এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে ফাহমিদা বানু। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে উদয়ন স্কুলের সাদমান আবরার খান। গত ৬ মে প্রকাশিত হয় এসএসসির ফল। এতে দেখা যায় ঢাকা বোর্ডে মোট ৫ লাখ ত্রিশ হাজার ৪২২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে রাজধানীর শ্যামপুরের এ কে হাইস্কুলের ফাহমিদা বানু সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে।
সর্বমোট এক হাজার তিনশ নম্বরের (শারীরিক শিক্ষা ও ক্যারিয়ারের ১৫০ সহ) মধ্যে ফাহমিদা এক হাজার ২৫৪ পেয়েছে। আর এক হাজার ২৪৬ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাদমান আবরার খান। তৃতীয় হয়েছে ডেমরার সামসুল হক খান স্কুলের মেহরি হাসান জিনিয়াস। চতুর্থ গভর্মেন্ট ল্যববরেটরি স্কুলের সৌমিক মজুমদার। পঞ্চম ময়মনসিংহ বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের রায়ানা রিসাত এবং রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের সায়মা লতিফ প্রসুন ৬ষ্ঠ হয়েছে।
ফাহমিদা চিকিৎসক ও সাদমান প্রকৌশলী হতে চায়। সাংবাদিকদের দেয়া প্রতিক্রিয়ায় ফাহমিদা জানায়, “সর্বোচ্চ নম্বর পাবো তা কল্পনাও করিনি। তবে, বাবা-মা ও শিক্ষকদের নির্দেশ মতো পড়াশোনা করেছি।”
ফল প্রকাশে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হওয়ায় পর প্রাপ্ত নম্বর না জানানোর প্রচলন হলেও ঢাকা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে এ তথ্য জানিয়েছে।
২০০১ খ্রিস্টাব্দে এসএসসি ও ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে এইচএসসির ফল পজিপিএ পদ্ধতিতে প্রকাশ শুরু হয়। একইসঙ্গে পুরনো পদ্ধতিতে বোর্ডের সেরা ২০ পরীক্ষার্থীর তালিকা প্রকাশও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শুরু হয় শতভাগ পাসের তালিকা ও বেশি জিপিএ-৫ এর ভিত্তিতে শীর্ষ ২০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ। কিন্তু এখানেও দুই নম্বরি শুরু করে শিক্ষা মাফিয়া কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত স্কুল কলেজগুলো। তারা শতভাগ পাসের তালিকা নিয়ে টেলিভিশন ও পত্র-পত্রিকায় ঢোল পেটানো শুরু করে।
জানা যায়, শতভাগ পাশের প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকায় ধান্দায় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে টেস্ট পরীক্ষায় পাসের নম্বর ধার্য করে ৫০ এমনকি ৬০। এভাবে বাদ দেয়া হয় সম্ভাব্য ফেল অথবা কম জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীদের। এমনকি শত শত শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলক টিসিও দেয়া হয়। পাবলিক পরীক্ষার মাত্র তিন/চার মাস আগে টিসি পাওয়া শিক্ষার্থীরা দিশেহারা হয়ে যেতো। তাদের জীবন থেকে ঝরে যায় একটি বছর। কেউ কেউ প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করে। মাফিয়াদের হাত থেকে রক্ষা পেতে শত ভাগ পাসের তালিকা তৈরি বন্ধ করে দেয় বোর্ড কর্তৃপক্ষ।