আঞ্চলিক অফিসের উদাসীনতা ও কেন্দ্র্রীয় ইএমআইএস সেলে রহস্যজনক আগুনজনিত কারণে মে মাসের এমপিও (মান্থলি পে-অর্ডার) বঞ্চিত হতে যাচ্ছেন সাড়ে ১৬শ’ শিক্ষক-কর্মচারী। এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলে ১ হাজার, ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৫শ’ ও বরিশাল অঞ্চলের পঞ্চাশ জনের মতো শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। নির্ধারিত সময়ে তাদের আবেদনের ফাইল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেলে না আসায় আগামী ২৮ মে স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের এমপিওর যে অনুমোদন দেওয়া হবে তা থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছেন তারা। তাদেরকে কমপক্ষে দুইমাস অপেক্ষা করতে হবে। প্রতি বিজোর মাসে একবার এমপিওভুক্তির সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত মার্চ মাসেও একই ঘটনা ঘটেছিল রংপুর ও বরিশাল আঞ্চলিক শিক্ষা অফিসে।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, তথ্য প্রযুক্তি (আইসিটি), বিজ্ঞান, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, চিত্রাঙ্কন, কৃষি ও চারুকলাসহ বিভিন্ন বিষয়ের নন-এমপিও শিক্ষকদের মে মাসের (নতুন এমপিও) এমপিওভুক্তির জন্য নির্ধারিত সময় ছিল গত ৮ মে। কিন্তু ইএমআইএস সেল পুড়ে যাওয়ায় সময় বাড়িয়ে ২৫ মে পর্যন্ত করা হলেও আবেদন প্রক্রিয়াকরণের সময় পাননি উপ-পরিচালকরা। এছাড়াও রংপুর ও বরিশাল অঞ্চলের উপ-পরিচালদ্বয়ের বিরুদ্ধে রয়েছে অথবা হয়রানির অভিযোগ। ২৫ মের মধ্যে সারাদেশের শিক্ষকদের ফাইল আঞ্চলিক অফিস থেকে মাউশির ইএমআইএস সেলে পাঠানোর সময় দেওয়া হয়। কিন্তু রংপুরের আঞ্চলিক অফিস থেকে ১ হাজার, মংমনসিংহ অঞ্চলে ৫শ’ ও বরিশাল অঞ্চলের ৫০ জন শিক্ষকের ফাইল পাঠানো হয়নি নির্ধারিত সময়ে। ফলে আগামী সোমবার (২৮ মে) স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের এমপিও অনুমোদন থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন এসব শিক্ষক।
অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা ও ভুক্তভোগী শিক্ষকদের অভিযোগে জানা গেছে, রংপুরের উপপরিচালক মোস্তাক হাবিবের বিরুদ্ধে গত মার্চ মাসেও এমপিও ছাড়ে উদাসীনতার অভিযোগ ওঠে। গত মার্চ মাসের এমপিও বঞ্চিত ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের পক্ষে গত ১৯ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ করেন গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ীর ফকিরহাট স্মৃতিসৌধ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মতলুবুর রহমান পলাশ। এ অভিযোগের পর তার বিরুদ্ধে অধিদপ্তর থেকে ব্যবস্থা নিতে পত্রও দেওয়া হয় মন্ত্রণালয়ে। তবে বিষয়টি আর এগোয়নি।
বরিশাল অঞ্চলের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান ও ঢাকা অঞ্চলের উপ-পরিচালক গৌর মন্ডলের বিরুদ্ধেও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০১১ সালের পরিপত্র বাতিল করে আইসিটি, বিজ্ঞানসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকদের এমপিও দিতে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর আবার পরিপত্র জারি করে সরকার। ওই পরিপত্র অনুযায়ী, ৭ হাজার ১৪৬ জন শিক্ষক এমপিও আবেদনের সুযোগ পান। এসব শিক্ষকের মধ্যে বেশিরভাগের এমপিওভুক্তি শেষ হলেও বাদ পড়েন প্রায় ২ হাজার শিক্ষক। তাদের মধ্যে কিছু নতুন শিক্ষকও রয়েছেন বলে জানায় অধিদপ্তর সূত্র।