ধর্মপাশা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন খান ও তার পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। শনিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান তারা। এদিকে, এক ফেসবুক পোস্টে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এ হামলার জন্য স্থানীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ভাই মোজাম্মেল হোসেন রুখনকে দায়ী করেছেন।
শনিবার বিকেল ৫টা ৪১ মিনিটে গোলাম রাব্বানী তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের অন্তর্গত ধর্মপাশা উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন খান ও তার পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী, বর্তমান এমপি সাহেবের সহোদরের নির্দেশে এই ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। এসপি সাহেবের সাথে কথা বলেছি, আজকেই অভিযোগ মামলা আকারে রুজু করা হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেউ পার পাবে না। অনতিবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় প্রায় ৩ মাস আগে ওষুধ কেনার সময় মূল্য নিয়ে জনৈক ক্রেতা সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে ফার্মেসি ব্যবসায়ী মাহমুদুল হাসান নাঈমের কথা কাটাকাটি হয়। নাঈম উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সাদাত তিতাসের সমর্থক উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সোহানুর রহমান সোহানের বড় ভাই। পরদিন ধর্মপাশা সদরের একটি রেস্টুরেন্টে আবারও সাদ্দাম ও নাঈমের কথা কাটাকাটি হয়। রেস্টুরেন্টে সাদ্দামের সঙ্গে ওই সময় সংগঠনের অপর অংশের নেতা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন খানও ছিলেন। এ ঘটনার জের ধরে গত ৩০ মার্চ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সাদাত তিতাস সমর্থকরা আল আমিন খানের ওপর চড়াও হয় ও তার বাড়িতে হামলা করে।
উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবু সাদাত তিতাস সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং তার ভাই উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত মোজাম্মেল হোসেনের সমর্থক।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন খান বলেন, ‘ওষুধ কেনা বা অন্য সবকিছুই অজুহাত, গত ১০ মার্চের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি নৌকার পক্ষে সক্রিয় ছিলাম। নানাভাবে চেষ্টা করেও বিদ্রোহী প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেন তার পক্ষে আমাকে কাজে নামাতে না পারায় এই হামলা।’
ধর্মপাশা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সাদাত তিতাস ফোন রিসিভ না করায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ্ খান জানান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এই বিষয়টি নিয়ে শনিবার আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। আমি সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।'
সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ বিলকিস আমাকে এ ঘটনা জানানোর পর আমি তাকে মীমাংসা করে দেওয়ার অনুরোধ করেছি। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক জড়িত হওয়ার মতো ঘটনা নয় এটি।’