সারাদেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৪০ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ দেয়ার লক্ষ্যে গত ১৮ ডিসেম্বর গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের জন্য আবেদন শুরু হয় ১৯ ডিসেম্বর, চলবে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রত্যেক পদের জন্য আবেদনে ১৮০ টাকা হারে ফি জমা দিতে হয়। একেকজন একাধিক আবেদন করেন। শত শত আবেদনকারী এই ১৮০ টাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনলাইনে আবেদন করতে গেলে রেজিস্ট্রেশনের অপশনের রেজিস্ট্রেশন নম্বর কোনটা দেবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকে। অনেকের মতে, এনটিআরসিএর ব্যবহৃত সফটওয়্যারটি হয়তো পুরনো তাই অনেক সমস্যা। এছাড়াও আবেদনের সময় অন্য অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন নিবন্ধিত শিক্ষকরা। শূন্যপদের তালিকায় ননএমপিও প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এ নিয়েও রয়েছে তাদের নানা প্রশ্ন।
একাধিক নিবন্ধনধারী দৈনিক শিক্ষাকে জানান, প্রায় তিন বছর বিরতির পর একবারে ৪০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। নিয়োগ নিশ্চিত করতে একাধিক আবেদন করছেন আগ্রহীরা। ১৮০টাকা করে লাগছে একটি পদের জন্য আবেদনে। শিক্ষকদের অভিযোগ, একাধিক পদে আবেদনে লেগে যাচ্ছে অনেক টাকা। টাকার পরিমাণ কম অথবা পুরোপুরি বিনামূল্যে দাবি করেছেন অনেকে। দৈনিক শিক্ষার কাছে ইমেইল ও ফোন করেছেন অনেক প্রার্থী।
এসব বিষয়ে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান এস এম আশফাক হুসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘বিসিএস পরীক্ষার আবেদনে ৮০০ টাকা ফি লাগে। বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে ফি লাগে কমপক্ষে ৫০০ টাকা। আমরা সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে একই সেবা দিতে মাত্র ১৮০ টাকা নিচ্ছি। প্রতিটি আবেদন আমাদেরকে পৃথক পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রক্রিয়া করতে হবে। প্রতিটি আবেদন আলাদা প্রক্রিয়াকরণের ফি ১৮০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। একটি আবেদনের ফি’র টাকা দিয়ে একাধিক আবেদন আলাদাভাবে প্রক্রিয়াকরণ সম্ভব হচ্ছে না।’
এদিকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক প্রার্থী। আবেদনের সময় কোন রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করতে হবে তা বুঝতে পারছেন না তারা। নিবন্ধন সনদধারীদের সনদপত্রে এ রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি উল্লেখ আছে। কিন্তু ১৩ ও ১৪ তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা সনদ হাতে পাননি। এ বিষয়ে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান এস এম আশফাক হুসেন দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, যে সব নিবন্ধন উত্তীর্ণরা এখনো সনদ পাননি তাদের কথা মাথায় রেখে তাদের মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বেশিরভাগই তা পেয়েছেন এবং সে অনুযায়ী আবেদন করছেন। এখন কোন প্রার্থী যদি তার সিম কার্ড বা মোবাইলটি হারিয়ে ফেলেন তাহলে তার মোবাইল নম্বরে পাঠানো প্রয়োজনীয় তথ্য হয়তো পাননি তিনি। সেক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরের সাথে যোগাযোগ করে পুরাতন সিমটি তুলে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন প্রার্থীরা।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিবন্ধনের সনদধারী যেসব শিক্ষক ইতিমধ্যে কর্মরত ও ইনডেক্সধারী তারাও আবেদন করতে পারবেন। এমনটা বলা হয়েছিলো। কিন্তু ইনডেক্সধারীদের আবেদনে সমস্য হচ্ছে মর্মে কিছু শিক্ষক জানিয়েছেন। ইনডেক্সধারী আবার নিবন্ধধারী কিন্তু বয়স ৩৫ এর বেশি এমন অনেকে আবেদন করতে পারছেন না।
জানতে চাইলে এ সমস্যার বিষয়টি দৈনিক শিক্ষার কাছে অস্বীকার করেন চেয়ারম্যান এস এম আশফাক হুসেন। তাঁর মতে, এ ধরণের সমস্য হবার কথা নয়।
তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে, অনেক ইনডেক্সধারী শিক্ষক আবেদন করছেন। এমনও হতে পারে আবেদন প্রক্রিয়ার সমস্যার করণে অসুবিধায় পড়ছেন কিছু শিক্ষক। আবার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোনও বাজারের কম্পিউটারের দোকান থেকে আবেদন করতে গেলে ওই দোকানের কম্পিউটারে কোনও জটিলতা থাকলেও সমস্যা হতে পারে।’
তবে, যেকোনও সমস্যার সমাধানের জন্য এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন চেয়ারম্যান।