নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জয়ন্তিপুর দাখিল মাদরাসা সহকারী শিক্ষক মাহবুবুর রহমান। ১৮ বছর ধরে শিক্ষকতা করলেও এমপিওভুক্ত (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) হতে পারেননি তিনি। ৬ সদস্যের সংসার নিয়ে বিপাকে এ শিক্ষক। পেটের দায়ে পেশা পরিবর্তন করে মাদরাসা শিক্ষক মাহবুবুর হয়েছেন রাজমিন্ত্রী। চোখ-মুখে ক্লান্তি আর হতাশা নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে রডে তারের গাঁথুনি দিয়ে চলেছেন মানুষ গড়ার এ কারিগর।
মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, মাহবুবুর রহমান ২০০০ খ্রিস্টাব্দে সহকারী মৌলভি হিসেবে জয়ন্তিপুর দাখিল মাদরাসায় যোগদান করেন। প্রতিষ্ঠানটির পাশাপাশি তিনি নিজেও সরকারি বেতন মঞ্জুরির জন্য আবেদন জমা দেন। একের পর এক মঞ্জুরির আদেশ আসেলেও তাঁর মঞ্জুরির আদেশ হয়নি। বৃদ্ধ বাবা-মাসহ সংসারে আছে ছয় সদস্য। পরিবারের তিনবেলা খাবার, বাবা-মার ওষুধ ও সন্তানের লেখাপড়ার খরচ মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।
বাগাতিপাড়ার এক নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে শিক্ষক মাহবুবুর জানান, ‘এমপিওর আশায় মাদরাসায় শিক্ষকতা করতে শুরু করেছিলাম। ভেবেছিলাম, একটু দেরি হলেও এমপিও হবেই। কিন্তু অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, পরিবারের খরচ বাড়ায় বাধ্য হয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি একটি মসজিদে ইমামতি শুরু করেছিলেন তিনি। বেতন মাত্র এক হাজার টাকা। মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমে যোগ দিয়েও কিছু উপার্জনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সামান্য অর্থে সংসার চলে না।
মাহবুবুর আরও জানান, চলতি বছর নন–এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওর নতুন বার্তায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন। শেষ পর্যন্ত নিরাশ হয়ে নির্মাণশ্রমিকের কাজ শুরু করেছেন তিনি।
ননএমপিও শিক্ষক সমিতির নেতা সরদার শাহ আলম বলেন, সারাদেশে শত শত ননএমপিও শিক্ষক পেশা পরিবর্তনের চিন্তা করছেন। আর কতদিন আশায় আশায় থেকে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া যায়?