একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির খেলা - দৈনিকশিক্ষা

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির খেলা

মাছুম বিল্লাহ |

আমাদের শিক্ষানীতিতে যদিও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তর ধরা হয়েছিল, সেটি এখনও কার্যকরী হয়নি। সময় পেরিয়ে গেছে নয় বছর। তাই এসএসসি ও সমমান পাস করা শিক্ষার্থীদের পরবর্তী দুই ক্লাসে পড়ার জন্য নামতে হচেছ ভর্তিযুদ্ধে। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছে। এবার পূর্বের নিয়মকানুনের সাথে কিছু নতুন বিষয় সংযোজিত হয়েছে।  পূর্বের বছরের মতো এবারও সর্বোচ্চ দশ কলেজে আবেদন করার সুযোগ রাখা হয়েছে। পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রেীয়ভাবে অনলাইন বা এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে বণ্টন করা হবে কলেজগুলো। এবার শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকবে আড়াইশ কলেজ ও মাদরাসা। শিক্ষার্থীদের আবেদন সংখ্যা এবং পাসের হার বিবেচনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও শতাধিক কলেজ রয়েছে যেগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয়। এছাড়াও সারা দেশে অর্ধশত মাদরাসা শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায়। এসব কলেজ মাদরাসায় স্ব স্ব বিভাগের জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা ভীড় করলে সবার সংস্থান হবেনা।

১লা জুলাই শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে। এটি একটি ভাল উদ্যোগ যে, দেশের সমস্ত কলেজে একই দিন ক্লাস শুরু হবে। এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ভর্তি হয় সাধারণ কলেজগুলোতে। কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে আসনের কোন সংকট না থাকলেও মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের সংকট তীব্র। এমনকি জিপিএ-৫ পেয়েও পছন্দের কলেজে ভর্তি হওয়ার নিশ্চয়তা থাকছেনা। তবে আন্ত:শিক্ষা বোর্ড এবার মান নিয়ন্ত্রনের জন্য তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে কলেজগুলোকে। যেসব কলেজে ৬৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে এবং পাসের হার ৭০ শতাংশের বেশি সেগুলোকে ‘এ’ ক্যাটাগরির, যেসব কলেজে সর্বোচ্চ ৬০০ শিক্ষার্থী রয়েছে এবং পাসের হার ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ সেগুলো ‘বি’ ক্যাটাগরির এবং ‘সি’ ক্যাটাগরিতে পড়েছে ৬০০ এর নীচে শিক্ষার্থী সংখ্যা এবং ৫০ শতাংশের নীচে পাসের হার। ক্যাটাগরি করার মাধ্যমে দেখার সুযোগ থাকবে কোন কলেজগুলো নিচ থেকে উপরে উঠে আসছে আবার কোনগুলো ওপর থেকে নীচে নামছে । ভাল  করতে না পারা কলেজগুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। আবার কিছু কলেজ নিজ উদ্যোগেই ভাল হওয়ার প্রচেষ্টা চালাবে।

আন্ত:শিক্ষাবোর্ড সভাপতি এবং ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘সি’ ক্যাটাগরির কলেজগুলোতে সাধারণত শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে চায়না। ৬০০ শিক্ষার্থীর কলেজগুলোক স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়েছে। এর কম শিক্ষার্থী থাকলে ঐসব কলেজগুলো পরিচালনা করতে অনেক অসুবিধা হয়।

