শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেহাবি) জন্য ২ হাজার ৬৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) প্রকল্পটি ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি থেকে শুরু হবে। ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে বাস্তবায়ন হবে। বুধবার (০৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া সভায় অনুমোদন পাওয়া শিক্ষাভিত্তিক প্রকল্পগুলো হলো, শহীদ কামরুজ্জামান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট প্রকল্প, ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট প্রকল্প, নির্বাচিত ৯টি সরকারি কলেজের উন্নয়ন, গোপালগঞ্জের শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয় ও ঢাকা সূত্রাপুরের শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং চট্টগ্রাম-খুলনা-রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন প্রকল্প।
শহীদ কামরুজ্জামান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, মান্দা প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ৮২ কোটি ১৪ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পটির বর্তমান ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। মেয়াদও বাড়ছে এক বছর অর্থাৎ ২০২০ খ্রিস্টাব্দের জুন পর্যন্ত।
দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধন করা হচ্ছে ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিটিউট প্রকল্প। প্রথম সংশোধিত ব্যয় ৭২ কোটি ৯২ লাখ থেকে ৩২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে এখন মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। মেয়াদ বাড়ছে ২০২০ খ্রিস্টাব্দের জুন পর্যন্ত এক বছর।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ২৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ২৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ২৪ হাজার ৮৫৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ৫৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার ৮৪০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বৈদেশিক সহযোগিতা হিসেবে পাওয়া যাবে।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, সভায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পেরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি থেকে ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
‘জয়িতা ফাউন্ডশনের সক্ষমতা বিনির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ২৮ হাজারের বেশি নারীকে সম্পৃক্ত করে নারী উদ্যোক্তাদের বহুবিধ ব্যবসা উদ্যোগের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জয়িতা ফাউন্ডেশন।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্প, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনা, বহাদ্দারহাট বাড়ই পাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন, চা বাগান কর্মীদের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণ, ১১টি আধুনিক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয় স্থাপন, মাদারীপুরে সরকারি অফিসগুলোর জন্যবহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া র্যাব ফোর্সের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন, সোনাগাজী ৫০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, বীজ প্রত্যয়ন কার্যক্রম জোরদারকরণ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ বিশেষ ধরনের পন্টুন নির্মাণ ও স্থাপন, বৃহত্তর রাজশাহী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বৃহত্তর নোয়াখালী অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন এবং বাঙ্গালী-করতোয়া-ফুলজোর-হুরাসাগর নদী সিস্টেম ড্রেজিং-পুনঃখনন ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্পও একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।
