যেখানে আশা থাকে সেখানে কর্মস্পৃহা বাড়ে- এ বাস্তবতা বোঝার জন্য কোনো বিশেষ চিন্তা শক্তির প্রয়োজন নেই। আজ এমপিও শিক্ষকদের মনে হতাশা ছাড়া কিছু আছে কি? তা না হলে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, মেডিকেল, টিফিন এবং উৎসব ভাতা সবকিছুতেই নিরাশা।
শিক্ষকদের আস্থায় না নিয়ে শিক্ষক নেতাদের ১০ শতাংশ কর্তনসহ অনেককিছুই শিক্ষা ও শিক্ষকের ওপর চরম বৈষম্য ছাড়া আর কি? উপজেলাকেন্দ্রিক সরকারিকরণের ছোঁয়া অবহেলিত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য বড়ই হতাশার। যেখানে সুবিধা বঞ্চিত মানুষের অগ্রাধিকার জরুরি ছিল।
একটা বিষয় দৃশ্যমান ও সত্য যে, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা সংকট নিরসনকল্পে বেশ সফল। কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। রাষ্ট্র, সমাজ কিংবা প্রতিষ্ঠান উন্নয়নে যোগ্য নেতৃত্বের বিকল্প নেই। অথচ সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর ব্যাপারে এই চরম সত্য উপলব্ধি কেউ করছে না।
সরকারের ঐতিহাসিক উদ্যোগে এনটিআরসিএ-এর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হয়ে একজন শিক্ষককে তার বাড়ি উত্তরবঙ্গে হলেও দক্ষিণবঙ্গে, এমনকি এক বিভাগ হতে অন্য বিভাগে চাকরি করতে হয়। তার কি মানসিক তুষ্টির প্রয়োজন নেই? অন্তত সমাজ বিনির্মাণে যেই শিক্ষকদের ভূমিকা অনন্য, তাদের প্রতি কি রাষ্ট্রের আরেকটু সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত নয়? জাতি গঠনের কারিগর খ্যাতি দিয়ে এভাবে অবজ্ঞা করলে সভ্য সমাজ বিনির্মাণ কি সম্ভব হবে? মাধ্যমিক শিক্ষার যত্ন ছাড়া কি শিক্ষাব্যবস্থার পূর্ণতা কল্পনা করা যায়? প্রশ্নগুলো দৈনিকশিক্ষার পাঠকসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের জন্য রেখে গেলাম।
অন্তত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি প্রথা চালু করে শিক্ষায় পরিবর্তন আনা সময়ের দাবি।
লেখক : মো. শাহআলম সরকার, শিক্ষক, অষ্টগ্রাম (হাওড়ঞ্চল), কিশোরগঞ্জ।
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]