ভর্তির সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে ঢাকা মহানগরের কয়েকটি কলেজে। হাতে গোনা কয়েকটি কলেজে শিক্ষার্থীরা ভীড় করে বেশি। কিন্তু এসব কলেজগুলো ছাড়াও ঢাকা বোর্ডের অধীনেই অন্য শহরে ভাল কলেজ আছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কলেজগুলোকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ‘এ’ ক্যাটাগরির কলেজ রয়েছে ৮২টি আর ‘বি’ ক্যাটাগরির কলেজ আছে ৪৫ টি। সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের বাইরে মাদরাসা  এবং কারিগরি বোর্ড থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরাও ভর্তির আবেদন করে। ঢাকায় ‘এ’ ক্যাটাগারির  কলেজগুলোতে সর্বোচ্চ আসন সংখ্যা ৫৭ হাজার আর ‘বি’ ক্যাটাগরির কলেজগুলোতে আছে ৫২ হাজার। অতীতে দেখা গেছে জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী আবেদনে বড় বড়  কলেজ পছন্দের তালিকায় রাখে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এত ভাল ফল করেও অনেকে প্রথম দফায় ভর্তির সুযোগ পায়না। এটি মূলত তাদের পছন্দের কারণে হয়ে থাকে। আর এই কারণেই শিক্ষাবোর্ড ‘এ’ ক্যাটাগরির কলেজের তালিকা প্রকাশ করেছে। এক সময় ঢাকা বোর্ডের  অধীনে ১৩১০টি কলেজ ছিল। নানা অনিয়মের কারণে কিছু কলেজ বোর্ড বন্ধ করে দিয়েছে আবার কিছু কিছু কলেজ শিক্ষার্থী না পাওয়ার কারনে বন্ধ হয়ে গেছে। 

গতবারের ভর্তির তথ্য থেকে জানা যায় যে, ঢাকা বিভাগে ৭৫ টি কলেজে , রংপুর বিভাগে ৩২ টি, বরিশালে ১৪ টি, রাজশাহীতে সাতটি, চট্টগ্রামে ১৯ টি, খুলনা বিভাগে ১৩ টিঁ এবং সিলেট বিভাগে ২৩ কলেজে সর্বোচ্চ ভর্তির আবেদন জমা পড়েছিল। এই কলেজগুলের আসন সংখ্যা ৬০ থেকে ৭০ হাজারের বেশি হবেনা। তার অর্থ দাড়াচ্ছে যে, জিপিএ-৫ পেয়েও সকল শিক্ষার্থীর পক্ষে মানসম্মত কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকছেনা। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৯৪ জন। জিপিএ ৪ থেকে ৫ এর মধ্যে আছে পাঁচ লাখ ১৫ হাজার ৮১৮ জন। জিপিএ ৩.৫ থেকে ৪ এর মধ্যে আছে চার লাখ আট হাজার ৬৭৯ জন। জিপিএ ৩ থেকে ৩.৫ এর মধ্যে আছে চার লাখ আট হাজার ৯৭১জন। দেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি উপযোগী কলেজের সংখ্যা ৪ হাজার ৬০০ টির বেশি। এগুলোতে আসনসংখ্যা প্রায় ২১ লাখ। সারাদেশে ৮ সহস্রাধিক কলেজ ও মাদরাসায়  ভর্তিযোগ্য আসন আছে ২৯ লাখের মতো। এর মধ্যে মাদরাসায় ৮ লাখ। ঢাকা বোর্ডে আসন আছে ৬ লাখ। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আলাদাভাবে ভর্তির আবেদন গ্রহণ করবে। মাদরাসা ও কারিগরিসহ দশটি শিক্ষা বোর্ড থেকে এবার ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৫ জন শিক্ষাথী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে। পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাধারণত এক শতাংশ একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়না। তবে এক শতাংশ পুরনো শিক্ষার্থী আবার ভর্তির আবদেন করে। অনেক শিক্ষার্থী আবার মাদরাসা থেকে পাস করে সাধারণ কলেজে ভর্তি হয়। আবার সাধারণ স্কুল থেকে পাস করা অনেকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও কারিগরি বোর্ডের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়। সেই হিসেবে পাস করা শিক্ষার্থীর চেয়েও যেহেতু সাড়ে ১১ লাখ আসন বেশি আছে তাই অনেক প্রতিষ্ঠানে আসন খালি থাকবে। আবার অন্যান্য ধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার কারণেও আরও কমপক্ষে দুই লাখ আসন শুন্য থাকবে। সবমিলে অন্তত ১৩ লাখ আসনই এবার খালি থাকবে। ঢাকা সিটিতে দেড়শোর মধ্যে মানসম্পন্ন কলেজ হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টি। শিক্ষার্থীরা এগুলোতেই ভর্তি হতে চায়। এই কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা ২০ হাজারের মতো। গত দুই বছরে কলেজ অনুমোদনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু এর আগে বহু কলেজকে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।  এগুলো এখন শিক্ষার্থী পাচ্ছেনা। শিক্ষাক্ষেত্রে এই চিত্রটিও ধরা পড়েছে। যত্রতত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেই শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখা যায়না। দেশে জনসংখ্যা অনুপাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বেশি রয়েছে। যে কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন করে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিচ্ছেনা, এমপিও তো দুরের কথা। 

