এবার দুধ ও দুগ্ধজাত পন্য সংগ্রহ করে গুণগত মান যাচাই করবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্স। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. লুৎফুল হাসানের নির্দেশক্রমে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের আওতায় এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়।
গঠিত টাস্কফোর্স এর কার্য-পরিধি অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী খামার ও প্রতিষ্ঠান এবং বাজারসহ বিভিন্ন স্থান ও পর্যায় থেকে দুধ ও দুগ্ধ পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। সেই নমুনার গুণগত মান নির্ণয় করা এবং দ্রুত গবেষণালব্ধ ফলাফল সংবলিত বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল ও সুপারশিমালা তুলে ধরবে এই টাস্কফোর্স। দুধের গুণগত মান নিয়ে জনমনে যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে তা দূর করতে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদকে চেয়ারম্যান এবং একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ওই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এর অন্য সদস্যরা হলেন ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার, মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম লুৎফুল কবির, কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. রাজিয়া সুলতানা এবং ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
এ বিষয়ে উপাচার্য লুৎফুল হাসান বলেন, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যে ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে। সে জন্য আসলে খামারি নাকি প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানগুলো না অন্য কউ দায়ী তা জানা জরুরি। দরিদ্র খামারিরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় এ উদ্যোগ নিয়েছে।
এদিকে নিরাপদ দুধ নিয়ে সোমবার (২২ জুলাই) বাকৃবির সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন ভবনে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে বক্তারা বলেন, দুধে অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেলেই সেই দুধ খাওয়া যাবে না, সেটা ঠিক নয়। এর একটি নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও সহনীয় মাত্রার বেশি পাওয়া গেলেই তা খাবার অনুপযোগী বলে গণ্য হবে। দুধে ক্ষতিকর অণুজীব, অ্যান্টিবায়োটিক বা ভারী ধাতুর দূষণের জন্য মূলত পরিবেশ দূষণ, কোল্ড চেইন বজায় না রাখা, অনিয়মতান্ত্রিক চিকিৎসা, অনিয়ন্ত্রিত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার, কৃষিক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার দায়ী।
বক্তারা আরও বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ২৫০ মিলিলিটার দুধ পান করা প্রয়োজন। এ দুগ্ধশিল্পের বিকাশের জন্য দেশে আদর্শ মানদণ্ড তৈরি এবং দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্যের পরীক্ষার জন্য রেফারেন্স ল্যাবরেটরি গড়ে তুলতে হবে। প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব গবেষণা ও উন্নয়ন শাখা থাকতে হবে।
ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মো. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য ড. লুৎফুল হাসান এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য ড. মো. জসিম উদ্দিন খান ও বাউরেস এর পরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পশুপালন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নুরুল ইসলাম। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও খামারীরা সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।