এসএসসি উত্তীর্ণদের মেধা তালিকা হচ্ছে - দৈনিকশিক্ষা

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিএসএসসি উত্তীর্ণদের মেধা তালিকা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভর্তি জটিলতা এড়াতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মেধাতালিকা হচ্ছে। এতে কেবল শিক্ষার্থী নিজ বোর্ডে এবং জাতীয়ভাবে তার মেধাক্রম জানতে পারবে। সেটার আলোকে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন করতে হবে। রোববার (১৩ মে) দুপুর ২টা থেকে ভর্তির আবেদন নেয়া শুরু হবে। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবেদন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহা. জিয়াউল হক বলেন, গত দুই বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট কিছু কলেজে ভর্তির জন্য ঝুঁকে পড়ে। এতে কলেজের এক একটি আসনের বিপরীতে ৪০-৪৫ জনের আবেদনও পড়ে। কিন্তু ওইসব কলেজে আসন সংখ্যার বিবেচনায় শীর্ষ মেধাবী বা মেধাক্রমধারীরা চান্স পায়। বাকিরা উপেক্ষিত হয়। এ ধরনের ভুলের কারণে অনেকেই শেষ পর্যন্ত কলেজ পায় না। অথচ নিজের মেধাক্রম অনুযায়ী যদি শুরুতেই নিজের উপযোগী কলেজে আবেদন করত, তাহলে কলেজ পেত। এতে বিড়ম্বনা দূর হতো। নিজের মেধাক্রম দেখে আবেদন করলে ভর্তিতে এ জটিলতা এড়ানো যাবে। এজন্যই মেধাক্রম করা হবে। তবে আবেদনকারী শুধু নিজের মেধাক্রম দেখতে পারবে। ভর্তি কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, এবার একাদশ শ্রেণীর সব আসনেই শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে মেধায়। আবেদনপত্রে কলেজ ও মাদ্রাসার পছন্দক্রম দিতে হবে। একবার আবেদন দাখিল করলে সেই পছন্দক্রম আর পরিবর্তন করা যাবে না। শিক্ষার্থীরা নিজের নম্বরের ভিত্তিতে নির্ধারিত মেধাক্রম অনুযায়ী কলেজ পাবে। শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন হবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। যেমন : কোনো শিক্ষার্থী প্রথম প্রকাশিত তালিকায় যদি তার পছন্দের কলেজের (তালিকা থেকে) ৫ নম্বর পেয়ে থাকে, তাহলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় তালিকায় মেধাক্রম অনুসারে ওপরের দিকের (চতুর্থ, তৃতীয়, দ্বিতীয় এ রকম) কলেজ দেয়া হবে। অবশ্য কেউ যদি প্রথম পাওয়া কলেজেই ভর্তি হতে চায়, তাহলে সে সেটা জানালে আর মাইগ্রেশন দেয়া হবে না।

এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১০৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। গত বছর ভর্তি না হওয়া প্রায় পৌনে ২ লাখ ছাত্রছাত্রী আছে। সে অনুযায়ী ১৭ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর এবার ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নেয়ার কথা। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, মোট তিন দফায় শিক্ষার্থীরা আবেদনের সুযোগ পাবে। ফল প্রকাশও হবে তিনবার। এর মধ্যে প্রথম দফায় ২৪ মে পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। এছাড়া ১৯ ও ২০ জুন দ্বিতীয় এবং ২৪ জুন তৃতীয়বারের জন্য আবেদন করা যাবে। মোট তিন দফায় আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে। শিক্ষার্থীদের অবশ্যই নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। নইলে শিক্ষার্থীর কলেজ-মাদ্রাসায় বরাদ্দকৃত আসনের পাশাপাশি আবেদনটিও বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ফের আবেদন করতে হবে।

