এসএসসির পদার্থ রসায়ন পরীক্ষার প্রশ্নেও ভুল, কর্তৃপক্ষ নির্বিকার
নিজস্ব প্রতিবেদক |
এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুলের ধারা অব্যাহত রয়েছে। বছরের পর বছর ভুল ও বাজারি নোট-গাইড গাইড থেকে হুবহু তুলে দেয়ার দায়ে কাউকে শাস্তি না দেয়ায় এমন অবস্থা চলছে। আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত রসায়ন বিষয়ের একটি প্রশ্নের কোনও সঠিক উত্তর নেই। বিষয়টি পরীক্ষার্থীরা পরিদর্শকদের নজরে আনলেও কোনো প্রতিকার পায়নি। কেউ ভুল থেকেই একটা উত্তর দিয়েছে আবার কেউ কোনটিই উত্তর দেয়নি। রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রের একাধিক পরীক্ষার্থী ও শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ পরীক্ষা শেষ হওয়ার কয়েকঘন্টা পরও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে কিছু জানানো হয়নি।
রাত আটটার দিকে দৈনিক শিক্ষার পক্ষ থেকে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের দুইজন বড় কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।
জানা যায়, উদ্দীপকের ১ নং প্রশ্ন হলো বিকারে মিশ্রিত দ্রবণটির ঘনমাত্রা কত? এই প্রশ্নের জন্য দেয়া চারটি উত্তরের সবকটিই ভুল। সঠিক হবে ১.৩১।
এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পদার্থ পরীক্ষায় ইংরেজি ভার্সন পরীক্ষার্থীদের দেয়া প্রশ্নপত্রে দেখা যায় ভুল অনুবাদ করা হয়েছে।
ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা জানান, জনশীল প্রশ্নপত্র পদ্ধতির প্রশিক্ষণ ও পাবলিক পরীক্ষা সংস্কার পদ্ধতি বিফলে যাচ্ছে। পাঁচ বছরে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতির বিষয়ে ৯ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষক ও কর্মকর্তা দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ পেলেও এর সুফল মিলছে না। [একজন শিক্ষক একাধিকবার প্রশিক্ষণ পেয়েছেন সেই হিসেবে সোয়া নয় লাখ।] এ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে পাঁচ বছরে প্রায় দুই হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নে এখনও নিষিদ্ধ নোট-গাইড বইয়েরর ওপর নির্ভরশীল থাকছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। আবার পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার ও উন্নয়নে ১৬৪ জন কর্মী নিয়োজিত থাকলেও পরীক্ষায় অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা আরও বেড়েছে।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, যেসব শিক্ষক-কর্মকর্তা নিষিদ্ধ নোট-গাইড বই প্রণয়ন এবং কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত তাদের অনেকেই আবার পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নের দায়িত্ব পাচ্ছেন। এতে বারবার পাবলিক পরীক্ষায় বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। নোট-গাইড বই থেকে হুবহু প্রশ্ন পাবলিক পরীক্ষাও দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া পুরো সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতিকে বিতর্কিত করতে নিষিদ্ধ নোট-গাইড বই ও কোচিং ব্যবসায়ীরা নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
চলমান এসএসসি ও সমপর্যায়ের পরীক্ষায় এমসিকিউ প্রশ্নপত্র ফাঁস, ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ ও পুরোনো প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া, যথাসময়ে প্রশ্নপত্র বিতরণ করতে না পারা, পরীক্ষার সময় বাড়ানো ও কমানো এবং খোলাবাজারে বিক্রি হওয়া নিষিদ্ধ নোট-গাইড বইয়ের সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়াসহ নানা রকম বিশৃঙ্খলা ঘটছে। এতে বেকায়দায় পড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর তাসলিমা বেগম বলেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেন্দ্র সচিবদের গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতার কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে পুরোনো প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও ২০/২৫ মিনিট পরীক্ষা নিয়ে নতুন করে প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হচ্ছে।