এমপিওভুক্তি ও শিক্ষার মান প্রসঙ্গ - দৈনিকশিক্ষা

এমপিওভুক্তি ও শিক্ষার মান প্রসঙ্গ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

যখন দশজনের উদ্দেশে কোনো সিদ্ধান্ত হয়, তাহা কাহারো জন্য খুশির বার্তা লইয়া আসে, আর কেহ হয় বিরাগভাজন। এই পৃথিবীতে এমন সিদ্ধান্ত বিরল, যাহা শতভাগ মানুষকে সন্তুষ্ট করিতে পারিয়াছে। সম্প্রতি সরকারের এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রেও এই কথাই প্রযোজ্য। সরকার ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিয়াছে। ইহা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি বড়ো সুসংবাদ। কিন্তু নন-এমপিওভুক্ত স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান যেগুলি এইবার এমপিওভুক্ত হয় নাই, সেই সকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রহিয়াছে অসন্তোষ। এই ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় লইতে হইবে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। 

প্রথমত, সরকারের একটি অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা রহিয়াছে। নূতন এমপিওভুক্তির পূর্বেই দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রহিয়াছে ২৭ হাজার ৮১০টি। এমপিওভুক্তির বদৌলতে এইসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১ লক্ষ শিক্ষক-কর্মচারীকে সরকারের মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার অনুযায়ী মূল বেতন ও অন্য সুযোগ-সুবিধা দিতে হইবে। ইহা সরকারের বেতন-ভাতা তহবিলের উপর চাপ পড়িবে নিঃসন্দেহে। তাই অগ্রসর হইয়া থাকা প্রতিষ্ঠানগুলিকেই বাছিয়া লইতে হইয়াছে। তাহার চাইতে বড়ো কথা, যেইহেতু এইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়া সরকারের নীতিমালা অনুসরণ করিয়া হয় নাই এবং তাহাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা বিচারে সরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া গ্রহণ ছিল না, সেই হেতু তহবিল হইতে বেতন প্রদানের পূর্বে সরকার কিছু শর্তপূরণের কথা বলিবে তাহাই স্বাভাবিক। যেই সকল প্রতিষ্ঠান সেই সব শর্তপূরণ শতভাগ করিতে পারে নাই, তাহাদেরকেই এই দফায় এমপিওভুক্তির বাহিরে রাখা হইয়াছে। যাচাই-বাছাই করিতে গিয়া সামান্য ভুলত্রুটি হওয়াটা অস্বাভাবিক নহে। কিন্তু এইবারের এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে শর্তপূরণকেই প্রাধান্য দেওয়া হইয়াছে এবং মুখ দেখিয়া দেওয়া হয় নাই বলিয়াই প্রতীয়মান হয়।

তবে এমপিওভুক্তিই যে শেষ কথা নহে তাহা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট করিয়া বলিয়াছেন। তাহার বক্তব্যটি প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলিয়াছেন, ‘যাদের এমপিওভুক্ত করা হলো তাদের এ যোগ্যতা ধরে রাখতে হবে। নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্যতা ধরে রাখতে না পারলে এমপিও বাতিল করা হবে।’ তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশে আরো বলিয়াছেন, ‘এখন না পড়ালেও টাকা পাওয়া যাবে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। কারণ শিক্ষা মান ধরে রাখতে না পারলে এমপিও বাতিল করা হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মধ্যে কিছু বাস্তবতা দেখিতে পাওয়া যায়। তিক্ত হইলেও সত্য সরকারের তহবিল হইতে বেতন পাওয়া অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে একটি গা-ছাড়া ভাব দেখিতে পাওয়া যায়। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইহা সংক্রমিত হইলে দেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী তথা জাতি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইবে। দ্বিতীয়ত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান একটি বড়ো বিষয়। মানহীন শিক্ষা সমস্যা বাড়ায় ছাড়া কমাইতে পারে না। সুতরাং যাহারা এমপিওভুক্ত হইয়াছেন তাহাদের এই বিষয়গুলি মানিয়া চলিতে হইবে। পক্ষান্তরে যেই সকল প্রতিষ্ঠান কিছু শর্তপূরণ করিতে না পারিয়া এই দফায় এমপিওভুক্ত হইতে পারে নাই, তাহাদের প্রতি অনুরোধ থাকিবে, যথাযথ নিয়মকানুন অনুসরণ করিয়া চলিতে। নিশ্চয়ই তাহাদের আগামী দিনে এমপিওভুক্তির সুযোগ আসিবে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037839412689209