এমপিওভুক্তিতে কৌশল: ৩৭ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায় ঘর তৈরি হচ্ছে এখন - দৈনিকশিক্ষা

এমপিওভুক্তিতে কৌশল: ৩৭ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায় ঘর তৈরি হচ্ছে এখন

নড়াইল প্রতিনিধি |

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় এমপিওভুক্তি পেতে চরব্রাহ্মণডাঙ্গা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা নামে একটি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করা হয়েছে। সম্প্রতি এ ঘর নির্মাণ করছেন ওই এলাকার কয়েক ব্যক্তি। নির্মাণাধীন মাদরাসাটি ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, গত ১২ জুন প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের ইবতেদায়ি মাদ্রাসগুলো এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন। ওই ঘোষণার পর চরব্রাহ্মণডাঙা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা নামে একটি মাদরাসার সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মাদরাসাটি ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত বলে উল্লেখ করা হলেও কিছু দিন ধরে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিন দেখা যায়, ওই মাদরাসায় একটি টিনের ঘরের ছাউনি দেওয়া হয়েছে, এখনও বেড়া দেওয়া হয়নি। নেই কোনো বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিলসহ আসবাবপত্র। তাই ফাঁকা ঘরের মধ্যে গরু-ছাগল চরতে দেখা যায়।

সাবেক ইউপি সদস্য চরব্রাহ্মণডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম জানান, এ মাদরাসার কার্যক্রম খাতা-কলমেই সীমাবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোকে এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেওয়ার পর ফায়দা লুটতে এলাকার কয়েকজন ঘর তুলে তাতে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া এখানে নিয়োগ দেওয়া পাঁচ শিক্ষকের কাছ থেকে (শিক্ষকপ্রতি) ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

একই গ্রামের বাসিন্দা তাইজুল ইসলাম জানান, যেখানে মাদরাসার কোনো অবকাঠামো নেই সেখানে শিক্ষার্থী থাকে কীভাবে? এ বছর এ মাদ্রাসা থেকে ১২ পরীক্ষার্থী নখখালী দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এসব পরীক্ষার্থীর অনেকেই দুই থেকে তিন বছর আগে ব্রাহ্মণডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন আবার ব্রাহ্মণডাঙা হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। ভুয়া পরীক্ষার্থীর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে দুটি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পর তারা আর কেন্দ্রে যায়নি। এ বিষয়ে দুদক, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন তারা।

মাদরাসার সুপার মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, সরকার এমপিওভুক্তির ঘোষণার পর নতুন করে মাদ্রাসার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হবে। ভুয়া পরীক্ষার্থীর বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী স্কুলের শিক্ষার্থীরা মান্নোয়নের জন্য মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিতে পারে। কিন্তু এলাকাবাসী জোর করে ১২ জনের পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়। শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি আরও বলেন, ঘর নির্মাণসহ অন্যান্য খরচ শিক্ষকদের টাকায় করতে হচ্ছে।

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল আহাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

মাদরাসা শিক্ষক মাসুদ আলী বলেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে সুপার বা কেউ কোনো টাকা নেয়নি। পাঁচ শিক্ষকের অর্থ দিয়েই ঘরটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও নখখালী কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদুল করিম জানান, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় দুটি বিষয়ে অংশগ্রহণের পর চরব্রাহ্মণডাঙ্গা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার ১২ শিক্ষার্থী আর পরীক্ষা দিতে আসেনি।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম ছায়েদুর রহমান বলেন, কিছুদিন আগে সরকারের পক্ষ থেকে ইবতেদায়ী মাদরাসা এমপিওভুক্তির ঘোষণা এসেছে। তবে এখনও যাচাই-বাছাই চলছে। কোনো মাদ্রাসার বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কোনো মাদরাসা যোগ্যতা অনুযায়ী এমপিওভুক্তির পর্যায়ে পরে তবেই তাদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় অর্ন্তভুক্তি হবে।

 

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0074360370635986