেলের চারা লাগানো হয়েছে। যন্ত্রাংশ কেনার কথা থাকলেও তার আলামত মেলেনি। স্থানীয়রা বলছেন, যদি ৩শ’টি চারাও লাগানো হয় তাতে প্রতি চারা রোপণে ব্যয় ৫ হাজার ৬৭৩ টাকা, যা অবিশ্বাস্য, এমন দুর্নীতি মেনে নেয়া যায় না।
ফরিদপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল বলেন, আমি রাজবাড়ীতে কর্মরত, অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি ফরিদপুরে। আমার জানামতে, বৃক্ষরোপণ প্রকল্পটি গণপূর্ত বিভাগের আরবরিকালচার, ঢাকার তত্ত্বাবধানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কাজটি ঢাকা অফিসের কর্মকর্তারা দেখভাল করছেন। ফরিদপুর অফিস এটি দেখভাল করেনি। শুধু ফরিদপুর থেকে বিল দেয়া হয়েছে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এসএম খবিরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক যিনি ছিলেন বিষয়টি তিনি-ই ভালো বলতে পারবেন। আমার কিছু জানা নেই। গাছের চারা লাগানোর কাজটি গণপূর্ত বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে। প্রকল্প পরিচালক কাজটি বুঝে নিয়েছেন। তারাই ভালো বলতে পারবেন।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা সাংবাদিকদের বলেন, আমি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে যোগ দিই। গাছের চারা লাগানোর বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ওই প্রকল্পের পরিচালক আমি ছিলাম না। প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ। তবে হাসপাতালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।