ভূরুঙ্গামারীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও নিয়ে রীতিমতো ‘তুঘলঘি কারবার’ ঘটেছে। অস্তিত্ব না থাকলেও এমপিও ভূক্ত করা হয়েছে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানকে। আবার একই ইউনিয়নে এমপিওভুক্ত হয়েছে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তত্র্য জানা যায়।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় সদর ইউনিয়নে এক/দেড় কিলোমিটারের মধ্যেই ৪টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একই মালিকের ২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার একটি পরিত্যক্ত ভবন থাকলেও নেই কোন শিক্ষার্থী। অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী দেখিয়ে এমপিওভুক্তির অভিযোগ উঠেছে।
জরাজীর্ণ আর পরিত্যক্ত এই ভবনটি দীর্ঘ ৪/৫ বছর ধরে হাটের গরু রাখাসহ মাদকাসক্তদের অপকর্মের আস্তানা হয়ে উঠেছে। নেই দরজা-জানালা। ঘরগুলোতে রয়েছে গরুসহ খড়কুটা, গোবর এবং জুয়া খেলার সরঞ্জমাদী। কিন্তু এমপিওর তালিকায় নাম আসার পরপরই রাতারাতি সোনাহাট ইউনিয়নের ঘুন্টির মোড় নামক স্থানে অন্য প্রতিষ্ঠান উপমা মহিলা টেকনিক্যাল এন্ড আইটি ইন্সটিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ‘এফএ মহিলা টেকনিক্যাল এন্ড আইটি ইন্সটিটিউট’ ব্যানার লাগানো হয়েছে। অথচ টিনশেড এই প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শিক্ষার্থী।
নেই ক্লাস চলার কার্যক্রম। পরিত্যক্ত এই প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্তির তালিকায় কিভাবে গেল এ নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। অপরদিকে সদ্য এমপিওভুক্তি হওয়ায় ২৮ শতক জমিতে গড়া এফএ টেকনিক্যাল এন্ড আইটি ইন্সটিটিউটে চলছে পরীক্ষা। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পাঠ্য বইয়ের জ্ঞান ছাড়া পায়না কোনও কারিগরি শিক্ষা। ল্যাবসহ কম্পিউটারের সুযোগ-সুবিধা না থাকলেও এমপিও হয়েছে।
কাগজে কলমে স্থান ও ছাত্র-ছাত্রীর নাম ঠিকঠাক থাকলেও বাস্তবে ভিন্ন চিত্র। এখানে অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এনে পরীক্ষা দেয়া হয়। এফএ মহিলা টেকনিক্যাল এন্ড আইটি ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ মোদ্দাছেরুল ইসলাম স্বীকার করেন, এই প্রতিষ্ঠানের মূল জায়গায়টি বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায়।
তিনি আরো বলেন, আগে উপমা মহিলা টেকনিক্যাল এন্ড আইটি ইন্সটিটিউট থাকলেও তাদের কোন শিক্ষার্থী না থাকায় এটি বন্ধ হয়ে গেছে। তাই আমরা এক বছর ধরে মাসে ১০হাজার টাকা ভাড়ায় এই টিনসেড ঘরে এফএ মহিলা টেকনিক্যাল এন্ড আইটি ইন্সটিটিউট পরিচালিত করে আসছি। তবে তার কথাতেও গরমিল পাওয়া গেল। টিনশেড এই ঘর গুলোতে ক্লাস পরিচালনার জন্য পাওয়া যায়নি কোন বেঞ্চ, বোর্ড কিংবা পাঠদানের সরঞ্জামাদী। তবে তার দাবি, এখানে ক্লাস হয় নিয়মিত। এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ১৯০জন শিক্ষার্থী।
শিক্ষক ৪ জন ও স্টাফ রয়েছেন ৬ জন। নিরাপত্তা জনিত কারণে এখানে কম্পিউটার ল্যাব না থাকলেও ১০টি কম্পিউটার রয়েছে। তবে এফএ টেকনিক্যাল এন্ড আইটি ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ আল-মামুন ল্যাব ও কম্পিউটার না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের অর্থ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চালিয়ে আসা হচ্ছে। এখানে সরকারি বা বেসরকারি কোন অনুদান আমরা পাইনি। এখন এমপিও হয়েছে সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে।