সম্প্রতি বেসরকারি স্কুল-কলেজের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ জারি করা হয়েছে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামোর বিভিন্ন দিকনির্দেশনা থাকলেও শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। এ নীতিমালায় শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে মেধাবী-প্রশিক্ষিত-গবেষকদের অগ্রাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। অধিকন্তু পদোন্নতিতে মেধার চেয়ে বয়সকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে! প্রণীত নীতিমালার ১৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শিক্ষকদের পদোন্নতি ও জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণে এমপিওভুক্তির তারিখ বিবেচনায় নিতে হবে।
তবে একই তারিখে এমপিওভুক্ত হলে যোগদানের তারিখ বিবেচনায় আসবে, তাতেও সমতা হলে জন্মতারিখের ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারিত হবে। এছাড়া কলেজ-শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে আনুপাতিক হারের কূটচাল শিক্ষকদের বৈষম্য ও বঞ্চনাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। ১১.৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তুলনামূলক অনেক কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন-কনিষ্ঠ শিক্ষক প্রতিষ্ঠান ভিন্নতার কারণে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হতে পারবেন। কিন্তু জ্যেষ্ঠ অনেক শিক্ষককে সারা জীবন একই (প্রভাষক) পদে চাকরি করে অবসর গ্রহণ করতে হবে! এমনকী ‘টাইম স্কেল’ প্রথা বিলুপ্ত করে পদোন্নতি বঞ্চিত শিক্ষকদের বঞ্চনার পরিমাণ আরো বাড়ানো হয়েছে।
এ নীতিমালা অনুযায়ী এনটিআরসিএ-র মানন্নোয়নে শিক্ষক নিয়োগ হবে এবং পরিচালনা পর্ষদ প্রধানশিক্ষক/ অধ্যক্ষ নিয়োগ দেবে! অধিকন্তু প্রধানশিক্ষক ও অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রণীত বিধিমালা একদিকে বঞ্চিত শিক্ষকদের হতাশা- ক্ষোভের পরিমাণ বাড়িয়ে দেবে অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি প্রাধান্য পাবে। সর্বোপরি এ জটিল-কুটিল নীতিমালায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের অনুরোধে অনশন ভঙ্গকারী নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত হওয়ার আশা দুরাশায় পরিণত হবে। এ অবস্থায় শিক্ষার মানোন্নয়নে এবং শিক্ষকদের বঞ্চনা কমাতে প্রণীত এমপিও নীতিমালা-২০১৮ সংস্কার করতে হবে। বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লেখক: প্রভাষক (ইসলামিক স্টাডিজ),কামারখন্দ মহিলা ডিগ্রি কলেজ,কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ
সৌজন্যে: ইত্তেফাক