চলতি বছরের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় এমসিকিউ (বহু নির্বাচনী প্রশ্ন) থাকছেই। পরীক্ষার হলে এমসিকিউ অংশের উত্তরসহ সমাধান সরবরাহ এবং প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে এমসিকিউ বাদ দেয়ার সুপারিশ করে সরকার কর্তৃক গঠিত একাধিক তদন্ত কমিটি। সুপারিশের আলোকে এমসিকিউ বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগেই চলতি শিক্ষাবর্ষের অর্ধেক সময় পার হয়ে যাওয়া এবং প্রভাবশালী নোট-গাইড কোম্পানিগুলোর অদৃশ্য ঈশারায় চলতি বছরের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিতব্য অষ্টম শ্রেণির জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) ও জেডিসি (জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট) পরীক্ষায় এমসিকিউ থাকছেই। পরীক্ষার বিষয় ও নম্বর কমছে বলে জানা গেছে। নতুন মানবন্টনসহ বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত হবে আগামী ২২ মে। পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, গত সপ্তাহে বোর্ডে অনুষ্ঠিত এক সভায় মানবন্টন ও এমসিকিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আগামী ২০ মে (রোববার) পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে ওয়ার্কশপ শুরু হবে। চলবে ২২ মে অব্দি। ওয়ার্কশপেই চূড়ান্ত হবে সবকিছু। ওয়ার্কশপে অংশ নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাবোর্ডসমূহের কর্মকর্তারা। কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষা কর্মকর্তাগণ।
এর আগে আন্ত:শিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটি সাব কমিটিও জেএসসির পরীক্ষার বিষয় ও নম্বর কমানোর প্রস্তাব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। ৭টি বিষয়ে ৬৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব করে কমিটি। গার্হস্থ্য অর্থনীতি ও কৃষি শিক্ষা বিষয় দুটো পাবলিক পরীক্ষা না নিয়ে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব করা হয়।
মাধ্যমিক স্তরের প্রশ্নপত্রের নম্বর বিভাজন করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। বোর্ডের সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জেএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউ থাকছে। তবে বাংলা ও ইংরেজি থেকে ৫০ নম্বর করে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে শুনেছেন তিনি। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পেলে নম্বর বণ্টনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ১০০ নম্বরে পরীক্ষা হলে এমসিকিউতে থাকবে ৩০ নম্বর। কীভাবে তা সমন্বয় করা হবে রোববারের সভায় তা নির্ধারণ হতে পারে।
গত কয়েকবছর যাবত এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বেপরোয়া প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি প্রশ্ন ফাঁসের জন্য চারটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করে। এর মধ্যে অন্যতম এমসিকিউ। গত ৩ মে ওই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ঘোষণা দেন, এমসিকিউ পদ্ধতি নিয়ে নানা পরিকল্পনা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় বড় সংস্কার ও পরিবর্তন আনা হবে।