গত সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের স্বাক্ষরে একাদশ শ্রেণীর ভর্তি নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। নীতিমালাটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট (www.moedu.gov.bd) এবং ভর্তির ওয়েবসাইটে (http://www.xiclassadmission.gov.bd/) পাওয়া যাচ্ছে। নীতিমালায় এবারও অনুমতি বা স্বীকৃতিবিহীন কলেজ ও মাদ্রাসায় ভর্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে আবেদনকারীদের ফল প্রকাশ করা হবে ১০ জুন। এর আগে এসএসসি ও দাখিলের ফলাফলের পুনঃনিরীক্ষণে আবেদনকারীদের কাছ থেকে ৫ ও ৬ জুন আবেদন নেয়া হবে। প্রথম পর্যায়ের ফলে কলেজ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ১১ থেকে ১৮ জুনের মধ্যে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন নেয়া হবে ১৯ ও ২০ জুন। ফল প্রকাশ করা হবে ২১ জুন। একইদিন পছন্দক্রম অনুযায়ী মাইগ্রেশনের ফল (প্রথমবার কলেজ পছন্দ না হওয়া প্রার্থীদের বিকল্প কলেজ) প্রকাশ করা হবে। এই দফায় নির্বাচিতরা ২২ ও ২৩ জুন মনোনয়ন নিশ্চিত করবে। তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন নেয়া হবে ২৪ জুন। পরের দিন দ্বিতীয় পর্যায়ের মাইগ্রেশন এবং তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে। তিন দফা আবেদন গ্রহণ ও ফল প্রকাশের পর ২৭ জুন শুরু হবে কলেজে ভর্তি কার্যক্রম। ৩০ জুন পর্যন্ত কলেজের টাকা জমা দিয়ে শিক্ষার্থীরা ভর্তি সম্পন্ন করবে। ১ জুলাই শুরু হবে তাদের ক্লাস।

নীতিমালা অনুযায়ী, এবারও ১১ শতাংশ আসনে কোটায় ভর্তি করা হবে। বিশেষ কোটার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা-৫ শতাংশ, বিভাগীয় ও জেলা সদর-৩ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধস্তন দফতরসমূহ ২ শতাংশ, বিকেএসপি-০.৫ এবং প্রবাসী ০.৫ শতাংশ আছে। তবে এসব কোটায় উপযুক্ত শিক্ষার্থী না পাওয়া গেলে অন্য কাউকে ভর্তি করা যাবে না। নীতিমালায় বলা হয়েছে, গতবারের মতো এবারও অনলাইন এবং এসএমএসের মাধ্যমে ভর্তির আবেদন নেয়া হবে। অনলাইনে সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা মাদ্রাসায় আবেদন করা যাবে। এর জন্য নেয়া হবে ১৫০ টাকা। মোবাইল ফোনে প্রতি এসএমএসে একটি করে কলেজে আবেদন করা যাবে। এর জন্য ১২০ টাকা দিতে হবে। তবে এসএমএস এবং অনলাইন মিলিয়ে কোনো শিক্ষার্থী ১০টির বেশি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবেন না। পছন্দক্রম অনুযায়ী একটি কলেজে ভর্তির অনুমোদন দেয়া হবে।

এবার ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকার মধ্যে আংশিক এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য ৯ হাজার টাকা (বাংলা মাধ্যম) ও ১০ হাজার টাকা (ইংরেজি মাধ্যম) ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হবে। সব প্রতিষ্ঠানের জন্য উন্নয়ন ফি ৩ হাজার টাকার বেশি আবেদন করা যাবে না। প্রতিটি খাতে অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে রসিদ প্রদান করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া মফস্বল ও পৌর এলাকার জন্য ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার টাকা, পৌর জেলা সদরে ২ হাজার টাকা, ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি নেয়া যাবে না।

ভর্তি নীতিমালা লঙ্ঘন করা হলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পাঠদান অনুমতি বা এমপিওভুক্তি বাতিল করা হবে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ভর্তির ক্ষেত্রে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।

প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0066728591918945