এনটিআরসিএ থেকেই জাল নিবন্ধন সনদটি বৈধ করে নিলেন শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

এনটিআরসিএ থেকেই জাল নিবন্ধন সনদটি বৈধ করে নিলেন শিক্ষক

মুরাদ মজুমদার |

এনটিআরসিএকে রীতিমতো বোকা বানিয়ে জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদের বৈধতা হাসিল করে নিয়েছিলেন নাজমা খাতুন। তিনি পাবনা জেলার বেড়া সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক। নাজমা আক্তার নামে পঞ্চম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এক প্রার্থীর সনদটি মিথ্যা তথ্য ও একটি জাল সনদের সহায়তায় নিজের করে নিয়েছিলেন তিনি। মিথ্যা তথ্য দিয়ে একজন প্রার্থীর সার্টিফিকেটে নিজের ও বাবার নাম বদলে সংশোধিত সনদটিও হাতেও পেয়েছিলেন নাজমা। কলেজ সরকারি হওয়ায় আত্তীকৃত হয়ে সরকারি বেতন ভাতা পাওয়ার আশায় অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন প্রভাষক নাজমা। অবশেষে ধরা পড়েছেন। মিথ্যা তথ্য দিয়ে বৈধতা পাওয়া সনদটি আবারও বাতিল করা হয়েছে। 

দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, পাবনার বেড়া কলেজটি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ আগস্ট সরকারি করা হয়। এরপর কলেজটির হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক নাজমা খাতুন ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত পঞ্চম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার একটি সনদ সংশোধন করার আবেদন করেন। গত বছর করা আবেদনে তিনি তার পিতার নাম উল্লেখ করেন মো. ইয়াজউদ্দিন। যে সার্টিফিকেটটি তিনি সংশোধনের জন্য জমা দিয়েছিলেন তাতে প্রার্থীর নাম উল্লেখ ছিল নাজমা আক্তার, আর পিতার নাম নুরুল হক। 

সনদ সংশোধনের আবেদনে নাজমা খাতুন দাবি করেন, তিনি ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ৫ম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তবে, তার সনদে নিজে প্রার্থীর নাম ও পিতার নাম ভুল এসেছে। আবেদনের সমর্থনে জালিয়াত শিক্ষক নাজমা খাতুন ভোটার আইডি কার্ড, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এনটিআরসিএতে জমা দেন।

তবে, যথেষ্ট যাচাই-বাছাই ছাড়াই গত ৯ জানুয়ারি জাল সনদটি বৈধতা দিয়ে সংশোধিত সনদ ইস্যু করে এনটিআরসিএ। যা ছিল মূলত নাজমা খাতুনের দেয়া মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতেই তৈরি করা একটি বৈধ সনদ। এভাবেই ৫ম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নাজমা আক্তারের সার্টিফিকেটটি হয়ে যায় জালিয়াত নাজমা খাতুনের। নুরুল হকের পরিবর্তে বাবার নামের জায়গায় স্থান পায় মো. ইয়াজউদ্দিন। যাতে রোল নম্বর উল্লেখ ছিল ৪২৪১২৯৪৭। সংশোধিত সনদটি ক্রমিক নম্বর ছিল ৯৩৯৯৩১।

সরকারিকরণের প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতায় প্রজ্ঞাপন জারির দুই বছর পর সরকারি কলেজের শিক্ষকদের আত্তীকরণের জন্য তথ্য যাচাই-বাছাই শুরু হয়।  আত্তীকরণের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নাজমা খাতুনের সার্টিফিকেট যাচাইয়ের জন্য আসে এনটিআরসিএতে।

এনটিআরসিএর একজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, পরবর্তীতে যাচাইয়ের সময় মিথ্যা তথ্য দিয়ে সনদ সংশোধনের বিষয়টি উঠে আসে। এনটিআরসিএর ডাটাবেসে দেখা যায়  ৪২৪১২৯৪৭ রোল নম্বর নিয়ে ৫ম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীর নাম নাজমা আক্তার, যার বাবার নাম মো. নুরুল ইসলাম। ডাটাবেস অনু্যায়ী সনদ প্রিন্ট করা হয়েছিল। কিন্তু নাজমা খাতুন যে সার্টিফিকেটটি দাখিল করে তথ্য সংশোধন করিয়েছেন তাতে বাবার নাম উল্লেখ আছে মো. নুরুল হক। তাই বোঝা গেছে যে সনদ দিয়ে জমা দিয়ে প্রভাষক নাজমা খাতুন সার্টিফিকেট সংশোধন করেছেন তা এনটিআরসিএ দেয়নি বা জাল। নাজমা খাতুন প্রকৃত প্রার্থী না। 

তাই, ৯ জানুয়ারি ইস্যু করা করা নাজমা খাতুনের বৈধতা পাওয়া অবৈধ সংসদ বাতিল করেছে এনটিআরসিএ। বাতিল করা সনদ কোন কাজে ব্যবহার করা হলে তা ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে বলেও জানিয়েছেন এনটিআরসিএ। আর বিষয়টি পাবনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বেড়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানানো হয়েছে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত - dainik shiksha ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল - dainik shiksha শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল - dainik shiksha ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0073521137237549