একজন শিক্ষার্থী যখন অনলাইনে একটি কলেজ পছন্দ করবে, সঙ্গে সঙ্গে সফটওয়ার শিক্ষার্থীকে জানিয়ে দেবে তার মেধাক্রম, পাশাপাশি কলেজটিতে বা পছন্দের বিভাগে কত আসন আছে তাও ওয়েবসাইটে থাকবে। মেধাক্রম অনুযায়ী ভর্তি হবে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে চতুর্থ বিষয়ের নম্বর বাদ দিয়ে মেধাক্রম তৈরি করা হবে। আবেদনকারী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরও কয়েকটি দিকে নজর দিবে শিক্ষা বোর্ডগুলো। সেগুলো হচ্ছে, যদি একই সিরিয়ালের আসনের বিপরীতে সমান নম্বরপ্রাপ্ত একাধিক শিক্ষার্থী পাওয়া যায়, তাহলে গণিত, ইংরেজি, বাংলায় কে বেশি নম্বর পেয়েছে সেটা দেখা হবে। এতেও সমান নম্বরধারী হলে বিভাগভিত্তিক বিষয়গুলোতে প্রাপ্ত নম্বর দেখা হবে। বিষয়টি ভর্তি নীতিমালার তিন নম্বর ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। এবার ভর্তি জালিয়াতি রোধ করার জন্য শিক্ষার্থীর আবেদনে বাবা-মার জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের মার্কশীট দেখে আবেদন করিয়ে রাখে। বিশেষ  করে যেসব স্কুলে কলেজ শাখা আছে। আর নীতিমালায়  নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের কলেজ শাখায় ভর্তিতে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা  উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে কলেজ শাখায় কেউ পড়তে না চাইলেও সে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হতো যা এবার না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শিক্ষার্থীরা যাতে কলেজে জিম্মি হয়ে না পড়ে সে জন্য আবেদনে এই নতুনত্ব আনা হয়েছে। একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে একাধিক আবেদন করা যাবেনা।  

গড়ে ৮০ শতাংশ নম্বর পেলেও জিপিএ-৫ আর গড়ে ৯৫শতাংশ নম্ববর প্রাপ্তরাও জিপিএ-৫ ধারী। এ অবস্থায় কোন কলেজে আবেদন করলে ঐ কলেজের আসনের বিপরীতে যদি জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা আবদেন করে তাহলে দেখা যাবে উচ্চ নম্বর প্রাপ্তরাই প্রথম সুযোগ পাবে। কম নম্বর পাওয়া জিপিএ-৫ ধারীরা ভর্তির সুযোগ পাবেনা। তাই তালিকা প্রকাশ করায় শিক্ষার্থীদের পছন্দক্রম করাটা সহজ হবে। ক্যাটাগরি দেখে আবেদন  করলে শিক্ষার্থীদের বিপাকে না পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে আর একটি বিষয় পরিলক্ষিত হচ্ছে যে, আমরা সবাই বলি, জিপিএ-৫ নিয়ে বা নম্বর নিয়ে শিক্ষার্থী বা অভিভাবকগন বেশি মাতামাতি করেন। তার কারণ কিন্তু এটি। নম্বর দেখে ভর্তি, নম্বর দেখে শিক্ষার্থী যাচাই, নম্বর দেখে চাকরি সবকিছুতেই যখন নম্বরপ্রাপ্তিকে অগ্রাধিকার দেয়া হয় তখন শিক্ষা গ্রহন বাদ দিয়ে সবাই নম্বরের পেছনে ছুটবে এটিই তো স্বাভাবিক। 


লেখক: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক, ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচিতে কর্মরত

ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035519599914551